পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कांस्छब्र cन्कञां छांमtई هيلاقا কৃষ্ণ চাহিতে বেশী না পারিলেও পাইলে খুনী হইত। ভবিষ্যতের গৃহরচনার কোনও এক পর্বে সে তাহার প্রত্যেকটি সম্পদ ও বিদ্যার নির্দিষ্ট স্থান মানসনেত্ৰে দেখিয়া রাখিয়াছিল ; বর্তমানে তাহদের অপব্যয় কি অপচয় করিবার ইচ্ছা তাহার বিন্দুমাত্রও ছিল না । কৃষ্ণার নিজের মতন তাহার প্রাণহীন সমস্ত গৃহসজ্জাও যেন শুধু মিহিরের পথ চাহিয়া ছিল । তাহাদের বর্তমান প্রয়োজন বলিয়া কোনও বালাই ছিল না। আলমারী খুলিয়া কৃষ্ণ কাপড় সাজাইতেছিল। মাঝে মাঝে গোছগাছ না করিলে যে পোকামাকড়ে সব নষ্ট করিয়া দিবে। এই তাহার গায়ে-হলুদের ময়ুরকষ্ঠ বেনারসী, মিহির নিজেই নাকি ইহা পছন্দ করিয়া কিনিয়াছিল। কৃষ্ণ বছরে দুই-তিন বার ইহা রোদে দিয়া তুলিয়া রাখে, একদিনও পরে নাই। বাবা বলিয়াছেন, মিহিরের বোম্বাই পৌছিবার দিন জানিতে পারিলে তিনি কৃষ্ণাকে সঙ্গে করিয়া জামাইকে আনিতে বোম্বাই যাইবেন, সেই দিন বোম্বাইয়ের জাহাজঘাটায় কৃষ্ণা এই শাড়ীখানা পরিবে ঠিক করিয়া রাখিয়াছে। ষ্ট আলতা-রাঙা স্বতা ও সোনালী জরিতে বোনা শাড়ী তাহার ফুলশয্যায় মা পাঠাইয়াছিলেন ; ট্রেন হইতে হাওড়া ষ্টেশনে নামিবার সময় এখানা পরিলে বেশ হয়। মিহিরকেও যদি সেই সঙ্গে সাহেবী পোষাক ছাড়াইয়া বিবাহের জোড়টা পুরানো চলিত তাহা হইলে কৃষ্ণা অনায়াসে তাহা সঙ্গে লইতে পারিত। কিন্তু কি জানি হয়ত লোকে এমন ব্যাপার দেখিলে হাসিবে । শ্বশুরবাড়ীতে মাত্র যে আটদিন কৃষ্ণ ছিল, তাহার প্রত্যেকদিনই নুতন নূতন ঢাকাই কি মান্দ্ৰাজী শাড়ী পরিয়াছিল। সেই স্মৃতিসম্পদে সমৃদ্ধ দিনগুলিকে যেন এই শাড়ীগুলি আপনাদের ভীজে ভাঁজে লুকাইয়া রাখিয়াছে। কৃষ্ণ তাহাদের জমা করিয়া রাখিয়াছে, মিহিরের নিকট এক এক দিন এক একটি বিগত দিনের ইতিহাস হৈার সৌরভে ও মধুর্ঘ্যে ভরিয়া আনিয়া দিবে বলিয়া। আজ তাহদের দিকে চাহিয়া কৃষ্ণা অতীত ও ভবিষ্যতের শেঠ আনন্দময় দিনগুলির কথাই ভাবিতেছিল। বাহির হইতে রমাপ্রসাদ ডাকিলেন, “মা লক্ষ্মী, কাল মিহিরের চিঠিতে কি খবর এল কিছু শুনলাম না ত? ওখানের সব খবর ভাল পরীক্ষার ফল বার হতে আর কত দেরী ?” কৃষ্ণা কাপড়ের বোঝা ফেলিয়া সলজ হান্তে অগ্রসর হইয়া আসিয়া বলিল, “পরীক্ষার ফল বার হতে আর দেরী নেই বাবা ; কিন্তু শুনছি ছ'মাস পরে আবার একটা কিসের পরীক্ষা আছে, সেটাও পাস করে আসা দরকার, তাই সেই সব পড়াশুনো নিয়ে ব্যস্ত আছেন।" রমাপ্রসাদ ক্ষুণ্ণ হইয়া বলিলেন, “পরীক্ষা দেওয়া খুবই ভাল, কিন্তু আমার বুড়ে হাড়ের দিকেও ত তাকানো দরকার। আমি আর ক'দিন আছি ? তোকে হাতে হাতে সাপে দিয়ে যেতে না পারলে পরলোকেও যে শাস্তি পাব না।” অভিমানে কৃষ্ণর ঠোঁট ফুলিয়া চোখে জল আসিল সে যেন হইয়াছে সকলের পথের কাটা । স্বামীর জন্য বাবার কাছে তাহাকে কথা শুনিতে হয়, আবার বাবার জন্তও প্রতি মেলেই স্বামীর খোটা সহিতে হয়। রমাপ্রসাদ মিহিরকে তাড়াতাড়ি ফিরিবার জন্ত তাগিদ দেওয়াতে সে যে লিখিয়াছে, “আর ছ'মাস যদি খরচ চালাতে না পারবেন তবে এত বড় একটা দায়িত্ব তিনি ঘাড়ে নিলেন কেন ? তার হড়োহুড়ির জন্ত আমি ত নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে পারি না ।” একথা কৃষ্ণ ত বাবাকে বলিতে যাইবে না ! কথাটা তাহাকেই হজম করিতে হইবে । চোখের জল চাপিয়া কৃষ্ণা বলিল, “এখন ত আমাকে ঘাড় থেকে ফেলবার জন্ত মহা ব্যস্ত হচ্ছ। টেনে যখন কেড়ে নিয়ে যাবে তখন দেখা যাবে কত খুলী হতে পার ।” রমাপ্রসাদ স্নান হাসিয়া বলিলেন, “তোর জন্যে শেষ বয়সে আমি সৰ্ব্বস্ব পণ করলাম, তুইও কি না আমাকে শেষে এই অপবাদ দিসূ! ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে যাদের চেষ্ট করেছিলাম, তারা আমার কাছে স্বদে আসলে দাম পুষিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তুই যেন রাজরাণী হয়ে নিজের সিংহাসন আলো করে চিরকাল থাকিস্, দেখে আমাদের চোখ জুড়োয়, মাথা উচু হয়, এই ইচ্ছাতেই না তোর মা ধনুকভাঙা পণ করেছিল। সে ত কিছুই দেখে গেল না, আমিও পাছে যাবার আগে তোদের পাশাপাশি না দেখতে পাই এই জন্যেই না এত কাকুতি-মিনতি ! তুইও এটুকু বুঝবি না।” কে যে বুঝে না তাহা কৃষ্ণাই জানে। কিন্তু বলিবার তাহার কোনও উপায় নাই। সে হাসিয়া বলিল, “বাবাঃ, তোমার সঙ্গে ঝগড়া করতে যাওয়াও বিপদ । শেয়ালের