পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ বা ঈষৎ কৃষ্ণাভ দ্রাবিড়ী ও শ্বেতাভ ‘আর্য জাতির টানাপড়েনে বাঙালী জাতি গঠিত এবং স্থলবিশেষে পীতাভ মোঙ্গোলীয়ান রঙের ছিটাফোটায় ঈষৎ রঞ্জিত হইয়াছে। বস্তুতঃ বাঙ্গালীর সংস্কৃতিগত সম্বন্ধ দ্রাবিড়ী ও মুণ্ড বা কোল জাতির সহিত কোনও অংশে কম নহে । জাতিতত্ত্ব ছাড়িয়া সমাজতত্ত্ব ও সভ্যতার ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখিতে পাই যে সভ্যতা সম্বন্ধেও বাঙালীর ঋণ কেবল আর্য্যজাতির নিকটে নহে, মুণ্ডা বা কোল এবং দ্রাবিড় উভয়ের নিকটেই অল্পবিস্তর আছে। তুলনামূলক ভাষাতত্বের এবং স্বতত্বের গবেষণা দ্বারা তাহা সম্যক উপলব্ধি হয়। সকলেই অবগত আছেন যে সভ্যতার প্রাচীনত্ব হিসাবে বাঙালী ভারতের পুরাকালের প্রধান জাতিদের মধ্যে বয়োকনিষ্ঠ। মহাভারতে বাসুদেব, চন্দ্রসেন প্রভৃতি বঙ্গদেশের রাজগণের উল্লেখ থাকিলেও খ্ৰীষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে বাঙালী প্রজাপুঞ্জ কর্তৃক গোপালদেবকে প্রথম রজিীরুপে নিৰ্ব্বাচন দ্বারা পালরাজবংশ স্থাপনার পূৰ্ব্বে বাংলা দেশে থাটি বাঙালীর সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠার কোনও নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। ষষ্ঠ শতাব্দীর যে বঙ্গরাজ আদিশূরের উল্লেখ আছে র্তাহারও • অস্তিত্ব ঐতিহাসিকের প্রামাণিক বলিয়া গ্রহণ করেন না। কেবল, খ্ৰীষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে হঠাৎ শশাঙ্কের আকস্মিক আবির্ভাবে গৌড়রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়, ও তাহার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তাহার রাজ্যও বিলুপ্ত হয় ইহার যথেষ্ট প্রমাণ আছে । কিন্তু শশাঙ্ক বাঙালী ছিলেন কি না, ইহা নিঃসন্দেহে বলা যায় না। তার পর অষ্টম শতাব্দীতে বাংলা দেশের প্রজাগণ গুর্জর, রাষ্ট্রকুট প্রভৃতি জাতির আক্রমণ হইতে দেশ রক্ষার জন্ত ও দেশের অরাজকতা নিবারণ করিবার জন্ত যে পালবংশের আদিপুরুষ গোপালদেবকে বঙ্গসম্রাট মনোনীত করেন, তিনিও খাটি বাঙালী ছিলেন কি না তাহাও অনিশ্চিত। তবে এই রাজ-নিৰ্ব্বাচন বাঙালীদের প্রবল প্রজশক্তির পরিচয়, এবং এই প্রজাশক্তিই বাঙালী জাতির একটি বৈশিষ্ট্য। তৎপরে একাদশ শতাব্দীতে যে সেন বংশীয় ब्रॉलॉरणब्र पञांभिशृङ्गष जांमरछ cगन श्रांजय६izक भशं८५ প্রবাসী ৰাঙালীর বর্তমান সমস্যা ও ভাহীর সমাধান বিতাড়িত করিয়া বঙ্গ অধিকার করেন, তিনি “কর্ণাটক্ষত্ৰিয়” বলিয়া পরিচিত এবং সম্ভবতঃ চালুক্যদের বঙ্গদেশে অভিযান উপলক্ষে আগত কর্ণাট-দেশীয় যে কয়েকটি সামন্ত পরিবার বঙ্গে বসবাস করেন ও পরে খণ্ডরাজ্য স্থাপন করেন র্তাহীদেরই একটি বংশ হইতে সেনবংশ উদ্ভূত। অপর পক্ষে কলিঙ্গ, অন্ধ, চের বা কেরল, চোল, পাণ্ডা, সত্যপুত্র প্রভৃতি দ্রাবিড়ী রাজবংশগুরি বহু পুৰ্ব্ব হইতেই প্রবলপ্রতাপান্বিত ছিল। খ্ৰীষ্ট-পূৰ্ব্ব প্রথম শতাব্দীতে অন্ধ রাজ স্বশৰ্ম্ম মগধের কথবংশীয় শেষ সম্রাটকে যুদ্ধে পরাস্ত ও নিহত করেন। ঐ শতাব্দীতে অন্ধ রাজ সাতকণী শক, যবন ও পল্লব প্রভৃতি জাতিকে যুদ্ধে পরাভূত করেন, এইরূপ ঘোষণা করিয়াছিলেন। খ্ৰীষ্টপুৰ্ব্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে কলিঙ্গরাজ খরবেল একাধিক বার মগধদেশ অfক্রমণ করেন এবং মগধ-সাম্রাজ্য বিধ্বস্ত করিয়াছিলেন। ঐ শতাব্দীতে দ্রাবিড়ী ভারশিব রাজবংশ সবিশেষ প্রতাপশালী হন, এবং জনৈক খ্যাতনামা ঐতিহাসিকের ( কাশীপ্রসাদ জয়সয়ালের ) মতে সমগ্র আর্য্যাবর্ত অধিকার করেন । পঞ্চম খ্ৰীষ্টাব্দে পল্লব ও চালুক্যের রাজশক্তিতে প্রবল হইয়া উঠেন। এইরূপে দেখা যায় যে বাঙালী সাম্রাজ্যিক সভ্যতায় ভারতের অন্তান্ত প্রধান জাতিদের অপেক্ষ পশ্চাৎপদ ছিলেন । আবার, ভাষা ও সাহিত্যের দিক দিয়াও দেখা যায় যে এক সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে বর্তমান বাংলা ভাষার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ছিল না। অপর পক্ষে, খ্ৰীষ্ট-পূৰ্ব্বাদ হইতেই দ্রাবিড়ী তামিল ভাষায় সাহিত্যের অনুশীলন হইত। খ্ৰীষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে তামিল সাহিত্য উন্নতির এরূপ উচ্চশিখরে আরূঢ় ছিল যে এমন কি তাহদের “সঙ্গম” বা কবিসত্তৰ কর্তৃক উচ্চ অঙ্গের রচনা বলিয়া অনুমোদিত না হইলে কোনও কবিতা প্রকাশিত হইতে পারিত না । বাঙালীদের পূৰ্ব্বেই অন্ধ, পল্লব, চালুক্য প্রভৃতি দ্রাবিড় জাতি স্থপতিবিদ্যা ও ভাস্কর্য্যেরও উৎকর্ষসাধন করিয়াছিল । ভারতের বাহিরে উপনিবেশ স্থাপন ও হিন্দু সভ্যতা বিস্তার কার্য্যে যদিও বাঙালী জাতির কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়, তবু সেই ক্ষেত্রেও দ্রাবিড়ীর বাঙালীর