পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

crাষাঢ় আণমার দেখা লোক هاسوا تعN এরিতাম যে আমি, অক্ষয় সরকার প্রমুখ কয়েক জন বুড়া বুজিলেই বাংলা-সাহিত্যের রস শুকাইয়া যাইবে । তামীর বৃদ্ধের বচনগুলি পড়ে মনে হ’ত বাংলা-সাহিত্যের রস এত শীঘ্র শুকাইবে না, রসধারা আরও কিছুদিন বাংলা-সাহিত্যকে সরস করিয়া রাখিবে।” এক দিন অক্ষয় সরকার কি ইন্দ্রনাথ বাবু আমাকে যাহা বলিয়াছিলেন, এখন এই বৃদ্ধ বয়সে আমারও ঠিক সেই কথাই বারংবার মনে হয় । শ্ৰীযুক্ত কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্ৰীযুক্ত রাজশেখর বম্ব (‘পরশুরাম’ ) প্রমুখ কয় জন বৃদ্ধের লেখনী বন্ধ হইলে হয়ত বাংলা-সাহিত্য একেবারে রসহীন হইয়া পড়িবে। অনেকটা আশা ছিল উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপধ্যায়ের উপর—কিন্তু উপেন্দ্রনাথও তাহার লেখা বন্ধ করিয়াছেন। আজকাল তাহীর সরস লেখা বড় চোখে পড়ে না । আমাদের সেকালের সাহিত্যের একছত্র সম্রাট বাবু বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়কে আমি অনেকবার দেখিয়ছি, কিন্তু একবার ব্যতীত তাহীর সহিত বাক্যলিপি করিবার সুবিধা হয় নাই । বাল্যকালে র্তাহাকে স্বৰ্গীয় ভূদেব মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের সুচুড়ার বাড়িতে মধ্যে মধ্যে দেখিতে পাইতাম, কিন্তু তখন তাহার কাছে বড় যাইতাম না । তখন র্তাহার গোপ ছিল । তার পর বহুকাল পরে একবার ত{হাকে দেখি জেনারেল এসেমূব্লিজ ইনষ্টিটিউশনে ( এখন স্কটিশ চার্চ কলেজ ) একটা সভাতে সভাপতিরূপে । সেই সভা বোধ হয় ১৮৯৩ কি ৯৪ খ্ৰীষ্টাব্দে চৈতন্য লাইব্রেরীর বাৎসরিক উৎসব উপলক্ষে হইয়াছিল । সেই সভাতে কবিবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় বোধ হয় "ইংরাজ ও গরতবাসী” শীর্ষক একটি প্রবন্ধ পাঠ করিয়াছিলেন। আর একবার বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মৃত্যুর পর ঐ স্থানেই রবীন্দ্র আৰু বিদ্যাসাগর সম্বন্ধে একটি প্রবন্ধ পাঠ করিয়াfছলেন । সবারে স্বৰ্গীয় গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় সভাপতির মাসন গ্রহণ করিয়াছিলেন । বঙ্কিম বাবুকে যখন ভাপতি রূপে দেখিয়াছিলাম, তখন অffম কলিকাতায় হুবাজারে একটা মেসে থাকিতাম। সেই মেসে আমার চারি-পাচ জন সতীর্থও থাকিতেন, তাহীদের মধ্যে কেহ বা মেডিকেল কলেজে পড়িতেন, কেহ বা আইন পড়িতেন । ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় হাওড়ার সুবিখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার yসত্যশরণ মিত্র আমার বাল্যবন্ধু ও সতীর্থ ছিলেন, তাহারও বাটী চন্দননগরে ছিল, তিনি আমাদের মেসেই থাকিতেন। একদিন আমরা কয় জন বন্ধুতে মিলিয়া বঙ্কিম বাবুকে দেখিতে গেলাম। তিনি তখন মেডিকেল কলেজের পূৰ্ব্বদিকে প্রতাপ চাটুয্যের লেনে বাস করিতেন। আমরা পাঁচ-ছয় জন মিলিয়া একদিন সকালবেল ৯টার সময় তাহার বসাতে উপস্থিত হইলাম। দেখিলাম, তিনি অনাবৃত শরীরে বসিয়া একখানা ইংরেজী সংবাদপত্র পাঠ করিতেছেন এবং আলবোলায় ধুমপান করিতেছেন। আমরা গিয়া তাহীকে প্রণাম করিলে তিনি আমাদের আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন । সত্যশরণ বলিল, “আমরা আপনাকে প্রণাম করিতে আসিয়াছি।”