পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ কলিকাতার শিল্প-প্রদর্শনী 仓位位 বিষয়বস্তুর নির্বাচনে যথেষ্ট ঔদার্ঘ্য দেখাইয়াছেন, এবং সময়-সময় যথেষ্ট সাহসের পরিচয়ও দিয়াছেন । ( অবশ্য এই বৈচিত্র্য ও সাহস র্তাহাদের বা তাহদের শিক্ষকদেরই মাত্র আছে এমন নয়—শান্তিনিকেতন কলাভবনের অধ্যক্ষ ও তাহার অনেক ছাত্রের নাম অগ্রে করিতে হয় । ) আর্টস্কুলের ছাত্রের প্রথাগতভাবে দেবদেবীর ছবিও আঁকিয়াছেন–কিন্তু বাংলার শহর-পল্লী, হাট-বাট, ঘরকন্নার খুটিনাটির প্রতি র্তাহাদের দরদ বেশী। শ্ৰীসত্যরঞ্জন মজুমদারের ‘থার্ড ক্লাসের ধাত্ৰী” ছবিতে তৃতীয়-শ্রেণীর টিকেটঘরের দৃশ্ব ও বিভিন্ন ভঙ্গীতে ধাত্রীদের গাড়ীর অপেক্ষ করিবার বাস্তব দৃশ্য চিত্তাকর্ষক হইয়াছে। শ্রমাণিকলল বন্দ্যোপাধ্যায়ের “ঘাট” চিত্রে পল্লীর একটি দৃশু মনোরম হষ্টয়া ফুটিয়াছে। ইঙ্গর "চায়ের দোকান” ছবিটির বিষয়বস্তু যে শিল্পের অন্তর্গত হইতে পারে তাঁহাই এক সময় সম্ভবতঃ আমরা মনে করিতে পরিতাম ন—তবু এ ছবিখনি স্বাভাবিকভাবেই আঁকা হইয়াছে, নূতনত্বে দৃষ্টিকে পীড়া দেয় না। এই বিভাগে শ্ৰীভূপতিনাথ চক্ৰবৰ্ত্তীর “শীতে’ আগুন পোহাইবার ছবি, শ্রীঅরুণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের “দিনাস্তে” সখিসংলাপের চিত্র, ও শ্রহেরম্ব গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘গে-দোহন" ছাত্রদের ছবি হিসাবে উল্লেখযোগ্য । ছবিগুলিতে অবশ্য অনেক ক্রটি আছে, তবে ছাত্রদের কাজ বলিয়৷ সে-কথা আর বিশেষভাবে উল্লেখ করি নাই । বিষয়বস্তুর পরিধি যেমন বাড়িয়ছে তেমনই আটস্কুলে অঙ্কনরীতির বৈচিত্র্যও উৎসাহ পাইলে তানন্দের বিষয় হইবে। " বিজ্ঞাপনের চিত্র যে কিরূপ মনোহর হইতে পারে তাহা কমাসিয়াল-বিভাগের কাজ দেখিলে বোঝা যায়। বিজ্ঞাপনচিত্র বিদেশে প্রায় শিল্পের পয্যায়ে উন্নীত হইয়াছে, আমাদের দেশেও এখন তাহা ক্রমশঃ উন্নত হইয় উঠতেছে। পোষ্টার, দুইয়ের জ্যাকেট প্রভৃতির অনেকগুলি স্বন্দর নিদর্শন এই fভাগে ছিল । শ্ৰীমাখনলাল দত্ত গুপ্ত, সিতাংশু, কালী কর ভূতির নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। মডেলিং, ফাইন টস্ ও প্রাথমিক বিভাগেও অনেকগুলি সুন্দর শিল্পনিদর্শন ছে | অধ্যাপক শ্ৰীসতীশচন্দ্র সিংহের তেলরঙের ছবিতে নানা*ম