পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগষাচ অরুণ বলিল—চল বাণেশ্বর আমাদের সঙ্গে, কি পাগলামি করছিল, কলেজে ভর্তি হয়ে আসার নাম নেই । বাণেশ্বর হাসিয়া বলিল—নিশ্চিন্ত হও । আসছে সোমবার থেকে যাচ্ছি। পরপ্ত মা এসেছেন এখানে । বড় কান্নাকাটি করছেন । পিতার আদেশ অমান্ত করা যায়, কিন্তু মাতার অশ্রঞ্জল, বুঝতে পারছিল স্তু বাঙালী ছেলের পক্ষে= হীরা সিংকে ফিরিবার পথের নির্দেশ দিয়া বাণেশ্বর दिनांग्न जहेण । সে রাত্রে শুইবার পূৰ্ব্বে প্রতিম পথদুলিপুর্ণ চুলগুলি বহু ক্ষপ ধরিয়া আয়নার সামনে দাড়াইয়া আঁচড়াইল । হাস্ত-কৌতুকপূর্ণ আনন্দ বেগময় আজিকার দিনটি তাহার হৃদয়ের কোন রুদ্ধ গোপন স্বারে অবাত করিয়াছে । আয়নার সম্মুখে দাড়াইয়া তাহার মনে হইল, সে বেশ সুন্দরী । ধীরে সে অরুণের পড়িবার ঘরে গেল । —দাদা, কি পড়ছ, ছাই, চল, ছাদে একটু বেড়াইগে । —বা, এখনও ঘুমেস নি। সারাদিন টো-টো ক’রে #াস্তি নেই। —ঘুম ষে আসছে না । --আচ্ছা, চল ছাদে । —তোমার বেহালাটা নাও । —গান গাইবি ? —না বাপু, এখন গাইতে পারব না । তুমি বাজাবে, ठोमि छमद । —কি আবদার ? শরৎ-নিশীথের নিস্তব্ধ স্বপ্নময় শুভ্রতীয়, নক্ষত্ৰলোকের অসীমতায়, কোন কণ্ঠ-সঙ্গীত নয় ; এ অনিৰ্ব্বচনীয় রাত্রে বেহালার স্বপূর-প্রসারী স্থর-তরঙ্গে ব্যাকুল অন্তরকে অজানা রহস্তময় পথে তাসাইরা দেওয়া । ( >8 ) কিশোরীর চিত্তকে রূপকথার রাজকন্তার ঘুমন্ত রাজপুরীর সহিত তুলনা করা যাইতে পারে। এ যেন জীবনায়ন లివిని অপরূপ রাজপ্রাসাদ ; তাহার কক্ষে কক্ষে কত মণি-মাণিক্য, বিবিধ বর্ণের রত্ব, কত বিচিত্ৰ চিত্র, কার-মূৰ্ত্তি ; কত অপূৰ্ব্ব পশুপক্ষী, হসজ্জিত সভাসদ, সালঙ্কত দাসদাসী, স্বকণ্ঠ গায়কবৃন্দ ; তাছার দ্বারে দ্বারে বৰ্ম্মপরিহিত সৈনিকগণ মুক্ত তরবারি হস্তে । কিন্তু সকলেই স্বযুপ্ত। প্রাসাদের গর্ভগৃহে মণিময় মন্দিরে হেমপ্রদীপ অন্ধকারে রহিয়াছে । রাজপুত্ৰ আসিয়া যখন সেই প্রেমের প্রদীপ জালাইবে, জাগিয়া উঠিবে রাজকন্তl, জাগিয়া উঠিবে রাজপুরী, চারিদিকে আনন্দ-কোলাহল, জীবনকল্লেীলধ্বনি জাগিবে। তরুণ যুবকের অস্তুর-লোক এই অপরূপ রাজপ্রাসাদ নয়। এ যেন পুথিবীর প্রাগৈতিহাসিক যুগের গুমিল ছায়াঘন অরণ্য। এখনও চারিদিকে জল ও স্থলের বিভাগ স্থির হয় নাই। ক্ষণে ক্ষণে ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাতে কোথাও পৰ্ব্বত ভাঙিয়া সমুদ্রের স্বষ্টি হয়, কোথাও সমুদ্রতল হইতে পৰ্ব্বতশৃঙ্গ উচ্ছসিত হইয়া উঠে। অস্তর্নিহিত তপ্ত বাপের আলোড়নে কত অচিস্তানীয় তাণ্ডবনৃত্য ! চারিদিকে অবাস্তব ছায়া, অলীক মায়া। অদ্ভুত বৃহদাকার জন্তুগুলি উদাসীন ঘুরিয়া বেড়ায়, তাহারা কে পক্ষী হইবে, কে স্থলচর অথবা সামুদ্রিক হইবে তাহ নিৰ্দ্ধারিত হইতেছে না । অসম্ভব আশার মত বুহৎ পক্ষ বিস্তার করিয়া সকল জন্তুই আকাশে উড়িতে চায়। . এই ছায়াঘন পথহীন অরণ্যে যদি একটি মন্দিরে একটি প্রেমের প্রদীপ জ্বলিত, তাহা হইলে হয়ত মঙ্গল হইত। কিন্তু এখানে নানা শক্তির সংগ্রাম, নানা হৃদয়াবেগের সংঘাত, নানা ভাবুকতার অসম্ভব জটিল জালরচনা । তরুণ যুবক ত কেবলমাত্র প্রেমিক নয়, সে যে বীর যোদ্ধা । সে বাহির হইয়াছে সত্যের সন্ধানে, সে করিতেছে শক্তির সাধনা, স্বাধীনতার জয়পতাকার সে রক্ষক। পুরাতন পৃথিবী ভাঙিয়া সে গড়িবে নুতন পৃথিবী, নব সভ্যতা । কেবলমাত্র প্রেম নয়, আরও জ্ঞান, আরও শক্তি, আরও যশ, আরও মানবকল্যাণ চাই, তবেই ত তাহার নারী-প্রেম সার্থক হইবে । (>e ) পূজার ছুটি আরম্ভ হইতেই অক্ষণ ছুটিতে পড়িবার