পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ আকাজল ; বৈগুধগাঁ গুজরাটির ব্যবসায়রুদ্ধি ; বিপ্রধক্ষ্মী বাঙালীর কল্পনাশক্তি, আদর্শপ্রবণতা, আধ্যাত্মিকতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতাপ্রিয়তা, পল্লীসভ্যতা ও স্বভাবস্ত্রীতি । জাতীয় সংস্কৃতির এই সমস্ত মৌলিক উপাদানের ও আদর্শের প্রতিচ্ছবি প্রত্যেক জাতির সমগ্র সভ্যতাকে রঞ্জিত করে। zfegą zrējvētą (material culturos?) estēH Ħtąfgeses: ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পারিপার্থিক অবস্থার বৈশিষ্ট্য দ্বারা অনেকটা নিয়মিত হয় । নৃতত্বের আলোচনা দ্বারা বিভিন্ন প্রদেশের পরস্পরের মধ্যে যে সাংস্কৃতিক যোগ এবং জাতিগত সম্বন্ধের পরিচয় পাওয়া যায় তাহা প্রদেশিক সঙ্কীর্ণতার ও ঔদ্ধত্যের প্রতিষেধক । এইরূপ তুলনামূলক আলোচনা দ্বারা এক পক্ষে বিভিন্ন প্রদেশের সভ্যতার সাধারণ ভিত্তির পরিচয়ে, অপর পক্ষে বিভিন্ন প্রদেশের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ও বিষয়-বিশেষে উৎকর্ষের পরিচয়ে, ভারতের বিভিন্ন জাতি পরস্পর লাভবান হইবে ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার উদ্রেক হইবে এবং জাত্যভিমানপ্রস্থত ঔদ্ধত্য দূরীভূত হইবে। জাতির শ্রেষ্ঠত্ব বা হীনত্ব সম্বন্ধে সাধারণ সংস্কার ভ্ৰমাত্মক । আভিজাত্য অপেক্ষ কৃষ্টিই শ্রেয়ঃ । বাঙালীর দৃষ্টি চিরকালই কৃষ্টির উপর। গুণগ্রাহিতা, সমীকরণশীলতা ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতাপ্রিয়তা বাঙালীর সাৰ্ব্বজনীন উদার ভাবের ভিত্তি। এই বৈশিষ্ট্য দ্বারাই বাঙালী ভারতের অন্তান্ত প্রদেশের অনুদারতা ও প্রাদেশিকতাসম্ভূত ঈর্ষা হিংসা প্রভৃতি দোষসমূহ দূৰীকরণে সমর্থ। ভারতের জাতীয়তা গঠনে বাঙালীর দায়িত্ব সৰ্ব্বাপেক্ষা বেশী, কারণ জাতীয়তার মুল উপাদান বাঙাণী-চরিত্রে বর্তমুনি । এখন যদি আমাদের মন অপর প্রদেশবাসিগণের দোষানুসন্ধানে ব্যাপৃত না থাকিয়া পরস্পরের কৃষ্টির ও ভাবধারার আলোচনা এবং এ-সম্বন্ধে শিক্ষাবিস্তারকার্যে নিযুক্ত হয় তাহা হইলে বাঙালীর প্রভাব প্রবাসেও ক্ষুণ্ণ না হইয়া আরওঁ মহীয়ান হইবে। আমাদের অর্থনৈতিক আত্মরক্ষার দিকে সজাগ ও সচেষ্ট থাকিয়ীও ইহা সম্ভবপর হইতে পারে। বাঙালী চরিত্রবলে বলীয়ান হইয়া জাতীয়তার উপাদানসমুহের যথাযথ গবেষণাম্বারা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশবাণীকে এক বিরাট জাতিতে পরিণত করিতে প্রবাসী বাঙালীর বর্তমান সমস্যা ও তাহার সমাধান 8气 পরিবে;–আমার স্তায় নৃতত্ত্বসেবীরা এই আকাঙ্ক্ষণ ও প্রত্যাশা অস্তরে পোষণ করেন । নৃতত্ত্ব-জ্ঞান হইতেই পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা আসিবে, শ্রদ্ধা হইতেই প্রেম আসিবে ও প্রেম হইতেই সেবা আসিবে। তখন অস্তিপ্রাদেশিক হিংসা-বিদ্বেষ দূর হইয়া সাৰ্ব্বজনীন ভারত-প্রেমে প্রবাসী ও স্থানীয় প্রাক্তন সমাজের মধে ব্যবধান অন্তৰ্হিত হইবে। কবি-সাৰ্ব্বভৌম রবীন্দ্রনাথ তাহার “প্রবাসী” শীর্ষক কবিতায় গাহিয়াছেন – “সব ঠাই মোর ঘর আছে, আমি সেই স্বর মরি খুজিয়া, দেশে দেশে মোর দেশ আছে, আমি সেই দেশ লৰ যুধিয়া ; পরবাসী আমি যে দুয়ারে চাই— তারি মাঝে মোর আছে যেন ঠাই, কোথা দিয়া সেখ। প্রবেশিতে পাই সন্ধান লব বুৰিয়া । ঘরে ঘরে আছে পরমান্ধীয়, তাকে ফিরি আমি খুজিয়া । প্রবাসীর ৰেশে কেন ফিরি হয়, চিরজনমের ভিটাতে ; আপনার যার অাছে চারিভিঠে, পারিনি তাদের আপন করিতে । यनि क्रिनि, यनि छानिदां८ब्र ना३, ধুলারেও মানি আপন । ছোটেবড়োহীন সবার মাৰীরে করি চিত্তের স্থাপন।” সংস্কৃতিতে গরিষ্ঠ প্রবাসী বাঙালীর স্থানীয় অধিবাসীদের প্রতি দায়িত্ব—তাহাদের অন্তরে প্রবেশের সন্ধান বুঝিয়া তাহাদিগকে জানিয়া চিনিয়া আপন করিয়া লওয়া । বর্তমানে স্থানীয় অধিবাসীদিগের মধ্যে প্রবাসী বাঙালীর প্রতি ঈর্ষার ভাব দৃষ্ট হইলেও আমাদের পূর্বতন মহাপুরুষগণের পথ অনুসরণ করাই জাতির ও দেশের কল্যাণকর হইবে । "মারবে বলে কলসীর কাণ, তাই বলে কি প্রেম দিব না ?” —ইহা বাঙালী মহাপুরুষেরই প্রাণের উক্তি। প্রেমভক্তির দিক ছাড়িয়া জ্ঞানের দিক দিয়া দেখিতে গেলে, এই জানিবার, চিনিবার ও আপন করিবার,—অন্ত জাতির অস্তরে প্রবেশ করিবার,—একটি প্রশস্ত পথ, নৃতত্বের অনুশীলন । নৃতত্ত্ব এই শিক্ষা দেয় যে, বাঙালী কেবল বাঙালীই নয়, ভারতীয় । সমগ্র ভারতই আমাদের "ভিটা” । নিজস্ব সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য ও বাঙালীর জাতীয় গৌরব সম্পূর্ণ