পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাস্তুন আজিবিকেহি কথার খানিকট কাটিয়া উড়াইয়া দেওয়া ইঠয়াছে। ইহা পরবর্তী অন্য কোন সম্প্রদায়ের লোকের দ্বারা ঈর্ষ্যাবশে কৃত হইয়াছিল বলিয়া অনুমিত হয়। মহারাজা অশোক নিজে বৌদ্ধধৰ্ম্ম গ্রহণ করিলেওযে অন্য ধৰ্ম্মাবলম্বিগণের প্রতি সমান শ্রদ্ধাসম্পন্ন ছিলেন আজীবকগণকে এই গুহাসকল দান তাহার অন্যতম প্রমাণ। এই গুহাগুলিতে পরে অন্য নানাধৰ্ম্মাবলম্বী সাধু বাস করিয়া গিয়াছেন এবং ইহাদের নূতন নূতন নামও দিয়া গিয়াছেন। সাতঘরোয় গুহার অশোক-প্রদত্ত নিগোহ কুভ নাম ছাড়া পশ্চিমেরটিতে ক্লেশকাস্তার’ এবং পূৰ্ব্বের অসম্পূর্ণ গুহাটিতে ‘বোধিমূল এই নাম দুইটি উৎকীর্ণ আছে । পাশের অসম্পূর্ণ গুহাটির দেওয়ালগুলি অন্য গুহার ন্যায় চিকুণ, কিন্তু ছাদটি এবড়ো-খেবড়ো অবস্থায় অসম্পূর্ণ রহিয়৷ গিয়াছে। বোধ হয় তৈয়ারী করিবার সময় ফাটিয়া যাওয়ায় এরূপ অবস্থায় ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে। তবে এই গুহাটির প্রবেশদ্বারটি নানা কারুকার্য্যমণ্ডিত। এরূপ আর অন্য কোন গুহায় নাই। প্রবেশদ্বারের কিছু উপরে গোলভাবে একটি চওড়া কাণিশ করা হইয়াছে এবং তাহার তলে কতগুলি হস্তী খোদিত আছে। উহা প্রাচীন ভারতীয় শিল্পের অত্যুৎকৃষ্ট নিদর্শন। দুয়ারের উপরে সংস্কৃত ভাষায় খ্ৰীষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর মৌখরি-বংশীয় ক্ষত্রিয় রাজা যজ্ঞবৰ্ম্মার পৌত্র এবং শাদ লবর্ষার পুত্র রাজা অনন্তবৰ্ম্মার এক লিপি শছে। অনন্তবৰ্ম্ম এই গুহাতে কৃষ্ণমূৰ্ত্তি (“কৃষ্ণস্যাকৃষ্ণকীৰ্ত্তে" ) স্থাপন করিয়াছিলেন। কৃষ্ণপূজার ইহাই বোপ হয় প্রাচীনতম নিদর্শন। লিপির মধ্যে গুগগুলি “বিন্ধ্যস্তাপূৰ্ব্বগুহায়াং" থাৎ বিন্ধ্যপৰ্ব্বতের অপূৰ্ব্ব গুহাতেৰলিয়া বর্ণিত হইয়াছে। এই গুহা কয়টি দেখিয়া আমরা আবার নামিতে আরম্ভ পরিলাম। কিছুদূর আসিয়া ডান দিকে এক রাস্ত পাওয়া ...ল। সেই রাস্ত ধরিয়া খানিক নামিয়া গিয়া বিসমোরিয়া বা শ্বঝোগ্রী গুহার সম্মুখে উপস্থিত হইলাম। গুহার সম্মুখে বশদ্বারটি প্রায় আট ফুট চওড়া এবং দশ ফুট আন্দাজ থা। উচ্চতায় ছয় ফুট। ঢুকিতে ডান দিকে প্রাচীন বরাবর পাহাড়ের প্রাচীন গুহ। বাপিয়া কুঙা மூ8ல் ব্রাহ্মী অক্ষরে অশে কের লিপি আছে। তাহা হইতে জানা যায় যে অশোকের অভিষেকের দ্বাদশ বৎসরে আজীবকগণের জন্য অশোক ইহা নিৰ্ম্মাণ করেন (লাজিন পিয়দসিন দুবাডসবগভিসিতেন৷ ইয়ং কুভ খলতিকপবতসি দিন নাগাজুলী গুহ । গুহ (স্বরের উপরে দশরথের লিপি আজিবিকেহি )। পূৰ্ব্ববর্ণিত লিপির ন্যায় এই লিপিরও “আজিবিকেহি’ শব্দটি কে উঠাইয়া দিয়াছে। প্রবেশপথটি বড় হইলেও মূল গুস্তাটি নিতান্ত ছোট এবং অসম্পূর্ণ । বিসমোরিয়৷ গুহ দেখিয়া আমরা পাহাড় হইতে পাতালগঙ্গার পারে আসিয়া নামিলাম। সেখানে থানিক ক্ষণ বিশ্রাম লইয়া পূৰ্ব্বদিকে নাগাৰ্জুনী গুহা দেখিতে চলিলাম। এই গুহাগুলি পাতালগঙ্গা হইতে প্রায় এক মাইল । পাহাড়ের পর দিয়া, ধানক্ষেতের উপর দিয়া হঁটি রাস্তা । মাঝে মাঝে তালবন । সমতলভূমি হইতে প্রায় পঞ্চাশ ফুট উপরে নাগাৰ্জুনী গুহা। উঠবার সিড়ি আছে। গুঙ্গটি পূর্ববর্ণিত গুহা গুলির ন্যায়, তবে মাপে সৰ্ব্বাপেক্ষা বৃহৎ । প্রায় ছেচল্লিশ ফুট লম্ব এবং কুড়ি ফুট চওড়া। গুহার দুষ্ট দিক অৰ্দ্ধবৰ্ত্তলাকার। গুহার দ্বারের উপরে লিপি হইতে জানা যায় যে ইহা অশোকের পৌত্র দশরথ ( প্রায় খ্ৰীষ্ট-পূৰ্ব্ব ২১৪ অব্দে ) আজীবক ভিক্ষুগণকে, যত দিন চন্দ্র স্বৰ্য্য থাকিবে ( “আচন্দিমন্বলিয়ে” ) তত দিনের জন্য, দান করিয়াছেন । এই লিপি ছাড়া গুহার প্রবেশদ্বারের বামদিকে অনন্তবৰ্ম্মার এক লিপি আছে । তাহা হইতে জানা যায় যে তিনি এই গুহাতে কাত্যায়নী দেবীর প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। “উক্লিপ্রস্ত সরোরুহস্ত সকলমাক্ষিপ্য শোভাং রুচা: দেব্য;- মহিষাসুরস্ত শিরসি ন্যস্ত কণনৃপুরুপদম্। গুহামশ্রিত কাত্যায়নী” ইত্যাদি।