পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

واسسوا تلا g ষ্ট্রে সম্রাট SNరి83 ধৰ্ম্মস্তির গ্রহণের কথা উঠিল, সেই প্রসঙ্গে দীন বাবু বলিলন, “ আমি যখন ঢাকাতে ওকালতি করি, তখন একদিন বড় মজা হয়েছিল। ঢাকাতে মনোরঞ্জন গাঙ্গুলী নামে একটা লোক পৈতে ফেলে ব্রাহ্ম হয়েছিল । তার পর শুনিলাম, সে ক্রিশচীন হয়েছে। আবার কিছুদিন পরে শুনিতে পাইলাম যে মুসলমান হইয়া সে দীন মহম্মদ নাম লইয়াছে। একবার সে তাহার একটা মামলা করিবার জন্ত আমাকে আসিয়া ধরিল । আমি তfহfর পরিচয় লইয়া বলিলীম—“আমি তোমার মোকদম লইতে পারি, যদি তুমি ইব্রাহিম নামে মোকদ্দম কর। সে কারণ জিজ্ঞাসা করিলে আমি বলিলাম ইগুর ( যিশুর ) ‘ই’ ব্রাহ্মর ‘ব্রা’ হিন্দুর "হি" এবং মহম্মদের “ম”। তোমার নাম দীন মহম্মদ না হইয়া ইব্রাহিম হওয়া উচিত।” এই দীন মহম্মদ গাঙ্গুলী সাহেবও কয়েকবার হিতবাদী আপিসে আসিয়াছিলেন, আমরা তাহাকে “গাজুলী সাহাব” বলিয়া সেলাম করিতাম। তিনি ব্রাহ্মও খ্ৰীষ্টান হইয়াছিলেন, তাহ জানিতাম না, দীন বাবুর মুখেই তাহা শুনিলাম । দীন বাবু “হিতবাদী” অপিসে আপিলে প্রায়ই ঐন্ধপ গল্প করিতেন । তিনি নিজে সুবর্ণবণিক ছিলেন অথচ সুবর্ণবণিকদিগের জাতিগত দুৰ্ব্বলতা লইয়াই হস্ত পরিহাস করিতেন । আমাদের অtfপসে বসিয়া তিনি যে-সকল সরস গল্প করিতেন তাহার অধিকাংশই বিদ্যাবিনোদ মহাশয়ের আদেশে “দীন বাবুর দীন” নামে “হিতবাদী’তে প্রকাশ করিয়াছিলাম । আমাদের সেকালে আর এক জন বিখ্যাত পরিহাসরসিক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে সিদ্ধহস্ত ছিলেন বাবু ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় । ইন্দ্রনাথ বাবুর অধিকাংশ লেখা সেকালের “বঙ্গবাণীতে” প্রকাশিত হইত—কিন্তু তাহার নিজের নামে নহে “পঞ্চানন্দ” এই ছদ্মনামে । ইন্দ্রনাথ বাবু বৰ্দ্ধমানে ওকালতি করিতেন । অামার পিতা বর্ধমানে প্রথমে নৰ্ম্মলি স্কুলের হেডমাষ্টার, পরে সব-ইন্সপেক্টর ও শেষে ডেপুটিইন্সপেক্টর পদে শিক্ষা-বিভাগে প্রায় বিশ বৎসর কার্য্য করিয়াছিলেন। আমাদের বাস ইন্দ্রনাথ বাবুর বাটীর কাছেই ছিল । বাবরি নামের সহিত ইন্দ্রনাথ বাবুর নামসাদৃষ্ঠে অনেক সময় চিঠিপত্রের গোলমাল হইত, বাবার চিঠি র্তাহার বাটীতে এবং তাহার চিঠি বাবার কাছে আসিত ; অনেক সময় হয়ত কেন মঙ্কেল বাবার কাছে আসিয়া হাজির হইত। আমরা যখন বালক, ইন্দ্রনাথ বাবু তখন যৌবনের শেষ সীমায় পদার্পণ করিয়াছিলেন । যৌবন তিনি বেশ স্বপুরুষ ছিলেন । র্তাহার বর্ণও বেশ উজ্জ্বল গেীর ছিল । বৰ্দ্ধমানের নৰ্ম্মল স্কুল উঠিয়া গেলে বাবা স্কুলের সবইন্সপেক্টর হইলেন, আমরা বৰ্দ্ধমান হইতে চন্দননগরে চলিয়া আসিলাম, বাবা বৰ্দ্ধমানে একাকী বাসা করিয়া থাকিলেন । সেটা বোধ হয় ১৮৭৭ কিংবা ১৮৭৮ খ্ৰীষ্টাব্দে । বৰ্দ্ধমান ছাড়িয়া অffসবার পর বোধ হয় চল্লিশ বৎসর পরে ইন্দ্রনাথ বাবুর আর একদিন সাক্ষাৎ পাইয়াছিলাম, “হিতবাদী’ আপিসে । "হিতবাদী” আপিলে তিনি বিদ্যাবিনোদ মহাশয়ের কাছে আসিয়াছিলেন । আমি তাহীকে একেবারেই চিনিতে পারি নাই। সেই বাল্যকালে দৃষ্ট সুন্ধর স্বত্র ইন্দ্রনাথ আর এই বৃদ্ধ ইন্দ্রনাথ ! প্রায় চল্লিশ বৎসর কি পয়ত্রিশ বৎসর পরে দেখা । বলা বাহুল্য যে, তিনিও আমাকে চিনিতে পারেন নাই । কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর বিদ্যাবিনোদ মহাশয় আমাকে বলিলেন, “যোগেন বাবু ইহাকে চেনেন? ইনিই বাবু ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে পঞ্চানন।” এই বলিয়াই র্তাহাকে বলিলেন, “আপনি যেমন বঙ্গবাসীর পঞ্চানন্দ, ইনিও তেমনি আমাদের শ্ৰীবৃদ্ধ।” ইন্দ্রনাথ বাবুর নাম শুনিবামাত্র আমি উঠিয়া গিয় তাহাকে প্রণাম করিয়া পদধূলি গ্রহণ করিলে তিনি সবিস্ময়ে আমার মুথের দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করিব মাত্র আমি বলিলাম, “আমার বাবার নাম ৮ইন্দ্রকুমার চট্টোপাধ্যায়, বৰ্দ্ধমানে আমরা আপনার বাড়ির কাছেই থাকিতম ৷” এই কথা শুনিবfমাত্র তিনি সবিস্ময়ে বলিয়া উঠিলেন, “তুমি সেই যোগিন ? তোমাকে দেখিয়াছি ত ছেলেমানুষ, তখন তোমার বয়স বোধ হয় আটদশ বৎসর। তোমকে চিনিব কি করিয়া ? বেশ বাবা বেশ, তোমাকে দেখে বড়ই আনন্দ হ’ল। তোমার বাবা আমার পরম বন্ধু ছিলেন । যাহা হউক, আমার বড় আনন্দ হ’ল যে “বৃদ্ধের বচন” তোমারই লেখা শুনে। আমরা মনে