পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԾՅՆt দ্বিতীয় শ্রেণী”র টিকিট কিনেছি। এই শ্রেণীতে দু-শোর উপরে যাত্রী যাচ্ছে । বোম্বাই থেকে জাহাজ ছাড়বার দিন—বুধবার বেলা দশট থেকে একটা পৰ্য্যস্ত জাহাজের মধ্যে যেন সব বিশৃঙ্খলা । প্রথম শ্রেণীর ডেক হ’ল সব শ্রেণীর যাত্রীদের অডিডা, জমীয়েৎ হবার স্থান । জাহাজখাটায় জাহাজের সামনে কতকগুলি যাত্রীর অtয়ীয় আসবার অনুমতি পেয়েছে ; আবার কেউ কেউ জাহাজের উপরেও এসেছেন । জাহাজের উপরে, নীচে, তর-বেতর লোক। গত বীরের চেয়ে এবীর দেখলুম, ভারতীয় মেয়েদের সংখ্যা খুব বেশী,—ধাত্রী, যাত্রীদের আত্মীয়-বন্ধু। সকলেই শাড়ী-পড়া, কিন্তু পোষাক-পরিচ্ছদে, চলনে-বলনে ইউরোপীয় মেয়েদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চ’লবার চেষ্টা কোথাও কোথাও যেন একটু বেশী রকম প্রকট ব'লে মনে হ’ল । কতকগুলি ভারতীয় মেয়ের পোষাকের শালীনতা দেশী শাড়ীর সুন্দর রুচিময় বর্ণসমাবেশ বড় মিষ্টি লাগল, তাদের কমনীয়ত নারীসুলভ কোমলতাকে যেন আরও স্বনার ক’রে তুলেছিল। কিন্তু হাল ফ্যাশানের—অর্থাৎ পারসী ফ্যাশানের গাউনের অনুকারী নানা বিদেশী, জাপানী, ফরাসী চিত্রবিচিত্র করা সিল্কের উদ্ভট উৎকট পাড় আর আঁচলাওয়াল সাড়ীর চলও কম নয়। আমাদের বেনারসী ছাপাগরদ মারহাট্টী সাড়ী, ঢাকাই সাড়ীগুলির পাশে এগুলো দেখে মনে হয়, যেন ঠোটে-গালে-মুখে রঙ-মাথা খুব সপ্রতিভ চালাক চতুর চটপটে চুলবুলে মেয়ে আমাদের গৃহস্থ বরের কুমারী বেী ও গৃহিণীদের পাশে দাড়িয়ে উপর-চটকে বা আলগা-চটকে তাদের নিম্প্রভ ক’রে দিচ্ছে । এই জাহাজের প্রথম শ্রেণীতে ভারতবর্ষের দুই-এক জন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ধাচ্ছেন। ঐযুক্ত জবাহিরলাল নেহরুর স্ত্রী শ্ৰীমতী কমল নেহরু চিকিৎসার জন্ত চ’লেছেন, সঙ্গে আছেন তার চিকিৎসক ডাক্তার অটল । বিখ্যাত মাড়োয়ারী ধনকুবের ও দতি শ্ৰীযুক্ত ঘনশ্বামদাস বিড়লা আছেন, সঙ্গে তার কতকগুলি বন্ধু ও আত্মীয় । দু-এক জন রাজা-রাজড়াও আছেন । জাহাজ ছাড়বার হৈচৈয়ের মধ্যে, জরী অরি লাল-সবুজ-সাদা জগজগ লাগানো ফুলের মালার বোঝা গলায় বহু ভারতীয় ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এই রকম मांण-गणांब श्रु-5ांब्र छन हेखेtब्रॉ*ीब्र७ चांदइन । ७कल्ले পশ্চিমের যাত্রী بهها و \ জিনিস চোখে লাগতে দেরী হয় না,—সাধারণতঃ ইউরোপীয় পুরুষদের পাশে আমাদের ভারতীয় পুরুষদের—বিশেষতঃ একটু বয়স্ক ধারা তাদের—কি রকম পেটমোট আসৌষ্ঠবপূর্ণ চেহারার দেখায় । দু-চার জন ভারতীয় তরুণ আর নবযুবক অবশ্য আছে, তাদের বেশ লম্বা ছিপছিপে গড়ন আর বুদ্ধি ঐ মণ্ডিত মুখ দেখলে অমনিই মনে একটা আনন্দ আসে। এ রকম বাঙালীও একটি-দুটি আছে। আমার মনে হয়, চিস্তব্যোধি, আর বায়ামের অভাবেই এ রকমটা হবার কারণ । জাহাজ ছাড়বার পূৰ্ব্বেই, বাঙালী চেহারা বেছে বেছে দু-তিন জনের সঙ্গে আলাপ করলুম। দু-জায়গায় ঠক্‌লুম— এক জন মালয়ালী আর এক জন তেলুগু । চেহারা দেখে তাদের জন্মভূমি কোন প্রদেশে এটা স্থির করতে না পারলেও আলাপ জমতে দেরী হ’ল না । বিদেশে থেকে বহু অভিজ্ঞতার ফলে আমার একটা দৃঢ় ধারণা দাড়িয়ে গিয়েছে—এক রকমের পোষাকে, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের সাধারণ লোককে, বিশেষতঃ শিক্ষিত লোককে, ধরা মুস্কিল, যে সে কোন প্রদেশের লোক ; কখনও কখনও ধরা একেবারে অসম্ভব । অবষ্ঠ কতকগুলো extrero type—চরম বা অস্তিম রূপের কথা আলাদা । সাধারণতঃ আরব, ইরাণী, পাঠান, এদের ভারতীয় ব’লে ভুল হয় না । কিন্তু বঙালী ব’লে মালবারীকে ভূল হয়, গুজরাট বা পাঞ্জাবীকে বাঙালী ব’লে ভুল হয়, হিন্দুস্থানীকে দখিনী ব’লে ভুল হয়। এর থেকে বোঝা যায় আমাদের বাহ আকারগত একটা সাধারণ ভারতীয়তা আছে । ইটালীয়ানদের জাহাজ। খালাসীরা, জাহাজের থানসামা আর চাকরেরা, সব ইটালীয় । খালি ধোপার। চীনে, মেথররা ভারতীয়, আর শুনলুম বয়লারের আগুনে কয়লা দেয় যারা, সেই ষ্টোকারদের কতকগুলি হচ্ছে পাঠান। খালালীগুলা খুব মজবুত চেহারার লোক, একটু বেটে, একটু মোটাসোটা ষও মার্ক চেহারার ; গায়ের রঙ অনেকের আমাদের মাঝামাঝি রঙের (অর্থাৎ না উজ্জ্বল গৌরবর্ণ না হামবর্ণ) ভারতীয়ের মতই। গায়ের রঙে ছু-এক জন ইটালীয় বাত্রীকে একটু ফসর্ণ-ধরণের ভারতবাসী থেকে পৃথক করবার জো নেই। খানসাম