পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাদ্র আগমণর দেখা লেণক ৬২৩ আলাপ ছিল । তাহার নাম ছিল তারিণীচরণ বঙ্গ্যোপাধ্যায়। তিনি হুগলীতে ওকালতী করিতেন । উপাধ্যায় মহাশয় বলিলেন যে, তারিণী বাবু তাহার ছোট কাৰণ, পিতার কনিষ্ঠ সহোদর। কলিকাতার রেভারেও কালীচরণ বঙ্গোপাধ্যায়ও উপাধ্যায় মহাশয়ের পিতার সহোদর ছিলেন । উপাধ্যায় মহাশয়ের পূৰ্ব্বনাম ভবানীচরণ বঙ্গ্যোপাধ্যায় । কালীচরণ ও ভবানীচরণ ব্যতীত ঠাহীদের বাটীর আর কেহ খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন নাই। উপাধ্যায় মহাশয় বোলপুর হইতে আসিয়া কলিকাতায় যখন “সন্ধ্যা” নামক দৈনিক সংবাদপত্র বাহির করেন, তখন তাহীর সহিত আমার সৰ্ব্বদাই দেখা হইত। তাহার বিলtভযাত্রীর পাচ-ছয় দিন পূৰ্ব্বে আমি তাঙ্গকে চন্দননগরে আমাদের বাটতে লইয়। গিয়াছিলাম । সেদিন বৈকালে চন্দননগর পুস্তকাগারে গ্ৰহবি বক্তৃতা করিবার কথা ছিল । তিনি সকালে আমাদের বাটীতে আহার করিয়া অপরাহ্ল কালে সভাতে বকৃত করেন । বাটীর মধ্যে আহারের স্থান হইলে আমি যখন বহির্বাটীতে র্তাহীকে ডাকিতে গেলাম, তখন তিনি বলিলেন, “আমাকে এইখানে বাহিরে ভাত দিলে ভাল হইত। সন্ন্যাসীর গুহুস্থের অস্তঃপুরে গমন করা নিষিদ্ধ ।” আমি তাহার সে আপত্তি গ্রাহ করিলাম না, তাহাকে বাটীর মধ্যে লইয়া গেলে তিনি মাকে প্রণাম গুরিয়া বলিলেন, “মা, আমি আপনার বড় ছেলে ।” ম৷ বলিলেন, “হ্য বাবা, তুমি সত্যিই আমার বড় ছেলে । তোমাকে দেখে আমার দেবিনের মুখ মনে পড়ে।” দেবেন্দ্র নামে আমার এক অগ্রজ সহোদর ছিলেন, ষোল বৎসর বয়সে ঠহার মৃত্যু হয় । মা বলিলেন, “উপাধ্যায় মহাশয়ের মুখ অনেকটা তোমার দাদার মত।” অপরাহ্ল কালে তাহীকে সঙ্গে করিয়া পুস্তকাগারে লইয়া গেলাম। বক্তৃতার বিষয় ছিল “বৰ্ণাশ্রম ধৰ্ম্ম” । তিনি বাঙ্গালাতে বক্তৃতা করিবার ইচ্ছা করিয়াfছলেন, কিন্তু সমবেত সকলের অনুরোধে ইংরেজীতেই বক্তৃতা করেন । আমার মনে হয় “সন্ধ্যা” কাগজ তিনি বিলাত হইতে আসিয়া বাহির করিয়াছিলেন । "সন্ধ্য" গ্রাম্য ভাষাতে লিখিত হইত, সাধু ভাষার সংশ্ৰব भाञ्च झिल न । “श्ङिबांनौ°tठ विलक्ष वृjांकञ्चनं-गन्ग्रड সাধুভাষা ব্যবহৃত হইত। সেই জন্ত কাব্যবিশারদ মহাশয় “সন্ধ্যা”র ভাষাকে মেছুনীর ভাষা বলিতেন । “সন্ধ্যা”তে যে-সকল লেখা বাহির হইত, তাহ আজিকালকার দিনে একেবারে অচল । ভাষা হিসাবে নহে, রাজবিদ্বেষ হিসাবে । ঐ সকল প্রবন্ধে গভর্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে যেরূপ স্বতীব্র মন্তব্য প্রকাশিত হইত, এখন তাহার শত ভাগের এক ভাগ কোন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হইলে সংযাদপত্রের সম্পাদক, প্রকাশক, মুদ্রাকর এবং স্বত্বাধিকারীর কারাদণ্ড ও ছাপাখানা বাজেয়াপ্ত অবধারিত । “সন্ধ্য৷” প্রতিদিন মধ্যাহ্নকালে প্রকাশিত হইত ঃ উহা গরম গরম লেখার জন্ত এক শ্রেণী পাঠকের বড়ই প্রিয় ছিল । রাজবিদ্বেঘের অপরাধ হইতে “সন্ধ্যা” নিস্কৃতি পায় নাই । কয়েকটা লেখার জন্ত “সন্ধ্যা’র বিরুদ্ধে রাজবিদ্বেষের অভিযোগ হওয়াতে উপাধ্যায় মহাশয়কে গ্রেপ্তার করা হয় । র্তাহার নামে ওয়ারেন্ট বাহির হইলে তিনি পুলিস আপিলে গিয়া আত্মসমর্পণ করেন । ঐ আত্মসমর্পণের দিন তিনি চেলির কাপড় ও টোপর পরিয়া গিয়াছিলেন । পুলিসআদালতে মামল চলিবার সময় তিনি বলিয়াছিলেন— “আমাকে আটক করিয়া রাখে, এমন জেল এখনও তৈয়ারী হয় নাই ।” তাহার এই স্পদ্ধা সতো পরিণত হইয়াছিল, মামলা শেষ হইবার পূর্বেই তাহার মৃত্যু হইয়াছিল। পুৰ্ব্বেই বলিয়াছি, কলিকাতার বেভারেও কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের পিতৃব্য ছিলেন । তিনি খ্ৰীষ্টান ছিলেন, কিন্তু সাহেব ছিলেন না। বাটতে কাপড় পৱিতেন, সভা-সমিতিতে যাইবার সময় চোগা, চাঁপকনি ও প্যাণ্ট লান পরিধান করিতেন । শুনিয়াছি তাহার বাটীর মহিলার নাকি আলত পরিতেন এবং অন্তঃপুরবাসিনী ছিলেন। কালীচরণ বাধু সিমলাতে বাস করিতেন । আমি তাহার সিমলার বাসাতে তিন-চারি দিন গিয়াছিলাম, কিন্তু একদিনও তাহার বাটীর কোন স্ত্রীলোককে দেখিতে পাই নাই । চন্দননগরে একটা সভাতে বক্তৃতা করিবার জন্ত র্তাহীকে বলিতে র্তfহার আবাসে গিয়ffছলাম। এই উপলক্ষেই আমি কয়েক বীর তাহার নিকট গিয়াছিল!ম । সভার দিন বেলা দুইটা কি তিনটার সময় আমাদের বাড়িতে র্তাহাকে লইয়া যাই। বাটতে আমার পিতার