পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెB তাহার মেয়ের কোথায় ? বাড়িতে ত সে সারাদিন উলঙ্গই পড়িয়া থাকে। ওখানে অমন ভাবে দিলে ত ঝিয়েরাও বা-পায়ের কড়ে-অঙুিলে ছুইবে না। দেখা যাউক, মেজ খুকীর বয়স পাঁচ বৎসর হইলেও তাহার দুই-চারখানা জামাকাপড় খুকীটা সেদিনকার মত পরিতে পারে কি না! না হইলে এত কাজের ভিতর এক দিনে কাপড় সেলাই করা কিংবা পয়সা খরচ করিয়া কিনিয়া আনা ত অfর সম্ভব নয় । একটা গোলাপী ফ্রক আগাগোড়া ধূলায় ধূসর করিয়া ডান হাতখানা মুখের ভিতর পুরিয়া চুধিতে চুধিতে মেজ খুকী লাবু আসিয়া মাতার সম্মুখে দাড়াইল । গৌরী একবার মুখ তুলিয়৷ তাকাইয়া বলিল, “হ্যারে লবি, বুড়ো হ’তে চললি, এখনও আঙুলচোষা রোগ গেল না ?” লাবি বলিল, “দাদা ল্যাবেনচুষ দিয়েছিল তাই থাচ্ছি, আঙুল ত চুষিনি।” তার পরই সে অন্ত কথা পড়িল, “ম, কাল তুই কোথায় যাবি, আমায় নিয়ে যাবি নে ৷” গৌরী বলিল, “হ্যাঁ, তোমাদের ল্যাজে বেঁধে নিয়ে যাবার জন্তেই আমি এত থাট্‌ছি আর কি ? ঘরে ত অষ্ট প্রহরই হাড় জালাতে আছি, আবার পথেও তোমাদের নিয়ে গেলেই হয়েছে ।” লাবি গাল ফুলাইয়া বলিল, “কেন হবে না ? আমি ত আর বে'র যুগি মেয়ে নয়, পথে বেরোলে আমার কি হবে ? দিদিকে ঘরে রেখে লেও, আমি যাবই।” গৌরী মুর্থনাড়া দিয়া বলিল, “একরত্তি মেয়ের কথার বাধন দেখ ! ফের পাকামি করবি ত উন্নন-কঁদোয় মুখ ঘসে দেব একেবারে । যা বেরো এথান থেকে હશુનિ ” লবি বাহিরে যাইবার কেন লক্ষণ দেখাইল না। সেইথানেই বসিয়া পড়িয়া মাটিতে পা ঘসিতে ঘসিতে নাকিম্বরে “আমি যাব, আমি যাব” করিয়া কাদিতে লাগিল। তাহার কান্নার শব্দ পাইয়া বড়খুর্কী ও পুটি কোথা হইতে আঁচল লুটাইতে লুটাইতে ছুটিয়া আসিয়া হাজির ৷ “কোথায় যাবে মা, ও কেন কঁদিছে ?” মা বলিল, “চুলোয় যাবার জন্ত কঁদিছে ; তুমিও ধর না প্যা এইবার, তবে ত চার পোয়৷ ভৰ্ত্তি হলে ।” পুটি খানিক ক্ষণ মুখ গষ্ঠীর করিয়া থাকিয়া বলিল, “তুমি -৫ হোচাড় S్సN98R বুঝি নেমস্তন্ন খেতে বাবে ? ওকে কেন নিয়ে যাবে না মা ? আমার ত দুখানা রাঙা শাড়ী আছে, একটা ওকে দেব, তাহলেই ত দু-জনেরই যাওয়া হবে।” গৌরী বলিল, “ন গো না, দাতাকৰ্ণ, তোমায় শাড়ী দিতে হবে না, আমি নেমস্তল্পে যাচ্ছি না । তোমাকেও নিয়ে যাব না, ওকেও নিয়ে যাব না, আমি একাই যাব ।” পুটি দুই চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া বলিল, “ছুটকীটাকেও নিয়ে যাবে না ? ও কার কাছে থাকবে ?” গৌরী রাগিয়া বলিল, “কার কাছে থাকবে তার আমি কি জানি ? একটা দিনের জন্তে বাইরে যাব তা এখন স্বরু হ’ল কৈফিয়ৎ দেওয়া সাত গুষ্টিকে । ডেকে নিয়ে আয় না মন, ধনা সবাইকে, কার কি বলবার অাছে বলে নিক্‌ ৷ এমন অদেষ্টও মানুষের হয়! সাতকুলে কেউ যদি আছে একটু সাহায্য করতে । কাল যদি আমি মরি, তাহলেও তোদের গলায় বেঁধে মরতে হবে, না ?” পুটি মাতার এমন আক্রোশের কোন কারণ বুঝিতে না পারিয়া একেবারে চুপ হইয়া গেল। গৌরী ছোট মেয়েটাকে মেঝে হইতে তুলিম পুটির কোলে চাপাইয়া দিয়া বলিল, “যা দিখি যা, এটাকে নিয়ে একটু বাইরের রোয়াকে বস্গে যা । আমার ছিষ্টির কাজ পড়ে রয়েছে এখনও । এই সব লুচি-তরকারী হ’লে পর মা'র কাপড় তুলে, কত্তার কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাণীদির বাড়ি যেতে হবে মেয়েটার একটা ব্যবস্থা করতে । সন্ধ্যে ত হয়ে গেল, কথন যে কি করব ভেবেই পাচ্ছি না । এদিকে ভোর না হ’তে দুধ জাল দিয়ে ছুটকীকে একবার গিলিয়ে যেতে হবে। তারা ত ৭টাতেই এসে পড়বে নিতে।” পুটি বাহিরে যাইতে যাইতে দাড়াইয়া পড়িয় আগ্রহভরে জিজ্ঞাসা করিল, “কার মা, কারা?” গৌরী হঠাৎ সদয় হইয়া বলিল, “ঐ যে রে কত্তার বন্ধু তিনকড়ি বাবু, তারই মা আর বোন। দেশ থেকে এসেছে অৰ্দ্ধোদয়যোগে গঙ্গচীন করতে। কাল সকালে চীন ক’রে সারাদিন শহর দেখুবে আমিও যাব সেই সঙ্গে।” লাবি ও পুটি সমস্বরে বলিয়া উঠিল, “ম আমরাও যাব তোর সঙ্গে ।” গৌরী বলিল, “কোথায় যাবি বাছ পরের সঙ্গে । তাদের গাড়ীতে অনেক লোক থাকবে, আমি অমনি কোনো রকমে তার মধ্যে ঝুলেটুলে চলে যাব । ছেলেপিলে কি