পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

weuws ডাক্তার তাহাকে নমস্কার করিয়া বলিলেন, “কি হয়েছে ? খাওয়া-দাওয়ার কিছু অনিয়ম হয়েছিল নাকি ?” যামিনী বলিলেন, “ত থানিকটা হয়েছে বটে।” । দুই জনে সুরেশ্বরের শয়ন-কক্ষের দিকে অগ্রসর হইলেন । ডাক্তার বলিলেন, “ওঁর এখন বিশেষ সাবধান হওয়া দরকার, শরীরের গতিক তত ভাল নয়। খাওয়া-দাওয়ার যাতে কোনো অনিয়ম না হয়, ঘুম যেন ঠিক-মত হয়, এই দুটো বিষয়ে আপনি খুব লক্ষ্য রাখবেন। ওঁর স্বভাব ত জানি, সামনে ভাল খাবার দেখলে কিছুতেই লোভ সামূলাতে পারেন না, আপনারই এখন শক্ত হওয়া দরকার ।” যামিনীর হাসি আসিতে লাগিল। র্তাহার শক্ত হইয়৷ ত কত লাভ। তিনি একটা কথা বলিলে, তাহার উণ্ট কাজ করার উৎসাহ সুরেশ্বরের চতৃগুণ বাড়িয়া যায়। যে স্ত্রী তাহার জন্য কণামাত্রও ব্যস্ত নয়, তাহার কথা শুনিয়া চলিবার অপমান স্বীকার স্বরেশ্বর কখনও করিবেন না, আর যেই করুক। কথাটা শুনিলে তাহার নিজের ভাল হইবে কিনা সেটা ভারিবারই কথা নয়। স্বরেশ্বর ডাক্তারকে দেখিয়া উঠিয়া বসিলেন। চাকরকে ডাকিয় চেয়ার দিতেও বলিলেন । যামিনীকে দেখিয়া তাহার রাগ হইল বটে, কিন্তু সেটা প্রকাশ করিবার কোনো উপায় খুজিয়া পাইলেন না। চাকর তাড়াতাড়ি দুইখান চেয়ার আনিয়া হাজির করিল। ডাক্তারবাৰু বসিলেন, যামিনীও একবার বাহির হইতে ঘুরিয়া আসিয়া, চোয়ারটা খাটের আর এক পাশে টানিয়া লইয়া বসিলেন । ডাক্তার যথারীতি পরীক্ষা ও প্রশ্ন করিলেন, এবং যথারীতি ব্যবস্থাও দিলেন। চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া বলিলেন, “কয়েক দিন চুপচাপ বিশ্রাম করতে হবে, একেবারে বাড়ি থেকে বেরবেন না, শোবার ঘর ছেড়েও যদি না বেরোন ত ভাল ” ‘. স্বরেশ্বর বলিলেন, “দেখা যাক, কতদূর কি করতে পারি। বিশেষ জরুরি কাজ ছিল কতগুলো এই সময় ।” ডাক্তার বলিলেন, “সে-সব এখন পেছিয়ে দিতে হবে। শরীর আগে, তার পর অন্ত সব। খাওয়া-দাওয়াও যেমন বললাম, তার থেকে এদিক-ওদিক করবেন না।” . SN°●曼 স্বরেশ্বর হতাশ ..ভাবে আবার খাটের উপর গুইয়া পড়িয়া বলিলেন, “উপায় যখন নেই, তখন আর কি করা যাবে ?” ডাক্তার বাহির হইয়া চলিলেন, যামিনীও তাহার সঙ্গে সঙ্গে বাহির হইয়া আসিলেন। সিড়ির কাছে আসিয়া একটু উদ্বিগ্নভাবেই ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন দেখলেন ওঁকে ?” ডাক্তারবাবু একটু হাসিয়া বলিলেন, “খুব বেশী ব্যস্ত হবার মত এখনই কিছু হয় নি, তবে খুব সাবধানে থাকতে হবে। অনিয়ম আর চলবে না। একটু ব্লাড-প্রেশারের ভাব দেখা যাচ্ছে ।” - এই ব্যাধিটি এই বংশে পুরুষানুক্রমিক ভাবে চলিয়৷ আসিতেছে, স্বতরাং রোগের নাম শুনিয়া যামিনী যে খুব নিশ্চিন্ত হইয়া উঠিলেন, তাহা বলা চলে না। কিন্তু চিম্ভ করিয়াই বা তিনি কি করিতে পারেন ? ভগবানের উপর নির্ভর করিয়া তাহাকে দিন কাটাইতে হইবে। “ভা হলে আসি, আজ শুধু লিকুইডের উপরেই থাকেন যেন,” বলিয়া ডাক্তার নামিয়া গেলেন। যামিনী নিজের ঘরে গিয়া স্বরেশ্বরের চাকরকে ডাকিয়া পাঠাইয়া, কি কি খাবার কৰ্ত্তার ঘরে যাইবে, তাহ বলিয়া দিলেন । থানিক বাদে চাকরটা ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “বাৰু ডাকছেন।” যামিনী একটু বিস্মিত হইয়া আবার স্বরেখরের ঘরে ফিরিয়া চলিলেন । স্বরেশ্বর তখন মুখ-হাত ধুইয়া, উঠিয় ইজিচেয়ারে বসিয়া আছেন। যামিনীকে দেখিয়া বলিলেন, “ব’সে, চা-ট্য খাওয়া হয়েছে ?” এতখানি ভদ্রতার কারণ বুঝিতে না পারিয়া যামিনী বলিলেন, “হ্য, হয়েছে।” তিনি খাটের এক পাশে বসিয়া পড়িয়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে স্বরেশ্বরের দিকে চাহিয়া রহিলেন। স্বরেশ্বর বলিলেন, “এই কাল কথাই হচ্ছিল কিনা দেবেশকে ডাকবার, তার কি করবে ?” যামিনী বলিলেন, “খুব ত তাড়া নেই, তুমি একটু স্বস্থ হয়ে ও, তারপর দেখা যাবেণ” , , . . ডাক্তারের উপদেশের বহরে স্বরেশ্বর একটু মিয়া গিয়াছিলেন, বেশী মেজাজ না দেখাইয়া বলিলেন, “আবার