পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कोर्छन्। নানা রকম জিনিষ তৈরির জন্য ফ্যাক্টরী আছে। এখানে অতি স্বন্দর স্বন্দর এমব্রয়ডারীর কাজ-করা স্প্যানিস শালপাওয়া যায় । দোকানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে এ-রকম শালের উপর এমব্রয়ডারী করতে দেখেছি। এ-সব কাজ মেয়েরাই করে। এদের হাত খুব ক্ষিপ্রগতিতে চলে। নানা রকম চামড়ার দ্রব্যাদির জন্যও ভেনিস প্রসিদ্ধ। ইটালীর মাৰ্ব্বেলপাথরের জিনিষও বিখ্যাত। আমরা ভেনিসে পৌছবার পর হোটেলেরই এক জন লোক আমাদের খবর দিলে যে কাছেই এক জায়গায় ভেনিসের কাচের জিনিষের একজিবিশন হচ্ছে। আমরা হেঁটেই দেখতে যেতে পারি। রাত্রে খাবার পর দেখতে গেলুম। দেখবার মত একজিবিশন। চারি দিকে রকমারি শ্বেতপাথর, এ্যালাবাষ্টার পাথর ও কাচের স্বন্দর স্বন্দর জিনিষ দিয়ে এমনভাবে সাজিয়েছিল, যে খানিক ক্ষণ দাড়িয়ে দেখতে ইচ্ছা করে । এখানেও হোটেল ইউনিভাসোয় রাত্রে মশার উৎপাতে মোটে ঘুমতে পারি নি। রাস্তার জলে যত মশার আডড আছে। সকালে উঠে পাচ গ্রেন করে কুইনাইন খেয়ে নিলুম। কি জানি যদি ম্যালেরিয়াই থাকে। আমাদের দেশে ফিরে যাবার জাহাজ ধরবার জন্ত এখানে আবার আসতে হবে, সেজন্ত এবার এসে যাতে রাত্রে মশার কামড়ে কষ্ট পেতে না হয় তার জন্য এর চাইতে ভাল হোটেল খোজ করে এলুম। এর নাম হোটেল ম্যানিলও পিলসেন। একদিন গ্র্যাও ক্যানালের উপর একটি দোকানে গণ্ডোল ক'রে গিয়েছিলুম। এর নাম স্যালডিয়াটি, এখানে কাচের জিনিষ তৈরি হয়। এটি দেখবার জিনিষ। একটি বড় উনানের মধ্যে গলিত কাচের পাত্র বসানো আছে । কারিগররা বড় বড় লোহার নলের আগায় এই তরল কাচ খানিকট তুলে নেয়, তার পর নলের অপর দিকের ফুটোতে ফু দিয়ে ইচ্ছামত ছোটবড় করে কাচকে ফোলায়, ভার পর একটি চিমটা ও একটি কাচির সাহায্যে এর থেকে নানা রকম লতাপাত, ফল, মানুষ ইত্যাদি সব রকমই তৈরি করে। এটিকে না দেখলে ঠিক বোঝান সম্ভব নয়। আমরা এই দোকানের তৈরি কাচের গ্রীক্ষাকুঞ্জ দেখলুম, অতি স্বন্দর। কাচের তৈরি আঙুর-লতা বড় বড় খামকে বেষ্টন করে উঠেছে। পাতাগুলি নানা রকম সবুজ রঙের কাচের তৈরি ও আঙুর পশ্চিমষপঞ্জিকী శ్రీNడి$ ফলের খোলোগুলিও ফিক সবুজ, লাল ও বেগুনে রঙের। এসব আঙুরের খোলোগুলির ভেতরে ইলেকটিক বলব छलझिल्न । ভেনিসে থাকতে একদিন আমরা সানমার্কে স্কোয়ারের ধারে অবস্থিত ডজের প্যালেস দেখতে গিয়েছিলুম। ইংলণ্ডের ডিউক বলতে যাদের বোঝায় ডজের তাই। প্যালেসের তলায় কারাগার। প্যালেস দেখলে মনে হয় অনেক দিনের পুরানো। দ্বারে দ্বারে প্রতিহারী দ্বাড়িয়ে থাকে। ডজের প্যালেসে নানান জাতীয় পায়রা বাসা করে আছে। এ-সব পায়রাকে প্রতিদিন বিকেলে সানমার্কোতে খাওয়ানো হয় । সে এক সমারোহ ব্যাপার । - ভেনিসের বিস্তর আলিগলি। এগুলির সঙ্গে কাশীর গলির তুলনা করা যেতে পারে। এক দিন ভেনিসে সানমার্কোর একটি চামড়ার দোকান থেকে বেরিয়ে আমরা এক জন শাড়ীপরা মহিলাকে দেখতে পাই । এর স্বামীও সঙ্গে ছিলেন। এরাও আমাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলেন । আমাদের সঙ্গে তাদের আলাপ হ’ল। এই ভদ্রলোকের নাম মিঃ লতিফ। এরা দু-জনে ইউরোপ বেড়িয়ে ফিরছিলেন। এরা হায়দ্রাবাদে থাকেন। বড় চমৎকার লোক । এদের দু-জনকে নিয়ে আমরা একটা দল করলুম ও এখান থেকে ফ্লোরেন্স ও রোম পৰ্য্যন্ত একসঙ্গে ভ্রমণ করেছিলুম। এখানকার গোটাকয়েক গীর্জা দেখেছি। গীর্জার ভেতর মাৰ্ব্বেল-পাথরের কাজ বড় মুন্দর। আমরা এখানে দু-রাত্রি ছিলুম। একদিন রাত্রে খেতে বসেছি, হঠাৎ নজরে পড়ল, একজন ইটালীয়ান মহিলা আমাকে ডাকছে। আমি প্রথমটা ভেবেছিলুম এ বোধ হয় আবার এক অসভোর পাল্লায় পড়ছি । এ রকম মনে করার কারণ ছিল । ইটালীর রাস্তাঘাটে বেরলে অনেক সময় এদেশের মেয়েগুলি ডেকে শেষে হাত উচু ক'রে বক দেখিয়ে দেয়। এ কিন্তু সে ধরণের লোক নয়। পরে আলাপ হ’লে জানলুম এর স্বামী-স্ত্রী দু-জনেই খুব ভাল বেহালা-বাদক। এক সময় এক দল ইটালীয়ান কনসার্ট-পার্ট কলকাতায় এসেছিল। এরা দু-জনেই সেই সঙ্গে আসে এবং ভারতবর্ষ বেড়িয়ে যায়। আমাকে শাড়ী-পরা দেখে ভারতবর্ষের মেয়ে বলে চিনতে পেরেছে। আমাকে জিজ্ঞাসা করলে, তুমি কপালে লাল