পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఇSe ******दत བའོ།། TiT །8ི་8-v༦ , SN?●ー。 সার্থক হইতে যদি চোখে দেখিয়া যান, তাহ হইলে বামিনী সুখে মরিতে পরিবেন নাকি ? হৃদয়ের যে নিদারুণ ব্যথা আজও তিনি ভাল করিয়া ভুলিতে পারেন নাই, তাহ তখন ভুলিবেন কি ? মুঞ্জিতকে মানুষ করিবার ভার ত তিনি পাইলেন না, হয়ত মানুষ সে হইবেও না । যা তাহার বংশের ধারা, সেই মতেই সে চলিবে বোধ হয়। সস্তানের দুৰ্গতি দেখার যে বেদনা, তাহার জন্তও তাহকে এখন হইতে প্রস্তুতই থাকিতে হইবে। নিত্য আসিয়া শ্বেত পাথরের গেলাসে ধোলের সরবৎ রাখিয় গেল । যামিনী পাশের ঘরে গিয়া এত রাত্রে আর একবার গা ধুইয়া আসিলেন । কাপড়-জামা সব বদলাইয়া ফেলিলেন । তাহার পর সরবৎটুকু পান করিয়া একটু যেন সুস্থ বোধ করিতে লাগিলেন। অল্পক্ষণ এই ঘরে বসিয়া থাকিয়া তিনি উঠিয়া পড়িলেন । লোহার সিন্ধুকটা ঠিক বন্ধ আছে কিনা একবার পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন, ভtহার পর বাহির হইয়া একবার মুজিতের শয়নকক্ষে প্রবেশ করিলেন । সে অঘোরে ঘুমাইতেছে । চাকরকে হাজার বার বলা সত্বেও সে এ-ঘরের জানালাগুলি খুলিয়া দেয় নাই, দেখা গেল । চারটি জানালার ভিতর তিনটিই বন্ধ । সুজিত এবং তাহার বাবার ধারণ বন্ধ ঘরে পূর্ণ বেগে পাখা চালাইলে তাহাতে কোনো ক্ষতি হয় না, তবে ঝড়-ঝাপটার দিনে সব দরজা-জান্‌লা বন্ধ ন করিয়া দিলে ক্ষতির সম্ভাবনা যথেষ্ট । ঘামিনী বিরক্তিতে ক্রকুঞ্চিভ করিয়া জানালাগুলি খুলির দিলেন। আর রাত করা চলে না, শ্রাস্তিতে র্তাহার শরীর যেন ভাঙিয়া পড়িতেছিল । একবার স্বামীর শয়নকক্ষের দিকে চাহিয়া দেখিলেন, ঘর অন্ধকার । স্বরেশ্বর হয় ঘুমাইয়া পড়িয়াছেন, নয় এখনও উপরে আসেন নাই। কোনটা ঠিক তাহা জানিবার চেষ্টা না করিয়া যামিনী ফিরিয়া গিয়া মমতার পাশে গুইয়া পড়িলেন। এত যে শ্রাস্তি, তবু ঘুম সহজে আসিতে চায় না । মনের উপর বেদনার পাষাণ-ভার দিনরাত যেন চাপিয়া বসিয়া আছে, ঘুমকেও সে ঠেকাইয়া ब्रi८षं । ভোরবেল অভ্যাসবশে ঘুম তাহার একবার ভাঙিল, কিন্তু শরীরের জড়তা তখনও এত বেশী যে, তাহার বাধা অতিক্রম করিয়া যামিনী উঠতে পারিলেন না। আবার পাশ ফিরিয়া চোখ বুজিলেন । অন্ত দিন এই সময় হইতেই বাড়ির চাকর-বকিরের সাড়া পাওয়া বায়, আজি সারা যাড়ি নিঝুম । ঝি-চাকরেরা বোধ হয় তিন প্রহর রাত্রি পার হইয়া যাইবার মুখে শুইয়াছিল, এখন পর্য্যস্ত কেহ আর চোখ মেলে নাই । কিন্তু ঘামিনীর ঘুম আর ভাল করিয়া আসিল না । পুৰ্ব্বকাশে আলোকচ্ছটা প্রথম দেখা দিবার সঙ্গে সঙ্গেই শয্যা ত্যাগ করা তাহার. চিরকালের অভ্যাস । আলেী দেখিলে আর তিনি গুইয়া থাকিতে পারেন না । আজও উঠিয়া পড়িলেন । অন্ত দিন নিত্য-ঝি আসিয়া তাহার মুখ ধুইবার সরঞ্জাম গুছাইয়া দেয়, চুল খুলিয়া দেয়, তাহার কাপড়-জামা সব লইয়া গিয়া স্নানের ঘরে ঠিক করিয়া রাধে । যামিনীর এ-সব ভাল লাগে না, কিন্তু জমিদারের গৃহিণী তিনি, মুরেশ্বরের এই সব বনিয়াদী চাল অত্যন্ত ভাল লাগে, ক্রমেই বেশী করিয়া ভাল লাগিতেছে। কাজেই বাধ্য হইয়া যামিনী এ-সব সম্ভ করেন, থানিকটা উৎপাত সহ করার ভাবে । ভবে সুবিধা পাইলেই নিত্যকে তিনি অন্ত কোন কাজে লাগাইয়া দিয়া তাহার হাত হইতে নিস্কৃতি লাভ করেন। আজ সে নিজেই আসিয়া পৌছায় নাই, দেখিয়া খুশী হইয়া বামিনী স্নানের ঘরে চলিয়া গেলেন । মমতা প্রায় তাহার সঙ্গে সঙ্গেই ওঠে, আজি কিন্তু সে এখনও গভীর ঘুমে অচেতন । ঘামিনী স্নান সারিয়া আসিয়া চুল আঁচড়াইতেছেন, এমন সময় নিত্য পড়ি-কিমরি গোছের ভাবে ছুটিতে ছুটিতে সেই ঘরে আসিয়া প্রবেশ করিল। যামিনীর স্নানট। তাহার খিনা-সাহায্যেই সম্পন্ন হইয়া গিয়াছে দেখিয়া সে একবার জিব বাহির করিয়া গালে হাত দিল, তবে: ঘামিনীকে কিছু বলিতে ভরসা পাইল না। যামিনী চুলের জট ছাড়াইতে ছাড়াইতে বলিলেন, "খুর্কীকে তুলে দে গিয়ে নিত্য, রোদ উঠে পড়ল ব'লে ।” নিত্য একটু ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার চুলের গোছাটা ভাল ক'রে মুছিয়ে দিয়ে যাব মা ? বড় জল গড়াচ্ছে ।” যামিনী বলিলেন, “দরকার নেই, ও এখুনি ঝরে যাবে।