পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Volvo ওপ্রবাসী $\లి85 ঐযুত মহেন্দ্র-সেন দয়া করে তিন দিন বাঁকুড়ায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তার মুখে যা শুনেছি তা লিখছি। ১৩৪০ সালের বৈশাখ মাসের পূৰ্ব্বে তিনি এই পুীর অস্তিত্ব জানতেন না। এক দৈবযোগে তিনি জানতে পারেন। ছাতনায় চৈত্র গুরুসপ্তমীতে চণ্ডীদাসের মেলা হয়ে থাকে। ১৩৩৯ সালের চৈত্র মাসে শ্ৰীযুত সেন মেলা দেখতে গেছলেন। গিরিবাকর্তী সঙ্গে ছিল । লখ্যাশোলের গায়ে হামুল্য গী। এই গায়ে গিরির নিবাস। এখন তার বয়স যাট-পয়ষটি বৎসর। পথে যেতে যেতে চণ্ডীদাসের কথা উঠে । গিরি বলে, সে যে সিদুৰ সেনকে দিয়েছে, তাতে চণ্ডীদাসের এক পুখী আছে। তিনি বাড়ী এসে কিছুদিন পরে সিন্দুকের এক রাশি কাগজপত্রের মধ্যে পুৰীখানা দেখতে পান। তখন পাটায় বাধা ১৮ পাতা ছিল। এই সকল খুচরা কাগজের মধ্যে রামায়ণ, মহাভারত, নারদ-সংবাদ, অমরকোষ, শব্দশিক্ষা ইত্যাদি পুী ছিল। গিরির পিতা শিৰু ছাতনার রাজার এক দরোয়ান ছিল। লে লেখাপড়া তেমন জানত না। কিন্তু কথকদের মুখে ভাগবতাদি গুনে গুনে রাধাকৃষ্ণের তত্ত্ব বুঝত। গান-বাজনা ভালবাসত। রাজসেবা দ্বারা কিছু বিষয়ও করেছিল। ১২৬৪ সালে ছাতনার রাজা আনন্দলাল গুপ্তাঘাতে অকালে হত হন। গৃহ-বিবাদ জলিয়া উঠে। সে সময় রাজ্যের কাগজ-পত্ৰ ষে পেরেছে, সেই সরিয়েছে। (এই কারণে বর্তমান রাজার ঘরে রাজবংশবৃত্তাস্ত কিছুই পাওয়া যায় না। ) বোধ হয় শিবুও অনেক কাগজ-পত্ৰ এনেছিল । সেই সঙ্গে চণ্ডীদাসের পুখীও ছিল। সে কাঠের একটা নূতন সিন্দুকে রেখেছিল। সিন্দুকটি বড়। প্রায় চার হাত লম্ব, এক কোমরের উপর উচু। তার বাড়ীতে তখন ১৯১২ খান তাত চলত। সে স্বতা ও বোন কাপড় ইত্যাদিও সে সিন্দুকে রাখত। শিৰু দীর্ঘজীবী ছিল। তার মৃত্যুর পর গিরি হীনদশায় পড়ে । ” গিরি-কাকতী শ্ৰীযুত রামানুজকে বলেছে, তার পিতা আনন্দলালের দ্বিতীয় রাণী আনন্দকুমারীর নিকট হতে পুৰীখানা এনেছিল। ১৩১৮ সালে ৯৭৯৮ বৎসর বয়সে শিবুর মৃত্যু হয়েছে। তার পর গিরির ঘর পুড়ে যায়, সিন্মুক রাখবার জায়গা ছিল না। টাকারও অভাব হয়। সে কাগজ পুৰীপত্রসহ সিন্দুকটি ১৩২৫, কি ১৩২৮ সালে প্রসূত মহেন্দ্রসেনকে বিক্রি করে। ঐযুত সেনের বাড়ীতে একটা পুরাতন বড় সিন্দুক ছিল। মেয়ের সে সিন্দুকের মূল্যবান অব্যাদি এই নৃতন সিন্দুকে, আর ঘরের ভাঙ্গাচোরা জিনিস ও নূতন সিন্দুকের কাগজপত্র পুরাতন সিন্দুকে রাখেন। পুর্থীখানাও এই ভাবে এই সিন্দুকে পড়েছিল। পুর্থীর পাত, অন্য পুর্থীর পাতা ও কাগজ-পত্রের সঙ্গে মিশে গেছল । পুর্থীর পাটবাধ পাতা বাদে অন্য পাতা খুজে খুজে বীর করতে হয়েছিল । শ্ৰীযুত সেন যে ৪৪ পাতার পুর্থী দিয়েছিলেন, তার নকল রাখেন নাই। পরে নকল রেখে রেখে পাতা দিয়েছেন। এই কারণেও দেরি হত। তিনি গ্রামবাসী, সংসার-চিন্তায় ঘুরে বেড়ান। পুর্থীর পাত-খোজা তার আবশ্বক কর্ম মনে করেন নাই। আমাদের গ্রহ স্বপ্রসন্ন বলতে হবে, পুর্থীখানা উদ্ধার হয়েছে। শ্ৰীযুত রামানুজের উদ্যম ও আগ্রহের প্রশংসাও ক’রতে হবে । (২) পুখী পুখী দু-পিঠে লেখা, ১০০ পাতায় সম্পূর্ণ। সব পাত আড়ে সমান, কিন্তু দীৰ্ঘে সমান নয়। ১১ ও ১২-র পাতা বাদে প্রথম ২০ পাতা প্রায় ১৪৬০ ইঞ্চি লম্বা। কাগজের রং খড়ের মতন। ২০-র পাতায় মল্লেশ্বর গোপাল-সিংহের সহিত চণ্ডীদাসের কথা আছে। ১১ ও ১২-র পাতা ১৫w০ ইঞ্চি লম্ব। এই দুই পাতায় শূন্তভারতী ও বাসলীর সহিত চণ্ডীদাসের উক্তি-প্রত্যুক্তি আছে। কাগজ ও লিপি দেখে মনে হয় পাতা দুখানি পরে নিবিষ্ট হয়েছিল। হয়ত পুরাতন অনুবাদ ভাল হয় নাই, নূতন পাতায় নূতন অনুবাদ করা হয়েছিল। ২০-র পর ৭৭ পাতা ১৫ ইঞ্চি হতে ১৫w ইঞ্চি লম্বা । শেষের ৩ পাতা ছোট। কাগজের রং যেন ধু আ-লাগা। পাতার স্থানে স্থানে বড় বড় কাল দাগ আছে। ভিজা থাকতে থাকতে দুখানা পাতা চিটিয়ে একখানা করে” কাগজী তার ভারী পাথর চালিয়েছিল । কাগজ পুরু হবার এই কারণ। পাতার ধর ভাজা দেখে মনে হয়, কেহ যত্ব করে’ রাখে নি। দু-পুর্ণ কাগজ বলে’ মাঝে মাঝে ছিড়ে যায় নাই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাজার মুন্সী গীতা-ঘরে ১০০ খান পাতা জাড়ে দীর্ঘ পুরুতে সমান পান নাই। পূর্বকালে দেশী কাগজের নাম