পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-कांडिक মতিলাল •දෘNල বাবুকে দাত দেখাইয় ঘন ঘন চোখ মিট্‌-মিটু করিতে আরম্ভ করিল। শুণমবাবু অল্প একটু হাসিয়া বলিলেন—বেশ, বেশ ! ওবেলায় এসে পয়সা নিয়ে যাস । বাজীকর জোড়হাত করিয়া বলিল –আজ্ঞে, এই বেলাতেই পেলে— শুামবাবু বলিলেন—যাঃ বেটী, দেখছিস না এখন সরকারী কাজ করছি । বাজীকর আর কিছু বলিতে সাহস করিল না, সে প্রণাম করিয়া ফিরিল । শু্যামবাবুর খোট্টা চাপরাশীটা পাশে দাড়াইয়া ছিল, সে বলিল—আরে ভালকো ত বহত লঢ়াই করে রে—দেখে তেরা কেমন ভালকো । বলিতে বলিতেই সে ধী করিয়া ভালুকটাকে বেশ কায়দা করিয়া জাপটাইয়া ধরিল। অতর্কিত আক্রমণে ভালুকটা বেকায়দায় নীচে পড়িয়া গেল । বাজীকর চটিয়া উঠিয়াছিল, সে বলিল—ই-কি করন তোমার সিংজী ; বলেহার বেট, বলেহার বেটা ভালুক রে! ভালুকটা নিজের অসতর্ক অবস্থা তখন অনেকটা সামলাইয়া লইয়াছে । চারিদিকে দশক জমিয়া গিয়াছিল। সম্মুথেই দাড়াইয়া পাৰ্ব্বতী আর মদন যুধ্যমান ভালুক ও চাপরাশীটার প্যাচ-কষাকষির সঙ্গে সঙ্গে আপন আপন দেহ লইয়৷ অ'কিয়া-বাকিয়া উঠিতেছিল, কখনও দাতে ঠোট কামড়াইয়া বলিতেছিল—দে–দে --দে—! শুধু মদন আর পাৰ্ব্বতী নয়-ওরূপ ধারায় মুখভঙ্গী করিতেছিল আরও অনেকে, মায় শুামগোপাল বাবু পয্যন্ত। ভালুকটা যখন চাপরাশীটাকে চিং করিয়া ফেলিয়া দিল তখন তিনি ধনুকের মত বাকিয় দাড়াইয়া আছেন। দর্শকরা হাসিবার উপক্রম করিতেছিল এমন সময় হনুমানটা চট করিয়া উঠিয়া পরাজিত চাপরাশীটার মুখের উপর বঁ-পায়ের একটা মৃদু লাথি মারিয়া দিয়া দর্শকদের একবার দাত দেখাইয়া দিল। দর্শকদের মধ্যে হাসির একটা হাড়ি যেন সশকে ফাটিয়া পড়িল। পাৰ্ব্বতী পথের উত্তপ্ত ধূলার উপরেই একটা ডিগবাজী মারিয়া দিল। চাপরাশীটা অপমানে চটিয়া উঠিয়াছিল—তামবাবুও চটিয়াছিলেন কিন্তু এতগুলি লোকের সহানুভূতির বিরুদ্ধে Эe বিশেষ কিছু বলিতে সাহস করিলেন না। শুধু গম্ভীর ভাবে প্রশ্ন করিলেন—হকুমান সেজেছে ওর নাম কি রে ? কানে ধর ত বেটার—এই চৌকীদার ! ভিড়ের মধ্য হইতে কে বলিয়া উঠিল--আসছে বারে ভোট দোব না কিন্তু ! অত্যস্ত রুষ্ট কণ্ঠে শুামবাবু কহিলেন—কে ? বক্তা আসিয়া সম্মুখে জোড়হাতে দাড়াইয়া বলিলেন-- প্রভু -আমি ! শু্যামবাবু ফিক্‌ করিয়া হাসিয়া ফেলিলেন--বক্তা তাহার এক আত্মীয় এবং বন্ধু—হবুকাক ! হামবাবু কহিলেন—এস, এস তামাক খাও খুড়ো ! হবুকাক বলিলেন—যা, যা---সব, যা এখন । সঙ্গের দল চলিয়া গেল । সমস্ত গ্রামখানা ঘুরিয়া বাজীকর যখন শিবতলায় ফিরিল তখন বেলা প্রায় চারিট । দর্শক-দলের বেশী কেহ আর তখন সঙ্গে ছিল না—শুধু পাৰ্ব্বতী তখনও পিছন ছাড়ে নাই । গাজনের পাণ্ড হরিলাল পাত্র দাওয়ায় দাড়াইয়া ছিল, বিরক্তিভরে সে বলিল-—ও, আমোদ তোদের আর শেষই হয় না ! নে বাপু, লৈবিদ্যি নিয়ে যা । সঙ্গে সঙ্গে হনুমান ভালুক বাজীকর এক এক গামছা খুলিয়া বসিল । হরিলাল সেরখানেক করিয়া চাল, কয়টা কলা ও সামান্ত কয়েকথান বাতাস বিতরণ করিয়া দিয়া বলিল--এইবারে আমি খালাস বাবা ! পাৰ্ব্বতী আশ্চৰ্য্য হইয়া গিয়াছিল—সে আরও আশ্চৰ্য্য হইয় গেল যখন বাজীকর জানোয়ার দুইটাকে ছাড়িয়া দিয়া চলিয়া গেল । হনুমানটাও একদিকে চলিয়া গেল, ভালুকটাও পাশের গ্রামের পথ ধরিল। ভয়ে সে দূরত্ব একটু বাড়াইয়া দিয়া নাচিতে নাচিতে ভালুকটার পিছন ধরিল। খানিকট মাঠ পার হইয়াই ‘মৌলকিণী পুকুর, ভালুকট পুকুরের ঘাটে নামিয়া বসিল—তার পর হাত পা মুখ ও দেহ হইতে একে একে খোলসগুলি ছাড়াইতে আরম্ভ করিল। পাৰ্ব্বতীর আমোদের সীমা-পরিসীমা ছিল না—তাহার অনুমানই সত্য হইয়াছে ! সে করতালি দিয়া বলিয়া উঠিল— মানুষই বটে, মানুষই বটে ! ওরে বাবা রে! শব্দ গুনিয়া ভালুক তাহার দিকে চাহিয়া পরমানন্দে দাত বাহির করিয়া হাসিতেছিল। কিন্তু সে কি