কম্পোজিশনে নূতনত্ব উল্লেখযোগ্য । মিউজিয়ম-গ্যালারিতে ইণ্ডিয়ান ফাইন আর্টস অ্যাকাডেমির প্রদর্শনী ( ২১ ডিসেম্বর—৫ জানুয়ারি ) এইবার তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করিল ইহার উদ্যোক্ত শিল্পী শ্ৰীঅতুল বস্ব মহাশয়ের ইচ্ছ, সকল পদ্ধতির ও ‘স্কুলে’র শিল্পীদের শিল্পকৰ্ম্ম যাহাতে একই প্রদর্শনীতে দেখিবার সুযোগ সৰ্ব্বসাধারণের ঘটে—এই উদ্দেশু লইয়াই তিনি এই অনুষ্ঠানে ব্ৰতী হইয়ছেন। প্রদর্শনীটি স্বপরিসর ও বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত । “ভারতীয় পদ্ধতিতে” অঙ্কিত চিত্র-বিভাগে প্রদশিত শ্ৰদ্ধামিনী রায়ের “ম ও শিশু” ছবিখানি প্রদর্শনীর শ্ৰেষ্ঠ ছবি বলিয়। পুরস্কৃত হইয়াছে। ছবিখানিকে অবহু সম্পূর্ণ নূতন বলা যায় না - ইহা শিল্পীর স্বপরিচিত, মা ও শিশুর প্রণতির অভিরাম চিত্রের পুনরাবৃত্তি— নুতন করিয়া অণকিতে, তিনি এখন যে পদ্ধতির অনুসরণ করিতেছেন, তাহার আভাসও লাগিয়াছে পটের চিত্রণপদ্ধতির সীমা, ও বৰ্ত্তমানে তাহার গ্রহণযোগ্যতা কতখানি, শিল্পী-মনের সকল বিচিত্ৰ ভাব ব্যক্ত করিবার পক্ষে তাহা যথেষ্ট কিনা, এ আলোচনায় . প্রবেশ না করিয়াং, মায় ক'টি সবল রেখায় অণক শ্রীধামিনী রায়ের ‘জননী,” “চিন্তাকুলা” ছবি দুখানি ভাল বলিয়া মানিতে দ্বিধা হয় না । সাধারণত চোখের বিভিন্ন ভঙ্গীতে শিল্পী নরনারীর মনের ভাব ফুটাইয় তোলেন-- এই ছবিগুলিতে তাহার সুযোগ নাই, তবুও জননীর স্নেহস্থকরুণত ও রমণীর চিন্তামগ্নতা প্রকাশ পাইতে একটুও বাধা পায় নাই, সহজেই দর্শকের মনে তাঙ্গ স্পষ্ট হইয় ওঠে। এই দুইটি ছবিতে অধরোষ্ঠের ভঙ্গীকে যেভাবে শিল্পী কথা বলাইয়াছেন তাহ। লক্ষ্য করিবার বিষয়— সাধারণত পট বলিতে যাহা বুঝায় তাহাতে এই কৃতিত্ব সৰ্ব্বদ খুজিয়া পাওয়া যাইবে বলিয়ু মনে হয় না। “যশোদা” ছবিখানি দেখিলেই স্বভাবতই শ্রীনন্দলাল বস্থর “চৈতন্তের জন্ম” ছবিখানির কথা মনে পড়ে, এবং বক্ষ-মহাশয়ের ছবিখনীর তুলনায় এখানিকে অনেকটা নিম্প্রভ বলিয়া মনে হইতে থাকে। যামিনীবাবুর “রাসলীলা' ছবিখানিও মনোহর ; অন্য কতকগুলি ছবি পটের পুনরাবৃত্তি বলিয়া মনে হয় । শ্রীরামগোপাল বিজয়বর্গীয় প্রচুর ছবি অণকেন, যত্ন করিয়া অাকেন—ভাল ছবিও অাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ, তাহার