পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

aלצר* অতি গম্ভীর নাটকের জন্য আমার কাছে গান ফরমাস করে বসলেন। কোনো বিলাতী নাট্যেশ্বর এমন প্রস্তাব মুখে আনতেন না, মনে করতেন এটা নাট্যকলার মাঝখানে একটা অত্যুৎপাত । এখনকার ইংরেজী পোড়েরাও হয়ত এরকম অনিয়মে তর্জনী তুলবেন ; আমি তা করিনে, আমি বলি আমাদের অাদর্শ আমাদের নিজের মন আপন আনন্দের তাগিদে স্বভাবতই সৃষ্টি করবে। সেই কষ্টিতে কলাতত্ত্বের ংযম এবং ছন্দ বঁচিয়ে চলতে হবে, কিন্তু তার চেহার যদি সাহেবী ছাচের না-হয় তবে তাকে পিটিয়ে বদল করতেই হবে একথা বলতে পারব না। বিদেশী অলঙ্কারশাস্ত্র পড়বার বহু পূৰ্ব্ব থেকে আমাদের নাট্য, যাকে আমরা যাত্রা বলি, সে তো গানের স্বরেই ঢালা। সে যেন বাংলা দেশের ভূসংস্থানেরই মতে, সেখানে স্থলের মধ্যে জলের অধিকারই যেন বেশি। কথকতা যেটা অলঙ্কারশাস্বমতে ন্যারেটিভ শ্ৰেণীভূক্ত, তার কাঠামো গদ্যের হলেও স্বীস্বাধীনতা যুগের মেয়েদের মতোই গীতকলা তার মধ্যে অনায়াসেই অসস্কোচে প্রবেশ করত। মনে তো পড়ে একদিন তাতে মুগ্ধ হয়েছিলুম। সাহিত্যরচনার প্রচলিত পাশ্চাত্য বিধির কথা স্মরণ করে’ উদ্বেল আনন্দকে লজ্জিত হয়ে সংযত করিনি তো । যাই হোক, আমার বলবার কথা এই যে, আত্মপ্রকাশের জন্যে বাঙালী স্বভাবতই গানকে অত্যন্ত করে’ চেয়েছে। সেই কারণে সৰ্ব্বসাধারণে হিন্দুস্থানী সঙ্গীত-রীতির একান্ত অতুগত হোতে পারে নি। সেই জন্যেই কানাড়া আড়ানা মালকোষ দরবার তোড়ির বহুমূল্য গীতোপকরণ থাকা সত্বেও বাঙালীকে কীৰ্ত্তন স্বষ্টি করতে হয়েছে। গানকে ভালবেসেছে বলেই সে গানকে আদর করে আপন হাতে আপন মনের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করতে চেয়েছে। তাই আজ হোক কাল হোক বাংলায় গান যে-উৎকর্ষলাভ করবে সে তার আপন রাস্তাতেই করবে আর কারো পাথরজমানে বাধা রাস্তায় করবে না । যে স্থত্রে এই প্রবন্ধ রচনা স্বরু করেছিলেম সেই স্বত্রটি এইখানে আর একবার ধরা যাকৃ। দেশের সংস্কৃতিতে সঙ্গীতের প্রাধান্ত ছিল, আমাদের বিদায়েমুখ পূৰ্ব্বযুগের দিকে তাকিয়ে সেই কথাটি জানিয়েছি। তার পরে বয়স যতই বাড়তে লাগল ততই অন্ত এক যুগের মধ্যে প্রবেশ করতে প্রবাসী আমি যখন জন্ম নিয়েছি তখন আমাদের পরিবারের ও ՏNՑ8Հ লাগলুম যে-যুগে ছেলেরা প্রথম বয়স থেকে কলেজের উঠ ডিগ্রির দিকে মাথা উচু করে নোট মুখস্থ করতে লেগেছে । তখন গানটাকে সম্মানীয় বিদ্যা বলে গণ্য করবার ধারণ: লুপ্ত হয়ে এল ; যে-সব বড়ো ঘরে গাইয়ের আদর ও আশ্রয় পেয়ে এসেছে সেখানে সঙ্গীতের ভাঙা-বাসায় পড়ামুখস্থর গুঞ্জনধ্বনি মুখরিত হয়ে উঠল, তখনকার যুবকদের এমন একটি গুচিবায়ুতে পেয়ে বসল যাতে দুৰ্গতিগ্রস্ত গানব্যবসায়ীর চরিত্রের সঙ্গে জড়িত করে” গান বিদ্যাটিরই পবিত্ররূপকে বীভৎস বলে কল্পনা করতে লাগল। বাংলা দেশের শিক্ষবিভাগে সঙ্গীতকে স্বীকার করতে পারে নি। তাই সঙ্গীতে রুচি, অধিকার ও অভিজ্ঞতা না থাকাটাকে অশিক্ষার পরিচয় ব’লে কোনো লজ| বোধ করার কারণ তখনকার শিক্ষিতমণ্ডলীর মনে রইল না । বরঞ্চ সে দিন যে-সব ছেলে হিতৈষীদের ভয়ে চাপা গলায় গান গেয়েছে তাদের চরিত্রে হয়েছে সন্দেহ । অপর পক্ষে সেই সময়টাতে অনেক সৎকাজের স্বচল হয়েছে সে কথা মানতে হবে । তথন আমাদের পলিটিক্স সাবধানে দুই ফুল বঁচিয়ে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে মাথ৷ তুলছে, বক্তৃতামঞ্চে ইংরেজী বাণী হাততালি পাচ্চে, খবরের কাগজের মুখ ফুটতে স্বরু করেছে, সাহিত্যে দুই একজন অগ্রণী পথে বেরিয়েছেন। কিন্তু দেশে বড়ো বড়ো প্রাচীন সরোর বুজে গিয়ে তার উপরে আজ যেমন চাষ চলছে, তেমনি তখন সঙ্গীতের রসসঞ্চয় অন্ততঃ শিক্ষিত পাড়ায় প্রায় মরে এসেছে, তার উপরে এগিয়ে চলেছে পাঠ্যপুস্তকের আবাদ । আপন নীরসতাকে শুচিত বলে সম্মান দিয়েছিল যে গ সে যে আজো অটল হয়ে আছে তা আমি বলি নে । বাঙা র প্রকৃতি আজ আবার আপন গানের আসর খুঁজে বেড়াছে, স্বরের উপাদান সংগ্রহ করতে স্বষ্টি করচে। দে: বিদ্যায়তম এই শুভ মুহূৰ্ত্তে তার আনুকূল্য করবে একান্ত মনে এই কামনা করি। দৈবক্রমে যে স্থযোগ আমি পেয়েছিলুম সে কথা নে পড়চে । আমার ভাগ্যবিধাতাকে আমি নমস্কার ব য় । o s জনতার বাইরে । সমাজে আমরা ব্রাত্য । আ* ** পরিবারে পরীক্ষাপাসের সাধনা সেদিন গৌরব পী ' '