পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাজ एछुडौज्ञ डब्रत्र ৭৯১ • রক্ত বরিয়া পড়িতেছে। কালো কোকড়া কোকড় চুলগুলি রক্তে লাল—দুৰ্ব্বল পায়ে যেন আর স্থাটিতে পারে না। গুয়ে সমস্ত শরীর অবশ হইয়া আসিল ; যেমন বসিয়াছিলাম তেমনই বসিয়া আছি—মুখে একটা কথা নাই ; লাল মুখ— চোখের উপর সেই লাল আভা পড়িয়াছে—বাঁশতলার শ্মশান হইতে যেন এইমাত্র উঠিয়া আসিয়াছে। বড় ভয় করিতে লাগিল। কেহ কোথাও নাই—শহরের প্রাস্তে এই স্কুল— সামনের তেঁতুলগাছ—দূরের বঁাশতলার শ্মশান—আর ঠিক তারই পাশে বহমান নদী—এই পরিত্যক্ত স্কুল-বাড়ির বারান্দায় একা আমি—আর সামনে রক্তাক্ত একটি ছেলের ছায়ামূৰ্ত্তি— আমার চোখের সন্মুখ হইতে কালে একটি যবনিকা উঠিয়া গেল। ছেলেটি আসিতেছে-—আমার সামনের সিড়ি দিয়া উঠিল। উপরে উঠিয়া আমার দিকেই আসিতেছে। ঠিক সেই রকম মুখ, সেই আকৃতি—অবিকল সে-ই ! এতটুকু তফাৎ নাই কোথাও—হঠাৎ দেখি ; আমার গায়েও রক্ত লাগিয়া গিয়াছে। এ আমার কি হইল ! রাত্রির একটানা বাতাসে যেন কি নেশা আছে । আমার আপাদমস্তক একেবারে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিয়াছে। নিজেকে যেন আর বিশ্বাস নাই। এই মুহূৰ্ত্তে আমি যেন পাগল হইয়া যাইতে পারি। সারা জীবনের পথ অতিবাহনে কোথাও যেন এক মুহূৰ্ত্তের বিশ্রাম পাই নাই—কোনও দিন যেন কাহারও ভালবাসার ছায়াতলে নিজেকে নিরাপদ ভাবিতে পারি নাই।—একটি দীর্ঘশ্বাসের দীর্ঘস্থত্রতায় জীবনটা কাটাইয়া দিয়াছি—স্নেহ নাই, প্রেম নাই—অকিঞ্চিৎকর এই জীবনের মূল্য। মৃত্যু-কঠোর যন্ত্রণার বিনিময়ে যাহা কিনিতে হয় মৃত্যুতেই তাহার পরিসমাপ্তি । -७ भांडेॉब्र बनाई-भांडेब्र भलाई-निन्সম্মুখে চাহিতেই দেখি-রাইচরণ। ইকাটি বাড়াইয়া দাড়াইয়া আছে ; হকার মাথায় কলিকার উপর আগুন ; সেই আগুনের জাভার রাইচরণের মুখ লাল হইয়া উঠিয়াছে। মুখখানিকে স্পষ্ট দেখিতে পাইলাম। এতখানি বড় বড় গোঁফ–কয়দিন দাড়ি কামায় নাই । আগুনের আলোয় মুখখানিকে বড় বীভৎস দেখাইতেছিল। সেই গোঁফের ষণক দিয়া দাত বাহির হইল।••• –এই নিন, ডেকে ডেকে আপনার সাড়াই নেই মশাই, বেশ ঘুমোচ্ছিলেন, কিন্তু যেন সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে পড়বেন না, তত ক্ষণ তামাক খান, ভাত হ’লেই ডাকৃবে বেশ ভাল করিয়া একবার ধোয়া টানিলাম। করিয়া ধোয়া বাহির হইল। ধোয়া বাহির হয় কি না দেখিয়া তবে রাইচরণ যাইবে। ধোয় দেখিয়া রাইচরণ চলিয়া যাইতেছিল ; ভাকিলাম—একটা কথা ছিল রাইচরণ— রাইচরণের সঙ্গে আমার অনেক কথা থাকে, তা রাইচরণ জানে । বলিল--দাড়ান, ভাতটা তবে চাপিয়ে আসি--- রাইচরণ চলিয়া গেল। পরম নিবিষ্ট চিত্তে হকা টানিতে লাগিলাম। অন্ধকারের মধ্যেও ধোয়ার ফুগুলীগুলি দেখিতে পাই—ডাইনীর জটার মত ঘুরিয়া ঘুরিয়া উড়িতেছে। নিতান্তই আলস্ত-বিলাসে গা এলাইয় দিলাম। . আজ মনে পড়িল ; কতদিনের ছাড়িয়া-আসা ঘরের কথা ; অনাত্মীয়, আত্মীয়, পরিজনদের কথা—যাহারা বহুদিনের ব্যবচ্ছেদে চিরকালের মত পর হইয়া গিয়াছে ; আজ আর তাহদের কাছে কিছু দাবি করিবার অধিকার নাই । নিজের শরীর, মন তাঁহাকেও আজ কি জানি কেন— আর বিশ্বাস করিতে পারি না। এক আছে রাইচরণ আপদে বিপদে, শেষ-জীবনটার কয়েকটি দিন রাইচরণের সাহচৰ্য্য আমার জীবনে অপরিহার্ষ্য এবং অনিবার্ধ্য হইয়া উঠিয়াছে। বারো টাকা মাহিনার বেয়ার—অথচ উহার সেবার কি মূল্য কষা যায় ? ওই রাইচরণ আমার জীবনের প্রথম ও পরম বিলাসিত । অপরিমেয় দারিদ্র্যের মধ্যেও যেন বিধাতার পরিপূর্ণ আশীৰ্ব্বাদ ! s রাইচরণ আসিয়া সামনে দাড়াইল—বলুন—সব বেটা চোর মশাই, জু-আনা ক'রে সের নিলে বেগুনের—তা নিবি নে—কিন্তু সব ক'টি একেবারে পেকে— রাইচরণ কথাটা আর শেষ করিল না। বলিলাম— তা’তে আর কি হয়েছে, পোড়াতে দাও--বেগুন-পোড়া খেতে বেশ লাগবেখন— রাইচরণ শশব্যন্তে চমূকাইয়া উঠিল—জারে বাপ, রে, অাজকে না আপনার জন্মদিন ? • গল গল