পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

यकांस्छब्र _ কৃষ্ণ কঠিন হইয়া বলিল, “তোমার ছোট জামাই নেই বাবা ।” পিতাপুত্রীতে আর কোনও কথা হইল না। কন্যাকে প্রায় বুকে করিয়া পিতা ঘরে লইয়া গেলেন। সেই পুরাতন গৃহ ও পুরাতন আবেষ্টনের মধ্যে আবার সেই দুটি মাত্র সীহারা মানুষ পরস্পরের মুখ চাহিয়া বসিয়া। কিন্তু এ মুখ চাওয়ার ভিতর আর কোনও মৃদুরের আশার বাণী নাই, সকল আশা এই নীরবতার অন্তরালে চিরসমাধিলাভ করিয়াছে । রমাপ্রসাদ মনে করিয়াছিলেন শ্রাস্ত শোকাৰ্ত্ত কস্তাকে আজ আর কোনও প্রশ্ন করিবেন না । বাছা বহু দুঃখ পাইয়া আসিয়াছে, একটু চুপ করিয়া পড়িয়া কিছু ক্ষণের জন্যও অন্তত পিতৃগৃহের স্মৃতির ভিতর ও সকল দুঃখের কথা ভুলিয়া থাকৃ। কৃষ্ণাকে তাহার মা'র শয়নকক্ষে বিশ্রাম করিতে দিয়া রমাপ্রসাদ বাহিরেব ঘরে চলিয়া গেলেন । স্বামীর শত স্থতিজড়িত নিজ কক্ষে সে আজ থাকে এ ইচ্ছা রমাপ্রসাদের ছিল না । বাহিরে কাহার মোটরগাড়ী অসহিষ্ণু ভাবে ঘন ঘন হর্ণ বাজাইয়া আসিয়া দাড়াইল। বিন্মিত হইয়া রমাপ্রসাদ দেখিলেন মিহিরের পিতা । তিনি উন্মত্ত পবনের মত ঘরে ঢুকিয়াই বলিলেন, “মশায়, এই কি আপনাদের স্ত্রীশিক্ষা ! মেয়ে ত তুকী নাচন নেচে বিলেত চলে গেলেন, ছেলেকে একবার সেকথা লেখেনও নি পৰ্য্যন্ত । এখন আবার শুনছি দেশে ফিরে তার নামে যত কুৎসা রটাবার চেষ্টায় আছেন। স্বামীর সঙ্গে শত্রুত ৰূরে স্ত্রীলোকের জগতে কখনও উপকার হবে না, সেটা জেনে রাখবেন।” রমাপ্রসাদের মস্তিষ্কে ইহার কোনও অর্থ প্রবেশ করিল না। তিনি ভয়ে ভয়ে বলিলেন, “কারও কোন কুৎসা ত সে করেনি।” _. বেয়াই বলিলেন, “আলবৎ করেছে, এই দেখুন তার চিঠি —“আমার গোপন বিবাহ প্রভৃতি সম্বন্ধে আপনাদের বধুমাতা যে ফুৎসা রটনা করিতেছেন তাহ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলিয়া জানিবেন। প্রয়োজন হইলে প্রমাণ দিতে পারি। পড়াশুনো করতে ছেলে গিয়েছে তার নামে এই সব অপবাদ দেওয়া এই কি আপনাদের উপযুক্ত কাজ হচ্ছে ?” l»&-----> e কেনা জগমাই శ్రీశ్రీ) : a রমাপ্রসাদ বলিলেন, “আমি দেখুন কিছু জানি না, এ কথার ফুলকিনারা কিছু করতে পারছি না। কৃষ্ণ জামায় এ ধরণের কোন কথা বলে নি ।” বেয়াই গৰ্জিয়া উঠিয়া বলিলেন, “তবে কি বলেছে সে ? মুখ সেলাই করে বসে আছে ?” কৃষ্ণ যাহা বলিয়াছিল তাহার পিতা তাহ বলিতে পারিলেন না, ছুতা করিয়া ভিতরে উঠিয়া গেলেন, বলিলেন, “সে শ্রাস্ত হয়ে এসেছে, আমি তাকে কিছু প্রশ্ন করি নি, একবার জেনে আসি গিয়ে ।” মা’র খাটের উপর বসিয়া কুজ্ঞা কতকগুলা পুরাতন চিঠি ছিড়িয়া স্তুপ করিতেছিল, অকস্মাৎ পিতাকে ঘরের ভিতর দেখিয়া চমকিয়া তাহার উপর একটা বালিশ চাপ দিল । পিতা বলিলেন, “ম, তোমার শ্বশুর এসে তোমার নামে অনেক তদ্ধি করছেন । আমি তাকে কি যে জবাব দেব জানি না, তাই তোমার কাছে এলাম।” কৃষ্ণ শ্রাস্ত দৃষ্টি পিতার মুখের উপর তুলিয়া দেউলিয়া মহাজনের মত উদাস স্বরে বলিল, “কোন কথাটার জবাব চাও বল, আমি যা জানি বলছি।” তাহার কথার ভিতর কিছু মাত্র আটঘার্ট বাধিবার চেষ্টা নাই। রমাপ্রসাদ বলিলেন, “তুমি আপনা থেকেই সেখানে গিয়েছিলে একথা তিনি অনেক দিনই বলেছেন।” কৃষ্ণ বলিল, “হ্যা, আমি আপনা থেকেই যাওয়া দরকার ভেবে তাই গিয়েছিলাম।” রমাপ্রসাদ বলিলেন, “তবে তুমি যে আমাকে বলেছিলে—” কৃষ্ণ বলিল, “আমি ত তোমাকে বলি নি যে আমি কারুর ডাকে যাচ্ছি।” রমাপ্রসাদ বলিলেন, “জাহাজ থেকে নেমে তুমি যে বললে,—আর তিনি এদিকে আমাকে তার ছেলের চিঠি দেখাচ্ছেন।” কৃষ্ণ অধীর হইয়া বলিল, “তুমি বুঝতে পারছ না বাবা, র্তার ছেলে তষ্ঠারই আছে, তাই সে যা খুনী চিঠি লিখেছে। কিন্তু তোমার জামাই বলে সেখানে কেউ নেই। এবার বুঝেছ ?” রমাপ্রসাদ বিস্ফারিত দৃষ্টিতে কস্তার মুখের দিকে তাকাইয়া রছিলেন। খানিক ঢোক গিলিয়া বলিলেন, "তার ছেলের