পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やラiエ করা বিশ্ৰী বিস্বাদ ওটপরিজ। এক সময়ে আর থাকিতে না পারিয়া কছিল, "আচ্ছা বিকেলে না-হয় খাব না, কিন্তু কেবল সকালবেলায় যদি খুব পাতলা এক পেয়ালা চা খাই । তাতে কি কিছু আসে যায় ? ম্যালেরিয়ায় চা উপকারী।” অরুণ হাতের কাজ রাখিয়া স্বামীর মুখপানে চাহিয়া কহিল, “কে তোমাকে বলেছে ? তা ছাড়া তোমার তো ম্যালেরিয়া সেরে গেছে । যা আছে, সে কেবল দুৰ্ব্বলতা, চীয়ে কি পুষ্টিকর জিনিব আছে আমাকে বোঝাও দেখি।” সন্তোষ কি বুঝাইবে কিছুই যখন স্থির করিয়া উঠিতে পারিতেছে না, এমন সময় চাকরটা দ্বারপ্রাস্ত হইতে কহিল, "মী একবার ডাকছেন বাৰু।” “যাই, শুনে আদিগে।” সন্তোষ উঠিল । "fকন্তু বেণী দেরি ক’রে না যেন । জুল হয়ে যাবে ।” ময়ের মহল বাড়ির দক্ষিণ দিকে। একথানি তার শয়ন-বর। আর একখানি ছোট ঘরে পূজা-আহ্নিকের সাজসরঞ্জাম আছে। আর তাঁহারই এক পাশের একখানা ধরে সংসারের স্পর্শ বাচাইয়া শুচিত রক্ষা করিয়া তার র"াধিবার আয়োজন। ক্ষুদ্র ভাড়ার । আরও টুকিটাকি কত জিনিষ । সন্তোষ সামনের ঘরখানায় ঢুকিবামাত্র দেখিতে পাইল শ্বেতপাথরের থালাতে ফুলকো লুচি, কপিভাজা, বাধীকপির তরকারি, পায়েস রাখিয়া মা প{থা-হাতে বাতাস করিতেছেন । চাকর আনন্দর হাতে ধূমাখিত চায়ের পেয়াল । সন্তোষ আর কথাটিমাত্র না কহিয়া পেয়ালার জন্ত ছাত বাড়াইয়া দিয়া আসনে বসিয়া পড়িয়া কহিল, "আজ কি ব্যাপার মা ?" "ব্যাপার কিছুই নয় বাছা । কাল বিকেলে তোর ঘরের দিকে গেছলুম, দেখি বৌমা খোলা-মৃদ্ধ ডিম, শাক পাতা কতকগুলো কি সেদ্ধ ক’রে তোকে দিচ্ছেন। আর লাল মোটা কট। জিজ্ঞেস করতে বললেন, এই সবেতেই গাঁয়ে বল হয় । আজকালকার ডাক্তারেরা নাকি বার করেছেন কোন জিনিষের থোস ফেলতে নেই। ময়দা চেলে পরিষ্কার *রতে নেই। ডিম ভাল ক’রে সেদ্ধ করতে নেই। মাগে1, ঐ সব অখাদ্য-কুখাদ্যগুলো খেতে তোর কষ্ট হয় না সন্তোষ ? সমস্ত জুড়িয়ে মণ \98ገ সেই ষে এতটুকু বেলা থেকে দেখেছি দু-বেলা ঠিক সময়ে চাট না পেলে রাগারগি করতিস। কিন্তু বৌমা বললেন, ‘আমি নিয়ম করে দিয়েছি, চায়ের বদলে এক বেলা ওট, আর এক বেলা ওভ্যালটন।" অত সবের নামও জানি নে ৷” সন্তোষ অনেক দিন পরে মায়ের হাতের রান্না পরম তৃপ্তির সহিত থাইতে খাইতে কহিল, "আমিও জানি নে মা । এদিকে যে প্রাণ যায়। সারাদিন ঐ নিয়ে আছে। কবে কোন কালে আমার একটুখানি জর হয়েছিল সেই জন্ত আজও আমাকে এবেলা এক রকম ওবেলা এক রকম ওষুধ থেতে হচ্ছে । তা ছাড়া—” “না বাছা তা ব’লো না । ৰেী মা আমার গুণবতী। কেমন ক’রে স্বামী-সেবা করে তা তো চোখের উপর স্পষ্টই দেথতে পাচ্ছি। তবে অমর। সেকেলে মানুষ, আমাদের মনে হয়, যা খেয়ে তৃপ্তি পায় তাই ক’রে দিই। তৃপ্তিতেই অনেকখানি কাজ হয়। রাতদিন ডাক্তারী কেতবে ঘেটে কি হবে।” আনন্দর কাছে অঙ্কণা সকালবেলাকার সমস্ত ব্যাপারটা সালঙ্কারে শুনিল । তাহার পর একটি নিঃশ্বাস ফেলিয়া কহিল, “আনন্দ ওঘর থেকে আমাকে সেলায়ের কলট এনে দাও, আর ওঁর পুরনে শাট' আর মোজাগুলো ।” সন্তোষ যখন কাছারি হইতে আসিল তখন প্রায় সন্ধ্যা হইয়া আসিয়াছে, তথাপি সেই প্রায়ন্ধিকার আলোকেও স্ত্রীকে ঝু"কিয়া পড়িয়া সেলষ্টি করিতে দেখিয়া কহিল, “ওগো, মুখ তোল । কি এত জরুরি সেলাই যে চোথদুটিকে এমন ক’রে পীড়ন করছ।” অরুণা মুখও তুলিল না, কথাও বলিল না। সস্তোষ সেলাইয়ের কলের কাছে সরিয়া আসিয়া তাহার একটা হাত চাপিয়া ধরিয়া কহিল, “আমাকে কেন এত উতল কর তুমি ? বল, কথার উত্তর দাও।” । স্বামীর গভীর প্রেমার্ক দৃষ্টির দিকে তাহার অভিমানকরুণ চোখ তুলিয়া সে কহিল, “কি হয়েছে ?” "কেন আমাকে তুমি এমন ক’রে নিলে অরুণ ? সারাদিন ভাবছ, আমার শরীর কিসে ভাল থাকবে। সমস্ত সময়টা লাগিয়েছ আমার সেবা করতে, আমার পথ্য তৈরি করতে, আমার আরামের শত সহস্ৰ তুচ্ছত্তিতুচ্ছ খুঁটিনাটিতে। আবার বিকেলে যেসময়টা তোমার খোলা হাওরাতে বেড়ান উচিত, তখন অন্ধকার ঘরের কোণে