পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હ૭૨ প্ৰৱাসী S\తిas স্বাধীনতা ও ডোমীনিয়নত্ব ঢাকার নবাব সাহেব বলেন, স্বাধীনতা কেজো রাজনীতির «ion (“outside the pale of practical politics”) তিনি ডোমীনিয়নত্বের পক্ষপাতী। এই ছুটির পরম্পর সম্পর্ক ও আপেক্ষিক মূল্য সম্বন্ধে অক্ষত্র আলোচনা করিয়াছি। মুসলমানেরা যদি ডোনীনিয়ন ষ্টেটাসই চান, তাহাও ত ভারতশাসন আইন দেওয়া দূরে থাক, তাহার নামও করে নাই। তাহ পাইবার জন্ত মুসলমান সম্প্রদায় কি করিয়াছেন ? কি করিতেছেন ? - স্বরাজ ও সাম্প্রদায়িক স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নবাব সাহেব বলেন, “The political individuality of Indian Muslims must lie recognized in any scheme of national self-government or swaraj.” "জাতীয় স্বায়ত্তশাসন বা স্বরাজের কোন পরিকল্পনার ভারতীয় মুসলমানদের সমষ্টিগত রাজনৈতিক স্বতন্ত্র অস্তিত্ব স্বীকার করিয়া হইতে হইবে।” পৃথিবীতে যত বৃহৎ ও উন্নত স্বশাসক দেশে স্বরাজ আছে, তাহার কোথাও এক-একটা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়কে এক-একটা রাষ্ট্রীয় দল মনে করা হয় না। রাজনৈতিক মত অনুসারে সেই সব দেশে রক্ষণশীল, উদারনৈতিক, প্রাগতিক, গণতান্ত্রিক ইত্যাদি দল হয়। আবার অর্থনৈতিক স্বার্থ অনুসারে ধনিক, শ্রমিক, চাষী প্রভৃতি দল হয়। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উভয়বিধ নানা দলেই ভিন্ন ভিন্ন ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের লোক থাকে। কয়েক বৎসর অন্তর অন্তর যে প্রতিনিধিনিৰ্ব্বাচন হয়, তাহাতে দেখা যায়, ষে, দলগুলির সভ্যসংখ্যার হ্রাসবৃদ্ধি হইয়াছে। যে আগে রক্ষণশীল ছিল, সে হয়ত উদারনৈতিক হইয়াছে, এবং পরে আবার হয়ত গণতান্ত্ৰিক হইতে পারে ; ষে শ্রমিক ছিল, সে চাষীর দলে যাইতে পারে, পরে আবার ধনিকের দলেও যাইতে পারে। কিন্তু কেবল ধৰ্ম্মমত অনুসারে দল গঠিত হইলে এরূপ আবশ্বক ও কল্যাণকর হ্রাসবৃদ্ধি হইতে পারে না। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও মুসলমানগণ নবাব সাহেবের মতে উচ্চবর্ণের হিন্দুরা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করিয়াছে এবং তাঁহাতে নিজেদের একচেটিয়া প্রভুত্ব স্থাপন করিয়াছে। কথাগুলা সত্য নয়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গবন্ধেটের প্রতিষ্ঠিত, ইহার আইনকাছন সরকারের আহ্বমোদিত, অধ্যাপক ও বড় কর্মচারীদের নিয়োগ সরকারী অমুমোদসাপেক্ষ। ইহা নির্দোষ ও নিখুৎ প্রতিষ্ঠান নহে।. কিন্তু ইহা সাক্ষাৎ বা পরোক্ষ ভাবে হিন্দুধৰ্ম্ম শিক্ষা দেয় না। বরং ইহ খ্ৰীষ্টীয়ানদের বাইবেল পড়ায়। সে-বিষয়েত মুসলমানেরা কোন উচ্চবাচ্য করেন না । - গবন্মেণ্ট মুসলমান, ফিরিঙ্গী ও ভারতবর্ষের বাসিন্দা ইংরেজদিগকে চাকরীর নির্দিষ্ট ভাগ দিয়া তাহাদিগকে বিপথচালিত করিয়াছেন । ধৰ্ম্মমতনির্বিশেষে কেবল যোগ্যতা অমুসারেই চাকরী দেওয়া উচিত। সেনেটের অধিকাংশ সভ্য গবন্মেষ্ট মনোনীত করেন। স্বতরাং তাহার জন্য হিন্দুদিগকে আক্রমণ করা অন্যায়। সৗণ্ডিকেটের সভ্য নির্বাচন করেন সেনেট। সেনেট ও সীণ্ডিকেটের সদস্তের আসন ধৰ্ম্মসম্প্রদায় অনুসারে ভাগ করিয়া দিবার প্রস্তাব ভারতবর্ষের বাহিরে— ইউরোপ আমেরিকায়-কেহ কখনও করে নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যাই বিবেচিত হইবে, ধৰ্ম্মমত নহে। আর যদি প্রত্যেক ধৰ্ম্মসম্প্রদায়কে কতকগুলি করিয়া সদস্যের আসন দিতেই হয়, তাহা হইলে ভাগ করিবার সময় কোন সম্প্রদায়ে পুরুষ নারী শিশু যুবা বৃদ্ধ লিখন-পঠনক্ষম নিরক্ষর যত লোৰুে আছে, সকলের সংখ্যা বিবেচনা না করিয়া কোন সম্প্রদায়ে উচ্চশিক্ষাপ্রাপ্ত (যেমন গ্ৰাডুয়েট ) কত অাছে, তাছাই বিবেচনা করিতে হইবে, এবং তদনুসারেই ভাগবাটোয়ারা করিতে হইবে। মুসলমান সম্প্রদায় কেবল এইটাই ভাবেন, য়ে, হিন্দুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কতগুলা অধ্যাপকতা ইত্যাদি পাইল ; এটা ভাবেন না, যে, তাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ত কত পরিশ্রম করিয়াছে, তাহাঁদেরই বিদ্যাবত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাব ও প্রতিপত্তি কত বাড়িয়াছে, তাহারা বহু লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিয়াছে। মুসলমানেরা লইবার পাইবার প্রতিযোগিতায় অগ্রসর, কিন্তু খাটিবার দিবার প্রতিযোগিতায় পশ্চাৎপদ । কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোষ আছে, কিন্তু হিন্দুসমাজ তাহার জন্ত দায়ী নহে। দোষের কারণ অল্প। তাহধি জালোচনা আমরা বিস্তর করিয়াছি।