পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোমার অম্বরতলে সুন্দর ভুবনে এত অল্প লয়ে দিন কাটাব কেমনে । অনস্ত সমুদ্র মাঝে কি অঁাকড়ি ধরি আনন্দে ভাসায়ে দেব ক্ষুদ্র এই তরী ? ফুটস্ত নিকুঞ্জ হ’তে নব মালতীর সুগন্ধ বহিয়া আনে সুমন্দ সমীর— এতটুকু হাসি, আর এতটুকু আশা, এতটুকু ছায়াময় মুহ ভালবাসা এই লয়ে গৃহকোণে অলস মায়ায় সমস্ত জীবনখানি মেলেছি ছায়ায় । অবিচ্ছিন্ন শাস্তি নিয়ে এ সঙ্কীর্ণ স্বখে দীর্ঘ দিন কাটে যদি অনুদ্বিগ্ন বুকে, তবু কেন রুদ্ধ কক্ষে মাঝে মাঝে আসে মুক্ত অন্তরীক্ষ দিয়ে বাতাসে বাতাসে অজস্র সহস্র প্রশ্ন, লুপ্ত হয় দিশ৷ কম্পমান বক্ষে জাগে অনস্ত পিপাসা ? এই মুকুলের গন্ধ বকুলের মালা— অবরুদ্ধ কক্ষতল স্নিগ্ধ ছায়া ঢালা শুধু এই নিয়ে বসে এতটুকু ঘরে অফুরন্ত প্রাণখানি কিছুতে ন ধরে । অনন্ত ঐশ্বধ্য আছে পূর্ণ বিশ্বময় এত ক্ষুদ্র তার মাঝে আমার সঞ্চয় ! উদ্বেলিত চিত্ত দিয়ে এতটুকু চাওয়া অফুরন্ত বিত্ত হ’তে এতটুকু পাওয়া । অতৃপ্ত ঐমৈত্রেয়ী দেবী এ নিয়ে মেটে না ক্ষুধা ! যেখানে বিশ্বের ঐশ্বৰ্য্য লুকান আছে, যেখানে নিঃশ্বের নিঃশেষে ভরিবে পাত্র, পূর্ণ হবে প্রাণ আমি কি পাব না কভু তাহার সন্ধান ? শুধু ফাঙ্কনের মুর মধুগন্ধ-মিশা, শুধু পূর্ণিমার হাসি শুরু-চৈত্রনিশা, শুধু এই নহে বন্ধু, শুধু নহে মথ, আমার হৃদয়ে আছে বিকাশ-উন্মুখ আশার মায়ায় ঢাকা ক্ষুদ্র এক কুঁড়ি উন্মুক্ত অম্বরতলে অস্তলোক ফুড়ি চাহে নিত্য প্রকাশিতে সৰ্ব্ব দুঃখে সুখে আঁধারে আলোতে কছু ঝঞ্চার সম্মুখে । শুধু লাভ নহে বন্ধু, শুধু ক্ষতি নয়, সৰ্ব্ব স্পর্শ পেতে হবে সমস্ত সঞ্চয় গাঢ় অনুভূতি দিয়ে মত্ত চিত্ত-স্রোতে অজস্র সহস্ররূপে এ নিখিল হ’তে ভরে নেব নাকি বুক ? বিকশিয়া সব ক্ষুদ্র প্রাণে রুদ্ধ আছে যে মহা গৌরব । অtপনার অস্তরের ঐশ্বৰ্য্যের সাথে সমস্ত নিখিল কবে পারিব মিলাতে ? বসুধার পাএ হ’তে নিত্য নব দান পূর্ণ ক’রে দেবে নাকি এ অতৃপ্ত প্ৰাণ ? এতটুকু চাওয়া পাওয়া—এ নয় এ নয় । বিশ্বের ভাওরে রবে আমার সঞ্চ ।