পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

リ丁ら —ইনি আপনার স্ত্রী ? —আজ্ঞা হ্যা । - - - - —দেখুন অসুখটা সোজা নয়, সারিয়ে দিতে ণ এ-কথা জোর ক’রে কোনো ডাক্তার বলতে পারেন না: তবে ওঁর যন্ত্রণা উপশম করা এখনই দরকার এবং সেই চেষ্টাই আগে করা উচিত । এ-কথা শুনে ললিত অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়ল, জিজ্ঞাসা করূলে—তবে কি ওর সারবার অাশা মোটেই নেই ? —সারবার আশা নেই এ-কথা কোন অবস্থাতেই বলা উচিত নয়। তবে এ ব্যায়রামে বড়-একটা লোকে বঁচে না । যাই হোক আমার চেষ্টার কোনো ক্রটি হবে না। দেখুন ওঁর ধা হবার তা ত হবেই-ভগবান ছাড়া আর কেউ কিছু করতে পারবে না, কিন্তু আপনাদের জন্তই আমার বেশী ভাবনা হচ্ছে । —আমাদের জন্ত ! কেন ? —ব্যায়রামটা অত্যন্ত সংক্রামক—প্লেগ । একটু অসাবধান হলেই আক্রাস্ত হবার সম্ভাবনা । আর জানেনই ত ও-রোগ একবার হ’লে— । সুতরাং খুব সাবধানে থাকবেন । আমার সঙ্গে এক জন লোক দিন, দুটা ওষুধ পাঠিয়ে দিচ্ছি। গুড়াটা তিন ঘণ্টা অন্তর খাওয়াবেন, আর শিশির ওষুধটা এখনই পাঁচ ফোটা খাইয়ে দেবেন। তা হ’লে যন্ত্রণাটা কিছু কমবে এখন । কিন্তু খুব সাবধান বেশী যেন না খাওয়ানো হয় । ওটা এমনি বিষ ষে পাচ ফোটার জায়গায় দশ ফোটা খাওয়ালে আর কিছুতেই রোগীকে বাঁচানো যাবে না । আচ্ছা চললুম তা হ’লে— “ফিটা পকেটে ফেলে ললিতের চাকরকে সঙ্গে ক’রে ডাক্তার বিদায় হলেন । ললিত তাকে দরজা পর্যাস্ত পৌছে দিয়ে এসে লীলার ঘরে ঢুকতে যাচ্ছিল, হঠাৎ তার মনে পড়ে গেল ‘প্লেগ"—ডাক্তারের সাবধান-বাণী । নিজেও সে জনিত প্লেগের মত ভীষণ সংক্রামক ও মারাত্মক ব্যাধি আর নেই। একটা জনম্নভূতপূৰ্ব্ব গুয়ে তার বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল। সে লীলার ঘরে নীচুকে ফিরে এল । ডাক্তার চ’লে যাবার পর বার ঘণ্টার মধ্যে ললিত লীলার ঘরে মাত্র একবার ঢুকেছিল ওষুধ খাওয়াতে । ওষুধট খাওয়াবার পর থেকে লীলার অস্থিরতা একটু \లి)=R Հ85 মেছে, কিন্তু সে কেমন আচ্ছল্পের মত পড়ে আছে 1 অনেক 懿 কর পর তবে একটু হ’ল হয়, তখন একটু পথ্য তাকে কোনও রকমে গেলান যায়। এ সকল কাজ বিই করে— "সে জানে না লীলার কি অসুখ । ললিত মাঝে মাঝে বিকে বাইরে ডাকিয়ে লীলার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করে, কিন্তু নিজে আর কিছুতেই তার ঘরে ঢুকতে ভরসা করে না । শেষরাত্রে যখন একবার ঢুকেছিল স্থ-মিনিটের বেশী সে-স্বরে সে কাটায় নি। তাড়াতাড়ি ওষুধটা খাইয়ে দিয়েই বাইরে এসে সাবান দিয়ে হাত-পা ধুয়ে জামা-কাপড় ছেড়ে ফেলে । বাজার থেকে সংক্রামকতা নিবারণের নানা রকম ওষুধ কিনে এনে ঘরে-দোরে, নিজের কাপড়-জামায় পৰ্য্যাপ্ত পরিমাণে ঢেলেছে তবু তাঁর ভয় ঘোচে নি। যতই বেলা প’ড়ে আসতে লাগল ততই তার আতঙ্ক বেড়ে যেতে লাগল। ক্রমে নিজের প্রোণের ভয় তার অন্তরকে এমন ক’রে অধিকার ক’রে ফেললে যে সেখানে আর লীলার ভাল-মন্দের চিস্তার স্থান রইল না । সন্ধ্যার সময় ঝি এসে খবর দিল লীলার ঘুম ভেঙেছে, সে ললিতকে খুজছে। এ-কথা শুনে ললিত অত্যস্ত অস্থির হয়ে পড়ল। লীলার ঘরে ঢোকবার তার মোটেই ইচ্ছা নেই, কিন্তু সে যে ভয় পেয়েছে এ-কথাও স্ত্রীকে জানতে দিতে চায় না। কি ওজর করে এখন ওর কাছ থেকে দূরে থাকা যায় সে-কথা ভেবে না-পেয়ে বিকে বললে—আচ্ছা, তুমি যাও আমি যাচ্ছি। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা কেটে গেল তবু সে স্ত্রীর ঘরের দিকে গেল না দেখে লীলা তাকে আবার ডেকে পাঠাল । এবার চুপ ক’রে বসে থাকা অসম্ভব । বরাতে যাই থাক এখনই লীলার কাছে না গেলে উপায় নেই । হঠাৎ লীলার ওপর তার অত্যন্ত রাগ হ’ল । ও ত বাচবেই না, তষে কেন মরতে দেরি ক’রে অনর্থক অপরের জীবন সংশয় করে । ও যদি তাড়াতাড়ি মারা যায় তবে ত ওকে এত কষ্ট সহ করতে হয় না, তা ছাড়া রোগ সংক্রামিত হওয়ারও সময় থাকে না । ললিত আর ওকে বাচাঁবার মিখ্যে চেষ্টা করবে না,—তাতে ওর যন্ত্রণার মিয়াদ বাড়ানো ও আর সকলের জীবন বিপন্ন করা ছাড়া অন্ত লাভ কিছুই হবে না। আগু মৃত্যুই এ সমস্ত সমাধানের একমাত্র উপায়।