পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@९ చిz | g ੇ SNS@。. এবং গালাগালি শুনাইয়। সে মাকে বিরক্ত এবং বীপকে চমৎকৃত করিয়া তোলে। তাহার আজ নূতন পোষাক চাই, কাল ব্যাগ চাই, পরশু টুপি চাই। চাল চাওয়ার অস্ত নাই, পোষাক-পরিচ্ছদ জুতা-মোজার ঘটায় সে বাপকেও হার মানাইতে বসিয়াছে। যামিনী মনে মনে জলিয়া যান, কিন্তু মুখে স্বামীকে কিছুই বলেন না । মমতা স্কুলে প্রথম যখন ভৰ্ত্তি হইল তখন তাহার প্রায় তেরো বৎসর বয়স। এই প্রথম এক রকম তাহার বাহিরের সংসারের সহিত পরিচয় । তাহারা থাকে এমন জায়গায় যেখানে বাঙালী-পাড়া নাই, কাজেই সীরাক্ষণ প্রতিবেশিনী সমাগম হয় না । নিজের বয়সের মেয়েদের এ-পর্য্যস্ত সে দূর হইতে চোখে দেখিয়াছে মাত্র, আলাপ-পরিচয়ের সুবিধাটা পায় নাই। উৎসব, নিমন্ত্রণাদিতে মায়ের আঁচল ধরিয়া গিয়াছে, তেমনি ভাবেই ফিরিয়া আসিয়াছে । তাহার রকম দেখিয়া যামিনীর নিজের কৈশোরকাল মনে পড়িয়া স্বাইত । তিনিও সৰ্ব্বত্র এই রকম মায়ের আঁচল ধরিয়া বেড়াইতেন । তাহার মা জ্ঞানদা ইহাই অবহু পছন্দ করিতেন। মেয়েকে পুতুলের মত সুন্দরভাবে সাজাইয়াগুজাইয়া লইয়া বেড়াইতে এবং সকলের মুখে তাহার উচ্ছসিত ংসা শুনিতে র্তাহীর বড়ই ভাল লাগিত । কিন্তু মেয়ে স্বাধীন মানুষের মত চলাফেরা করিবে, যাহার সঙ্গে খুশীমত কথা বলিবে, ইহা ভাবিলেই তাহার মন বিরক্তিতে ভরিয়া যাইত। নিজে ছিলেন তিনি অতিমাত্রায় প্রভুত্বপরায়ণ, তাই নিজের ধারে কাছে স্বাধীন মতের আঁচ সহ করিতে পারিতেন না । যামিনীর স্বভাবে প্রভুত্ব করিবার ইচ্ছাটা একেবারেই ছিল না । বাল্যে ও প্রথম যৌবনে অনেক ঘাঁ থাইয়া এই জিনিষটির প্রতি র্তাহার একটা মারাত্মক রকম ঘৃণা জন্সিয়া গিয়াছিল। মেয়ে যেন কাহারও হাতের খেলায় পুতুল না হয়, ইহাই ছিল তাহার একান্ত কামনা। সে দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ক, দুঃখ ভোগ করুক, কোনো কিছুতেই তাহার আপত্তি ছিল না । কিন্তু স্বাধীনতাটুকু যেন না হারায়, নিজের ভাবনা নিজে ভাবিতে পারে, নিজের পথ নিজেই ৰাছিয়া লইতে পারে। তাই মেয়ের এই আঁচলধরা তাব দেখিলেই তিনি তাহাকে ঠেলিয়া সরাইয়া দিবার চেষ্টা করিতেন । তবে বাহিরে যাওয়া তাহাদের এতই কালভদ্রে ঘটিত যে মমতার এই স্বভাবটা সংশোধিত হইবার কোনোই সুযোগ পায় নাই । স্কুলে যখন ঘামিনী তাহাকে প্রথম রাখিয়া চলিয়া আসিলেন, মমতা ত তখন প্রায় কাদিয়াই ফেলিল। ক্লাসের মেয়ের এত বড় মেয়েকে কঁদিতে দেখিয়া বেশ খানিকট কৌতুক অনুভব করিল, কিন্তু একেবারে প্রথম দিন বলিয়া কেহ আর তাহার পিছনে লাগিল না। বরং নানারকম গল্পগাছা করিয়া তাহাকে ভুলাইয়া রীথিবীর চেষ্টা করিতে লাগিল। টিফিনের সময় প্রকাও বড় চাতলাটায় যেন মেয়ের মেলা বসিয়া গেল । চেচামেচি, গল্প, খেলা, খাবার কিনিয়া খাওয়া, সে এক মহা ফুৰ্ত্তির ব্যাপার। মমতা ই৷ করিয়া দেখিতে লাগিল । মোট মোট গোল গোল থামগুলির সামনে পিছনে লুকাইয়া ঘুরিয়া ফিরিয়া মেয়ের দল মহা হুড়াহুড়ি বাধাইয়া দিয়াছে । মমতাকেও ক্লাসের মেয়েরা খেলিতে ডাকিল, কিন্তু সে লজ্জার অগ্রসর হইতে পারিল না । সেদিন বাড়ি ফিরিয়া যাইতেই সুরেশ্বর মেয়েকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি রে, স্কুল কেমন লাগল ?” মমতা সংক্ষেপে বলিল, “তাল না ।” সুরেশ্বর হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ভাল লাগল না কেন ?” মমতা বলিল, “বাড়ি ছেড়ে সারাদিন বাইরে বসে থাকতে আমার ভাল লাগে না ।” হরেশ্বর যেন মহা উল্লসিত হইয়া উঠিলেন, যামিনীকে ডাকিয়া বলিলেন, “গুনছ গো, তুমি ত ভাল শিক্ষা দেবার জন্তে মেয়েকে বাড়িতে বসিয়ে রাখলে, এখন এই বয়সেও স্কুলে গিয়ে তার মন টিকছে না। আরও বছর পাচ-ছয় পরে পাঠালে পারতে ।” - যামিনী রিক্রপট গায়ে না মাখিয়া বলিলেন, “তা পাঠাতে পারলে সত্যিই ভাল হত। স্কুলে সুশিক্ষণ যত হোক-না-হোক, পীচ রকম পরিবারের পাচটা মেয়ের সঙ্গে মিশে কুশিক্ষা তার চেয়ে বেশী হয়। তবে কুণো হওয়ার