পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

°b মতিলাল হি হি করিয়া হাসিয়া বলিল—দেখবি—রেতে চেচাবে খিদেতে—ঘুম হবে না তোর ! ভুবন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চোখের দৃষ্টিতে যেন অগ্নি বর্ষণ করিয়া বলিল—নেতার মেরে দোব তা হ’লে আজ ওর । মতিলাল সকাতর কণ্ঠে বলিল—আহা-হু!—ভোবন-কেষ্টের জীব ! আর জানিস, তোর যখন ছেলে হবে, তখন দেখবি কত কাজ করে গোবরা । ভুবন উষ্মা ভরেই কহিল কি করবে কি শুনি ? –এই ছেলে গুয়ে থাকবে, গোবরা পাহারা দেবে, কাক তাড়াবে। সত্য, গোবরগণেশের ওই গুণটি আছে—বাড়িতে কাক নামিতে দেয় না। ভূবন শুধু বলিল হু ! মতিলালের দৃষ্টিতে পড়িল—পাৰ্ব্বতী ও মদন দুয়ারের পাশে দাড়াইয়া উকিঝুকি মারিতেছে । সে গাল ভরিয়া হাসিয়া বলিল—এই দেখ, ভোবন—এই ছেলেটির কথা বলেছেলাম। পাৰ্ব্বতী মদনকে বলিতেছিল—৪ই দেখ,। ভুবন মুখ ফিরাইয় তাহাদের দেখিয়া বলিল—এস পোকবাবুর'—পায়রা আছে দেব-ব’লো! —ওরে-বাবা রে! ধরবে ভাই ! বলিয়া মদন ছুটিয়া পলাইল। পাৰ্ব্বতী তখনও দাড়াইয়াছিল—মতিলাল বলিল-- প্যায়রা থাবে এস থোকা বাৰু! যাবার সময় আমি হাতী সেজে পিঠে ক'রে দিয়ে আসব তোমাকে । -বলিয়াই সে মাটিতে হাত পাড়িয়া চতুষ্পদ সাজিয়া পাৰ্ব্বতীকে দেখাইল । মদন পিছন হইতে ডাকিল--পালিয়ে আয় রে ধরবে ! পাৰ্ব্বতী আর থাকিতে সাহস করিল না-- পলাইল । পরদিন কিন্তু সকালেই তাহারা আসিয়া হাজির । টেকিশালে ভুবন দুৰ্ম্ম ছম্ শব্দে ধান ভানিতেছিল। মতিলাল দাওয়ায় বসিয়া মুড়ি খাইতেছিল। ছয়ারের গোড়ায় দাড়াইয়া পাৰ্ব্বতী বলিল -ভালুক-- প্যায়ুর দিবি ? মুখে এক মুখ মুড়িম্বন্ধই মতিলাল দাত বাহির করিয়া বলিল—এস-এস–খোকাবাবু এস! ' মদন বলিল—ওখান থেকে ছুড়ে দে । তুষ্ট ভূত ! সে রাফুলী কই—সেই দাত বার করে! বলিয়াই সে দাত বাহির করিয়া দেখাইয়া দিল। মতিলাল হা-হা করিয়া হাসিয়াই সারা হইল। প্রবাসী Nరి8R --কে—রে—খালভরা ছেলে – ভুবন টেকিশাল হইতে বাহির হইয়া আসিল । পাৰ্ব্বতী ও মদন ছুটিয়া পলাইল। ভূবন আপন মনেই বকিতেছিল—ভদনোকের ছেলে—ভদনোক সব—বাক্যি দেখ, দেখি! ভূত রাকুসী ! অ’ ! মতিলাল তখন সবলে পেয়ার গাছটাকে নাড়া দিতেছিল । সে হি হি করিয়া হাসিয়া বলিল—তুও যেমন ভোবন— বলুক কেনে! ভুবন ঝঙ্কার দিয়া বলিল—-ন!—বলবে কেনে, কিসের লেগে । ছেলের কথা দেখ দিকি নি । গ্রামের ধারে দাড়াইয়। মদন তখন পাৰ্ব্বতীকে বলিতেছিল —না, যাস না ভাই, শুনিস নাই রাক্কসীর গল্প ! ওরা ঠিক ভূত আর রাকুলী ! মানুষ সেজে আছে। –খোকাবাবু-ও থোকাবাবু প্যায়রা নিয়ে যাও! আঁচলে করিয়া পেয়ারা লইয়া মতিলাল হাসিতে হাসিতে তাঙ্গদের ডাকিতেছিল। মদন বলিল-–ওইখানে ঢেলে দে । তুষ্ট সরে যা ! মতিলাল হাসিয়া পেয়ারাগুলি ঢালিয়া দিয়া সরিয়া গেল। পেয়ারাগুলি তুলিয়া লইয়া পাৰ্ব্বতী বলিল-— ভালুক হয়ে যা দেখি ! সেই কালকের মত ! মতিলাল হি হি করিয়া হাসিয়া বলিল—দাড়াও তোমরা আসছি আমি । কয়েক মিনিট পরেই ঘেণং ঘোৎ শব্দ শুনিয়া পেয়ার থাইতে ব্যস্ত মদন ও পাৰ্ব্বতী দেখিল-ভালুক আসিতেছে। সঙ্গে সঙ্গে মদন প্রচণ্ড বেগে ছুটিল। পাৰ্ব্বতীও তাহার অন্তসরণ করিল। ভালুক উঠিয় দাড়াইয়া ডাকিল— অ--পোকাবাবু! 變 轟 来 ছেলে দুইটির সঙ্গে মতিলালের একটু আত্মীয়তা হইল, কিন্তু সে আত্মীয়তা নিবিড় হইল না। তাহার পেয়ারার জন্য রোজ আসে, কিন্তু মতিলালকে ধরা দিল না। মতিলাল হাসিমুখে ডাকে, তাহারা থানিকটা সরিয়া গিয়া বলে—না ! মতিলাল তাহাদিগকে প্রলুব্ধ করিতে চেষ্টা করে—কত সাজতে পারি আমি, তোমাদিগে দেখাব ।