পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శ్రీtూహ్చి প্রবাসী SN9●● —Last drive together I Who knows but the world may end to-night 7 —আচ্ছা, কবিতা আওড়াতে হবে না, পেট্রল আছে ত ? শরতের আলোভর অজানা পথ দিয়া বহুক্ষণ মোটর-গাড়ী চালাইয়া কয়েকটি গ্রাম পার হইয়া, তাহারা এই প্রাচীন ভগ্ন প্রাসাদ ও পুষ্করিণীর সম্মুখে আসিয়া থামিয়াছে। গান শেষ করিয়া উমা বলিল, কটা বাজল বল ত ? —সৌভাগ্যক্রমে সঙ্গে ঘড়ি নেই, আর গাড়ীর ঘড়িটাও বন্ধ। —বেশ দেরি যখন হয়েইছে, নিশ্চিন্ত হয়ে বসা ধাক । চারিদিক কি নিঝুম, মনে হয় যেন এখানে সময়ের চল থেমে গেছে। আচ্ছা, অরুণ তোমার কবিতা পড়ে শোনালে না ? —শোনাব ৷ —আর কবে শোনাবে, যদি আজ সঙ্গে আনতে বেশ হত। এমনি জায়গায় বসে কবিতা পড়তে হয়। —তোমরা কি এ মাসের শেষে সত্যিই দিল্পী যাচ্ছ ? —এখন পৰ্য্যস্ত ত তাই ঠিক। আমি মাকে বলছি, আমি বোর্ডিঙে থাকব, তা কিছুতেই রাজী নন। অরুণ চুপ করিয়া জলের ছায়াগুলির দিকে চাহিয়া রহিল। উমা হাসিয়া বলিল, একটা ঢ়িল দাও ত, আমি আর উঠতে পাচ্ছি না, বেশ আরামে বসেছি । —ঢ়িল কোথায়, দেখছি না, কি করবে ? —জলে ছুড়ব, আচ্ছা, একটা কেক্‌ দাও। উমা একটি কেক্‌ লইয়া পুষ্করিণীর স্তন্ধ জলের মধ্যভাগে ছুড়িল । স্থির জল কঁাপিয়া উঠিল, একটি ক্ষুদ্র জলতরঙ্গ বৃত্তাকারে বৃহৎ হইতে বৃহত্তর হইয়া তীরে আসিয়া আঘাত করিল, গাছের ছায়াগুলি কঁাপিতে লাগিল । —দেখ, অরুণ, কি স্বন্দর দেখায় ; ছোটবেলায় আমরা ভাঙা-কলসীর টুকরো নিয়ে খেলতুম, জলের ওপর ব্যাঙের মত লাফিয়ে লাফিয়ে যায়। —জলটি ছিল স্থির, আয়নার মত, শাস্ত, তুমি দিলে কাপিয়ে, গুলিয়ে, শাস্তি বুঝি তোমার সয় না। —ঠিকই ত, আমরা চাঞ্চল্য স্বটি করবার জন্তেই ত জন্মেছি। শাস্তি নয়, জীবন চাই । —শোন, তোমায় একটা কথা বলতে চাই— —দেখ, অরশ, এখানে আর বকৃত স্বরু ক'রো না, দিনটি বড় স্বন্দর, বড় ভাল লাগছে, বেশ আরামে বসেছি কিন্তু, কি বল— —না, কিছু না । —ওই ত তোমার দোষ, একটুতেই রেগে যাও, বলে । আমি এখন সব গুনতে রাজী আছি। এমন দিনে যত অসম্ভব কথা শুনতে ইচ্ছে করে, অদ্ভূত কল্পনা— উচ্ছসিত হইয়৷ উমা গাহিয়া উঠিল--"এমন দিনে তারে বলা যায়, এমন ঘন ঘোর বরিষায়—” এক লাইন গাহিয়া সে থামিয়া গেল,—ও, এটা ত বর্ষ। নয়, তবে বৃষ্টি আসতে পারে, ওদিকে সাদা মেঘগুলো কেমন কালো হয়ে যাচ্ছে দেখ । প্রাচীন অশ্বখ গাছে ঠেস দিয়া উমা অৰ্দ্ধশায়িত ভাবে পা ছড়াইয়া বসিয়া, ঘনকৃষ্ণ ঈষৎ কুঞ্চিত কেশগুচ্ছ কালো গুড়ির সঙ্গে জড়াইয়া গিয়াছে, রক্তকরবী-বর্ণের শাড়ীর জরির আঁচল গাঢ় সবুজ সিদ্ধের ব্লাউস হইতে খসিয়া তৃণভূমিতে লুটাইয়া পড়িয়াছে। দার্জিলিং হইতে ফিরিবার পর তাহার মুখে যে কাঞ্চনদীপ্তি ছিল তাহা মান হইয়া গিয়াছিল, আজ শরতের খামলত্রর মত পরিপূর্ণ স্নিগ্ধ মুখের গণ্ডে কপোলে রক্তিম লাবণ্যোচ্ছ্বাস নিপুণ শিল্পীর তুলির টানের মত । অপরূপ তাহার চোখের চাহনি। দীর্ঘ অক্ষিপক্ষ্মের নীচে চক্ষুতারকাদ্বয় হইতে স্বপ্নময় দীপ্তি মরকতমণির জ্যোতির মত। ওই চোখের দিকে চাহিয়া বুঝি অসাধ্য সাধন করা যায়। উমা হাসিয়া উঠিল, শুভ্র মুক্তার মত দাতগুলি ঝকমক করিয়া উঠিল। —কি, বল কিছু চুপ করে রইলে যে। —কি মুন্দর তোমায় দেখাচ্ছে। —হ-হ, তবু একটা মনের কথা বললে—কিন্তু তুমি কি বলতে যাচ্ছিলে,—সুন্দর–মানে আমি স্বন্দর নই, তবে এই স্বন্দর দিনে সবই স্বন্দর ঠেকৃছে —সবেতেই তোমার পরিহাস। --আচ্ছ, জীবনটা কি একটা পরিহাস নয়। জীবন সম্বন্ধে সিরিয়াসলি ভাবতে বসলে আমি ত তার কোন অর্থ খুঁজে পাই না। কেন এত দুঃখ ?