পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মা শ্ৰীআশালতা সিংহ > প্রথম নব-জীবনের স্বত্রপাত হইল সরম-রাগরক্ত এক গোধূলিবেলায়। ফানের স্নিগ্ধ উদ্ভাসিত অপরায়। গোধূলি-লগ্নে বিবাহ । বেলা পড়িয়া আসিতে না আসিতেই কনের মা আসিয়া তরুণী মহলে তাড়া দিলেন, “ওরে তোরা বাজে গল্প রেখে এইবার কনে সাজাতে ব’স না মা । গোধূলিলগ্নে বিয়ে, দেরি আর কত । সময় হয়ে এ’ল ব’লে । চপলtfদ ভাই তুমি সেই নটরাজ শাড়িখনি বার কর । কি বলছ ? বেনারসী না পরলে বিয়ে হবে কেমন করে ? না ন, আজকাল অfর ওসব চলন নেই । কালে কালে দিন সময় কতই না বদলে যায় । এই দেখ না আমাদের সময় বিয়ের pেলি ব'লে যে কাপড় দেওয়া হ’ত, সে কেবল হাতেকটি স্থতোর একখানা কাপড় মাত্র । হলুদ দিয়ে সধবারা তার পাড় রাঙিয়ে দিত। আর দেখ, সোনার সঙ্গে মিলিয়ে বেশ ক’রে ফুলের গয়না পরিয়ে দিল । চুল এখন বিনুনি ক’রে বাধতে নেহ, এলো খোপায় রেশমী ফিতে জড়িয়ে দিল ।” ফুলচন্দন এবং রত্নালঙ্কারে স্বনারী অরুণাকে দখন মেয়েরা অপূৰ্ব্ব সাজে সাজাইয়া তুলিল, তখন স্বৰ্য্য অস্ত ধাইতেছে । রাঙা আtভায় চারিদিক ছাইয়া গেছে । অদূরে বিপুল বাদ্যোধ্যমের সহিত বর আসিবার বাজনা শোনা যাইতেছে । বেল অরুণার কানের কাছে মুখ আনিয়া ফিস ফিগ করিয়া কহিল, “আজ বাসরে শেলীর অনুবাদ সেই গানখানা গাস ভাই, নিঝর মিশিছে তটিনীর সাথে, তটিনী মিশিছে সাগর সনে ৷” কনের মাসী আসিয়া কহিলেন, “এখন গল্প করিস নে অরু । গৌরীপুজোয় ব'ল। নটরাজ শাডি পরেছিল । নৃত্যতাওব শিব কাপড়ের রেখায় রেখায় শাড়ির পাড়ের ভ"াজে ভ*াজে পায়ের তলায় পুঁটাচ্ছেন। যদি জীবনে এমনই পেতে চাস, শগগার গৌরীপূজোর আসনে গিয়ে ৰোল। বি-এ পাস কনেরও গৌরীপুজো না করলে পরিত্রাণ নেই।” وان صنيميا কনে অরুণা লজ্জিত হইয়া কহিল, “ আমি কি করব না বলেছি।” অরুণার বয়স বেণী নয়। অtঠার ছাড়াইয়া সবেমাত্র উনিশে পড়িয়াছে । শিশুকাল হইতে তাহীর তীক্ষরুদ্ধি এবং অপরিসীম মেধাবী চিত্ত । তfহীদের পরিবীয় উন্নত ও উদার । পিতা কখনও কষ্ঠা এবং:পুত্রকে প্রভেদ করেন নাই । মাতা তাহীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সহিত সযত্নে গৃহের কাজ, পরিজনের সেবাযত্ন শিখাইয়াছেন । সেই ঠাহীদের বড় আদরের, বড় গৰ্ব্বের অরুণীর অfজ বিবাহ । যে ছেলেটির সহিত স্থির করিয়াছেন সে প্রতিযোগী পরীক্ষায় প্রথম হইয়া ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হইয়াছে । নাম সন্তোষ । দেখিতে অতিশয় সুশ্ৰী । বাসর-রীত্রিতে অরুণার মুখে ইংরেজী এবং বাংলা দুই রকম গানই সন্তোধকুমান শুনিতে পাহল । এস্রাজের মীড় টানার তারিফ করিল, সেতারের গৎ মুগ্ধ অভিভূত হইয়া শুনিল এবং এই উনবিংশবর্ষীয়া তন্ত্রী হনরীর হাত হইতে ফুলের বরণমালা পাইয়া নিজের জীবনকে ধন্ত মানিল । নিজের ভবিষ্যতকে থেশ্বপ্নের সহিত উপমিত করিল। অরুণার মুখেও লজ্জিত অপরূপ আভার সহিত মুখের একটা ব্রীড়াচঞ্চল আন্দোলন দেখা গেল । তাঁর পরে পিতৃগৃহ ছাড়ির শ্বশুরবাড়িতে আসিয়া অরুণা দেখিতে পাইল ছোট্ট সংসার । তাহার স্বামীর মা ছাড়া আর কেহ নাই । আর তfহার বিধব শfশুড়ীরও এই একমাত্র ছেলে ছাড়া অন্ত কোন মথ, আঠ কেfন অবলম্বন, অন্ত কোন ছেলেমেয়ে নাই। তাছার স্বামী জীবনের এই পচিশটা বছর মা ছাড়া আর কাহাকেও জ্বনিত না । মা আসিয়া চোখের জল, বোধ করি আননাশ্র, মুছিতে মুছিতে ৰৌ বরণ করিয়া ঘরে তুলিলেন । ফুলশয্যার রাত্রিতে অজস্ৰ ফুলে সমাচ্ছন্ন কক্ষে নিভৃতে বসিয়া সন্তোষকুমার