পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰেণৰণ - পূব যদি কোন বহিতে পাওয়া যায়, তাহ হইলে বলা চলে, যে, বহিখানি ঐ আবিষ্কারের পরে লেখা, পূর্বে নহে। স্মৃতিসভায় অপ্রাসঙ্গিক তুলনা আলবাট হলে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস মহাশয়ের যে স্মৃতিসভা হইয়াছিল, তাহাতে এক জন বক্তা, রাসবিহারী ঘোষ ষে চিত্তরঞ্জন দাসের চেয়ে বড় আইনজ্ঞ ছিলেন, ইহার প্রেমাণস্বরূপ গোখলের এই মৰ্ম্মের একটি উক্তির পুনরাবৃত্তি করেন, যে, বাংলা ছড়িা ভারতবর্যের অন্ত কোন প্রদেশে রবীন্দ্রনাথের মত কবি, প্রফুল্লচন্দ্রের মত বৈজ্ঞানিক এবং রাসবিহারীর মত আইনজ্ঞ নাই । কিন্তু রাসবিহারীর সহিত চিত্তরঞ্জনের তুলনা করিবার কি প্রয়োজন স্মৃতিসভাতে ছিল ? ঐ বক্তাই আরও বলেন, বাঙালীদের হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথের অপেক্ষা fচত্তরঞ্জন অধিকতর সন্মানের স্থান পাইয়াছেন, কারণ চিত্তরঞ্জন স্বরাজ লাভের জন্ত আত্মোৎসর্গ করিয়াছিলেন, রবীন্দ্রনাথ করেন নাই। এই তুলনারই বা কি প্রয়োজন ছিল ? এরূপ তুলনার স্বারা, যিনি যাহা তার চেয়ে ছোটও হন না, বডও হন না। স্মৃতিসভা এরূপ আপেক্ষিক আলোচনার স্থান নহে । স্থান-কালের কথা বাদ দিয়াও এরূপ আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া অনাবশ্যক মনে করি । শ্রাদ্ধবাসরে ও স্মৃতিসভায় নৃত্য ও কীৰ্ত্তন সম্প্রতি কোন কোন শ্রাদ্ধবাসরে ও স্মৃতিসভায় মেয়েদের নৃত্য হইয়াছিল, কাগজে দেখিতে পাই । মেয়েদের সব রকম নৃত্যের বিরোধী আমরা নহি, মুরুচিসঙ্গত ও শোভন নৃত্যে আমরা দোষ দেখি না । কিন্তু পরলোকগত কাহারও শ্রাদ্ধবাসরে বা স্মৃতিসভায় নৃত্য অশোভন এবং স্থানকালের অনুপযোগী । এরূপ উপলক্ষ্যে কীৰ্ত্তন অবগুই হইতে পারে। কিন্তু তাহা এরূপ হওয়া উচিত নয় যাহার সহজ অর্থ আদিরসাত্মক। তাহার নিগুঢ় অর্থ আধ্যাত্মিক, কেহ কেহ ইহা বলিতে পারেন বটে ; কিন্তু এই নিগূঢ় অর্থ সাধারণ শ্রোতার জানে না, বুঝে না, এবং তাহাদিগকে তাহা বুঝাইবার চেষ্টাও কীৰ্ত্তনকালে কেহ করেন না । সুতরাং এরূপ কীৰ্ত্তন শ্রাদ্ধবাসরের ও স্থতিসভার কেবল যে অনুপযোগী ও বিবিধ প্রসঙ্গ—জার্মেনীতে রৰীতদ্রনাথের গ্রস্থাবলী Φύν 25 অশোভন তাহা নহে, ইহা যে-কোন স্থানে ও কালে সৰ্ব্বসাধারণের অনুপযোগী। ইহা কেবল আধুনিক মত নহে । মনস্বী ভক্ত বৈষ্ণবের মন্তব্যও ইহার সমর্থনার্থ উদ্ধৃত করিতে পরিা যায়। একটি উদ্ধৃত করিতেছি । শ্ৰীধনপতি স্থরি শ্ৰীমদভাগবতের গুঢ়াখদীপিক নামক টীকা লিখিতে গিয়া বলিয়াছেন – “পরমহংসশিরোমণি শ্ৰীশুকদেব কর্তৃক বর্ণিত এই রাসক্রীড়া পরমহংসগণই আদরে শ্রবণ করিবেন । ইহার তাৎপৰ্য্য এই যে সৰ্ব্বতোভাৰে শ্ৰীকৃষ্ণতত্ত্ব-জ্ঞানে অজ্ঞ অপরূহাদয় জনের পক্ষে এই রাসলীলা প্রবণ নিষিদ্ধ, যেহেতু এই রাসলীলোৎসব সমগ্ৰ শ্ৰীমদ্ভাগবতের সারভুত । ইহা অতিশয় গৃঢ় হইতেও গুঢ়তম স্বতরাং প্রাকৃত লালসাতুর অপজনের পক্ষে এই স্ত্রীরাসলীলা শ্রবণ নিষিদ্ধ । কারণ ইহা অপ্রাকৃত প্রেমময়ী লীলা হইলেও ইহাতে প্রাকৃত বসের সাদৃঙ্গ রহিয়াছে বলিয়া সহসী অসৎভাবের উদয় হইতে পারে "—কাশিমবাজার সংস্করণ, ১৬৩১ পৃষ্ঠ: ' রাসলীলা সম্বন্ধে কথিত এই মত আদিরসাত্মক অনেক পদ ও কীৰ্ত্তনেও প্রবোজ্য । জামেনীতে রবীন্দ্রনাথের গ্রন্থাবলী মন্দ্রিীজের সাপ্তাহিক দি গার্ডিয়ানের ( The Guar dianএর ) ২৭শে জুনের সংখ্যায় এই খবরটি বাহির হইয়াছে : “Tagore's books in the German language brought in more royalties than in any other, and these royalties were employed by the poet for his International ('niversity at Santiniketan. But his pacific philosophy is taboo to all good Nazis, and as a result his royalties have dwindled and Santiniketan is a sufferer thereby.” “রবীন্দ্রনাথ উহার জার্মান ভাষায় অনুদিত বহিগুলির বিক্ৰী হইতে র্তাহার অন্ত ভাষায় অনূদিত বহিসকল অপেক্ষ মুনফা বেশী পাইতেন এবং তিনি তাহ বিশ্বভারতীর জঙ্ক ব্যয় করিতেন। কিন্তু উtহার শক্তিপ্রবর্তৃক দার্শনিক মত সমুদয় খাটি নাৎসীর পক্ষে নিষিদ্ধ বস্তু ; সেই জন্ত জ্বার্মেনীতে উাহার বহিয় কাটতি কমিয়া যাওয়ায় মুনফাও কমিয়াছে, সুতরাং শাস্তিনিকেতন ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে।” আমরা জানিতাম,জার্মেনীতে র্তাহার বহিগুলির অনুবাদ খুব বেশী বিক্ৰী হইত এবং তাঁহাতে র্তাহার প্রাপ্য অংশ বহু লক্ষ টাকৃণ দাড়াইয়াছিল। কিন্তু জামান মুদ্র মার্কের বিনিময়মুল্য অত্যন্ত কমিয়া যাওয়ায় ঐ প্রভূত মুনফ অকিঞ্চিৎকর হইয়া পড়ে ; নতুবা আজ বিশ্বভারতীর কোনই আর্থিক অসচ্ছলতা থাকিত না । আমরা যাহা