পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

国持 নৰাব সাহেব বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা পাঠ্যপুস্তক ও চমনিকাগুলির ("selections") ইসলাম-বিরোধী পলিসির কথা বলিয়াছেন । এরূপ কোন পলিপি নাই। চানিকাগুলিতে মুসলমান লেখকদের লেখাও আছে। হিন্দু লেখকদের লেখায় হিন্দুভাব ও দেবদেবীর উল্লেখ থাকা স্বাভাবিক। সে সব যে আছে, তাহ হিন্দুত্ব প্রচারের জন্ত নহে । যেসাহিত্যের অধিকাংশ লেখক যে-সম্প্রদায়ের তাঁহাদের মতের ছাপ তাহাতে থাকিবেই। ইংরেজী সাহিত্যের অধিকাংশ লেখক খ্ৰীষ্টিয়ান। সুতরাং তাহার সাক্ষাৎভাবে খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্ম প্রচার না করিলেও খ্ৰীষ্টীয় ধর্মের ছাপ অনেকের লেখাতে পাওয়া যায়। মিন্টনের প্যারাডাইজ লস্ট্র ত খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মমতে পূর্ণ। অথচ তাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট পাঠ্যতালিকার মধ্যে থাকে। তাঁহাতে মুসলমানরা আপত্তি করেন না। বাইবেল পড়ান হয়, তাহাতেও আপত্তি হয় না। গ্রীক ও রোমান দেবদেবী জুপিটার, এপলে, মাস, ভৗনস, মিনার্তা, জুনে প্রভৃতির উল্লেখ ও বৃত্তাস্ত বিস্তর ইংরেজী বহিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট কোন কোন পাঠ্যপুস্তকে আছে । সেগুলি সাহিতা হিসাবেই অধীত হয়। কেহ মনে করে না, যে, তস্থার গ্রীক ও রোমানদের ধৰ্ম্ম শিক্ষা দেওয়া হইতেছে। “বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জয়” অতঃপর নবাব সাহেব বলেন— “The remedy lay firstly in the conquest of the Bengali language and literature by Muslim men of letters; and secondly in the cultivation and promotion of Urdu in Bengal.” - “প্রতিকারের উপায় ছুটি। প্রথমতঃ, মুসলমান সাহিত্যিকদিগের बांब्री बारण छांब ७ गांश्ठिा बरब्र । अषः विठौब्रठ, दात्र छश्ब्र অঙ্কুশীলনে ও প্রচারে।” বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জয় ৰুৱা পদার্থটি কি, বক্তা তাহা খুলিয়া বলিলে ভাল হইত। দেশজয়ের মানে সহজে বুঝা যায়। দেশটা, তাহার জমী জায়গা ধনদৌলত, অন্ত লোকের ছিল, হইয়া গেল বিজেতার। বিজেতা জিনিয়া লুটিয়া লইল । ভাষা ও সাহিত্য জয় ত তেমন কিছু নয়। চণ্ডীদাস, কবিকঙ্কণ, কৃত্তিবাস, কাশীরামদাস, রামপ্রসাদ, ভারতচন্দ্র প্রভৃতির কাব্যগুলি কোন মুসলমান দখল করিতে পারিবেন না। করিলেও ৰিবিধ প্রসঙ্গ-বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জয় তাহার বড় বিপদ। কারণ, লোকে বলিবে তিনি ঐ সকল G:\9 কাব্যের হিন্দুড়াব ও হিন্দু দেবদেবীর আরাধনা প্রভৃতি প্রচার করিতেছেন । মুসলমানের এরূপ অপবাদ হওয়া উচিত হইবে কি –যদিও অতীত কালে কোন কোন মুসলমান কবি এই রকম কাজ করিয়াছেন । অবগু, জীবিত মহাকবি রবীন্দ্রনাথের গ্রন্থাবলীর আলমারীগুলি দখল করা চলিতে পারে। কিন্তু সেগুলিতেও হিন্দু ও বৌদ্ধ পৌরাণিক উপাখ্যান, হিন্দু দেবদেবীর উল্লেখ এবং হিন্দুভাব আছে। হয়ত নবাব সাহেব ইহাই বলিতে চাহিয়াছেন, যে, মুসলমান সাহিত্যিকদের এত বেশী করিয়া বাংলা বহি লেখা উচিত, যে, বাংলা সাহিত্য প্রধানতঃ মুসলমান লেখকদেরই সাহিত্য হইয়া উঠিবে। ইহা খুব ভাল পরামর্শ। কিন্তু মনে রাখিতে হইবে, যে, তাহারা যাহা লিখিবেন, তাহা সাহিত্য নামের যোগ্য হওয়া উচিত। অমুসলমান বাঙালীরাও যাহা কিছু লেখেন ও ছাপেন তাহ সাহিত্য হয় না এবং বাংলা সাহিত্যে স্থান পায় না। অন্তদের কথা বলা উচিত নয়। আমার নিজের কথাই বলি। প্রায় ৩৫ বৎসর ধরিয়া আমি "প্রবাসীতে প্রতি মাসে অনেক পৃষ্ঠা লিখিতেছি। তাঁহার আগে আমার সম্পাদিত ‘প্রদীপে এইরূপ লিখিতাম। তাহার পূৰ্ব্বে আমার সম্পাদিত 'দালীতে ও আমার সম্পাদিত ধৰ্ম্মবন্ধু'তে লিখিতাম । সৰ্ব্বসমেত পাঁচ ছয় হাজার পৃষ্ঠা লিথিয় থাকিব। কিন্তু ইহার একটি পৃষ্ঠাও বাংলা সাহিত্যে স্থান পাইবে কি না সন্দেহ। অতএব, শুধু লিখিলেই হইবে না; যাহা লিখিত হইবে, তাহ সাহিত্য হওয়া চাই। বাংলা ভাষা জয় করাও হয়ত নবাব সাহেব এই অর্থে ব্যবহার করিয়াছেন, যে, মুসলমান লেখকেরা এত লিখিবেন, ষে, তাহাদের ব্যবহৃত শব্দাবলীতেই বাংলা শব্দকোষ পূর্ণ হইয়৷ যাইবে। এখানেও বলি, তাহা হইবে যদি তাহারা বাংলা ভাষার মজাগত স্বভাবের দিকে দৃষ্টি রাথিয়া শব্দপ্রয়োগ করেন, জোর করিয়া কতকগুলি আরবী ফারসী শব্দ বাংলা ভাষায় ঢুকাইতে চেষ্টা না করেন। শিক্ষাপ্রাপ্ত মুসলমানেরা এই প্রকারে বাংলা পড়া ও লেখার সমধিক চর্চা করিলে ফল ভালই হইবে । কিন্তু র্তাহাদিগকে যদি নবাব সাহেবের পরামর্শের সমস্তটারই