পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

心编 দাদা পত্র লিখিয়াছেন আজি দুপুরে এপানে আদিবেন। ঘে স্কুলে কাজ করিতেন, টাকার অভাবে সে স্কুল উঠিয়া গিয়াছে। শরীরে আর তেমন শক্তি নাই, কিন্তু চাকুরী না করিলে নিজেই বা থাইবেন কি, আর আশী বছরের বুড়া বাপকেই বা খাওয়াইবেন কি দিয়া ? এদিকে নাকি কোন স্কুলে একটা চাকুরী খালি আছে, তাহারই খোজে আসবেন । সত্যই, বড় কষ্টেই পড়িয়াছে উহার । মাষ্টারী করিয়া দাদা যে চল্লিশ টাকা পাইতেন তাঁহাতে কিছুই হইত না, টিউশনির টাকা, বাবার পেনৃপনের টাকা একত্র করিয়া কোন রকমে চলিত। বাড়িতে লোকজনও ত কম নয়। দাদার নিজেরই ত সাতটি ছেলেমেয়ে—বুলু, কালু, ভুলু, বিমলা, তার পর তরল, তার পরেরটির নাম মনু না কি যেন, তার পরেও আর একটি আছে। ইহ ছাড়া বড় বুড়ির দুই ছেলে—রমেন, জ্যোতিষ, পিসীমার ছোটমেয়ে কমলা, দাদা, বৌঠান, বাবা, পিঙ্গীমা, তারিণী-কাকা ত আছেনই•••খরচপত্র এখন কেমন করিয়া চলিতেছে কে জানে।---আহক, চেষ্টা করিয়া যাক । আর কিছু না হয় দেখাটা ত হইবে । দাদা আসিয়াই বলিতেছেন আল্পই শেযরাত্রে চলিয়া যাইবেন, তাহার অনেক কাজ । দাদা যে খরচপত্রের অভাবে থাকিতে চাহিতেছেন না তাহা তাহার চোখমুখ দেখিয়া বেশ বুঝা যায় । কিন্তু তবু তঁহিকে দুই দিন রাখিতে ইচ্ছা করে । দাদার চেহারাটা যেন কেমন হইয়া গিয়াছে। কেমন যেন রোগ-রোগী, কেমন-কেমন যেন হাসেন,—কষ্ট হয় দেখিয়া ॥--- এই দাদারই চেহারা আগে কেমন ছিল ! গোলগাল ফর্স, যেন রাজপুত্র । কীৰ্ত্তি:কর মত জামই লইবার জন্ত মেয়ের বাপদের কত টানাটানি।”-ও-পাড়ার দাসঠাকুর দেখিতে আসিলন। ছেলে দেখিয়া বলিলেন এ-ছেলে তিনি লইবেনই। ভিটামটি বন্ধক দিতে হটলেও এমন জামাই তিনি ছাড়িবেন না |•••সেবীরকার কথা মনে পড়ে । বিবাহের পরের বৎসর নৌকায় করিয়া এখানে আসিবার SNご8ー。 সময় সঙ্গে ছিল দাদা । জাজিমতলার ঘাটের কাছে আসিয়া ঝড়ে নৌকা ডুবিয়া গেল। উনি ভয়ে চীৎকার করিয়া উঠিলেন, “দাদা অমরা ত যাই ।” দাদা বলিলেন, “ভয় কি, বিপদবারণ মধুসূদন রক্ষা করবেন।” নৌকার মাঝিট ঝড়ঝাপটায় কোথায় ছিটুকাইয়া পড়িয়াছিল, দাদা একাই সকলকে টানিয়া পারে উঠাইল । উনি দাদার পা জড়াইয়া ধরিখ বলিলেন, “দাদা, তুমিই আমার বিপদবারণ, তুমিই আমার মধুস্থদন।” দাদা যেন বড় বেশী বুড়ো হইয়া গিয়াছেন। ভাল লাগে ন—তাকাইতে পারা যায় না উহার দিকে। দাদা যেন আর সেই দাদা নয়, নূতন একটা মানুষ । বড়ছেলে সমরেশ আপিস হইতে আসিয়া বলিল, “হঠাৎ এলেন যে মামা ?” সমরেশকে দাদার চিঠিখান দেখান হয় নাই ; তাঁহা হইলে সে-ও আমন জিজ্ঞাসা করিত না, দাদারও অত দুঃখ লজ্জা পাইতে হইত না । সমরেশের কথার উত্তর দিতে গিয়া দাদার মুখখান যেন কেমন হইয়া গিয়াছে। এই বয়সে চাকুরী গিয়াছে বলিতে কি কম কষ্ট হইতেছে ওঁর। আমৃতী-আমৃত করিয়া বলিতেছেন, “সে চাক্রিটা আর নেই—ছেড়ে দিয়েছি।—এদিকে নাকি একটা খালি আছে—ভাবলাম যাই একবার ঠোক্কর মেরে আসি । তাছাড়া তোমাদের সঙ্গেও ত অনেকদিন দেখা-সাক্ষাৎ হয় নি, দেখাটাও ত করা দরকার, কি গুল ?” আগের কথাগুলি কোনরকমে সারিয়া শেষের কথাটা দাদা জোর দিয়া বলিলেন, যেন সেইটাই আসল কথা । কিন্তু সমরেশটার কি একটুও বুদ্ধি নাই ? দেখিতেছে দাদা কষ্ট পাইতেছেন, তবু কেন ও বার-বার ওই কথাই তুলিতেছে ? বলিতেছে, “আজকাল চাকুরির যে-রকম বাজার চেষ্টা করিয়াও লাভ যে বিশেষ কিছু হইবে মনে छ्च न1 ।।* বয়সে দাদার চোখ দুইটা ঘোলাটে হইয়া গিয়াছে নাকি ?---ছল ছল করিতেছে না? সমরেশ দেখিতে পাইল नी ७ ? দাদা জোর করিয়া হাসিতেছেন,-বিক্র লাগিতেছে দেখিতে,—ৰলিতেছেন, “বরাতে থাকে ত হবে, না-হয় না