পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्हांडूछन्। নামের গ্রাম না পেলেও বড়ু চণ্ডীদাসের নিবাস খুজতে ছাতনায় আসতে হত। অবধান কর,— ( ১ ) কৃষ্ণকীৰ্ত্তনের ভাষা এই দেশের । (এই বৎসরের সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকার ১ম, ২য় সংখ্যা )। (২) ছাতনার বাসলী সামন্তরাজ-বংশের ফুলদেবী হলেও গ্রামদেবী । ( ৩ ) বাসলীর ধ্যানের সহিত এই বাসলী-প্রতিমার ঐক্য আছে, এবং সে ধ্যানে এর নিত্য পূজা হচ্ছে। (৪) যারা পূজা করেন, তাদের পদবী দে-ঘরিয়া। র্যারা পূজার ও ভোগের যোগাড় করতেন, তাদের নাম বড়ু ছিল। এখন বড় নাম প্রচলিত নাই। কিন্তু বঁকুড়া জেলাতেই সে-কেলে দে-ঘরিয়া নাম আছে, অপর জেলায় নাম পূজারী। দ্বিজ চণ্ডীদাসের কৃষ্ণ, দেয়াসিনী সেজেছিলেন। এই নামটিও এই জেলায় প্রচলিত আছে, আর কোথাও নাই । ( ৫ ) বাসলীর দেঘরিয়ারা বলেন, তার চণ্ডীদাসের অগ্রজ দেবীদাসের বংশ । (৬) তারা দেবীদাস হতে পুরুষ গণে আসছেন। এখন ২৩ পুরুষ গত হয়েছে। অতএব দেবীদাস প্রায় ছয় শত বৎসর পূর্বে ছিলেন। এটা আশ্চৰ্য্য রকমের ঐক্য। (৭) দেবীদাসের পৌত্র পদ্মলোচন ৪৭০ বৎসর পূর্বে ( ১৩৮৭ শকে ) “বাসলী-মাহাত্ম্য” লিখেছিলেন। তাতে আছে ছাতনার রাজা হামীর-উত্তর দেবীদাসকে বাসলী পূজায় নিযুক্ত করেন। দেবীদাসের অম্বুজের নাম চণ্ডীদাস। আর, চণ্ডীদাস বড় কবি ছিলেন, “জয়তু স প্রচণ্ডীদাস: কবি” । (৮) প্রায় তিন শত বৎসর পূবে ছাতনার এক রাজার কবিরাজ উদয়-সেন সংস্কৃত "চণ্ডীচরিতামৃতম্” লিখেছিলেন। তার প্রপৌত্র কৃষ্ণ-সেনের বঙ্গামুবাদ শুনেছ। (৯) উদয়-সেন "চণ্ডীদাসচরিতে" কয়েকটা উপাখ্যান দিয়েছেন। তেমন উপাখ্যান অন্ত কবিও লিখেছিলেন। একটা উপাখ্যানে আছে, যখন চণ্ডীদাস অবতীপুরে পাঠশালায় পড়তেন, অথবা পাঠশালার গুরুমশারি করতেন, তখন রামীর সহিত তার প্রথম মিলন হয়েছিল। উপাখ্যান ধাই হ'ব, অবন্তীপুর বিষ্ণুপুরের নিকটস্থ এক গ্রাম। এখন লোকে অবস্তিকা বলে । _

  • চণ্ডীদাস-চরিত”

ક્લિંગ છે এই সকল প্রমাণ পরিগ্রহ করলে চণ্ডীদাসের নিবাস যে ছাতনায় ছিল, তাতে সন্দেহ থাকে কি ? বীর ॥ ছাতনানিবাসী রাধানাথ দাস বাসলী-বন্দন লিখেছেন। তাতে দেবীদাসের ভাই চণ্ডীদাস, একথা ত নাই। বাকু ৷ জানি, ছাতনায় রাধানাথ দাস প্রায় ১০০ বৎসর পূবে ছিলেন। কৃষ্ণসেনের কনিষ্ঠ পুত্রের সঙ্গে তার কন্যার বিভা হয়েছিল। তিনি বাসলী-বন্দনা লিখেছেন, চণ্ডীদাস-বন্দনা লেখেন নাই। বাসলী কি করেছিলেন সে কথাই লিখেছেন। দেবীদাস বাসলীর পূজা করতেন, বাসলী দেবীদাসকে পিতা বলেছিলেন, ইত্যাদি । চণ্ডীদাসের সহিত বাসলীর কোন কথা হয় নাই, চণ্ডীদাসের নামও আসে নাই। বীর । তুমি বলছ, দেবীদাস ও চণ্ডীদাস ভরদ্বাজ গোত্রের রাঢ়ী ব্রাহ্মণ ছিলেন, কিন্তু “কৃষ্ণকীর্তনে চণ্ডীদাস বড়ু, এইটুকু জানি, তিনি কি জাতি ছিলেন তা জানি না । বাকু । সংস্কৃত ‘বটু’ শব্দ হতে বড়। বটু শব্দের অর্থ বালক, কিশোর, ছোকরা। এক পূজক অপরের সাহায্য ব্যতিরেকে ঠাকুরের পূজা ও ভোগরাগ করতে পারেন না।. ফুল তুলতে, চন্দন ঘ'ষতে, জল আনতে, ভোগের যোগাড় ক’রতে লোকের দরকার হয়। এই সকল লোককে বটু বা বড় বলা হত। যেমন, পুরী মন্দিরে বড়ু, ভুবনেশ্বরের স্বান ও পূজার জল বইবার বড় আছে। ভুবনেশ্বরের বড়ুর শূন্দ্র। “শুন্তপুরাণে” পুস্পকটু ধমের পূজার ফুল তুলত। "ধৰ্ম্মপূজাবিধানে” পুষ্পবটু, পাত্রবটু, ভোগবটু আছে। একস্থানে ভোগবটুর নাম ভোগবড়ু আছে। এর অবগু ব্ৰাহ্মণ ছিলেন না। কাজ-অনুসারে ব্রাহ্মণ কিংবা অব্রাহ্মণ বটু নিযুক্ত হত। অতএব শুধু “কৃষ্ণকীর্তনে” নির্ভর করলে চলবে না। যদি তাই কর, তা হ'লে নামুর নামও বাদ দিতে হবে । কৃষ্ণকীর্তনের চণ্ডীদাস পণ্ডিত ছিলেন । সংস্কৃত ভাষা জানতেন । অতএব ব্রাহ্মণ বলেই মনে হয়। বটু শব্দের অর্থ ব্রহ্মচারী অাছে। বটু-করণ অর্থে উপনয়ন। যারা ঠাকুরঘরের কাজ করত তাদিকে বড়ু বলা হত। তারা বামুন হত। যে একবার বড়ু হয়েছে, সে যুবা ও প্রৌঢ় হ’লেও তার বড়ু উপাধি থাকত। চণ্ডীদাস যুবা বয়সে বড়ু নিযুক্ত হয়েছিলেন, এইরূপ মনে হয় ।