পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*\\8 মামুষের প্রাচীন আবাসে বিশ্বপ্রকৃতি ও জীবজগতের বন্ধনীগুলির সহিত যে মানুষের জীবনযাত্রা ও কল্যাণ নিবিড় ভাবে গ্রথিত, শুধু তাহা নহে। বন্ধনীগুলি মানুষের জীবন, কৰ্শ্ব ও অভিজ্ঞতাকে অতিক্রম করিয়াছে। বন্ধনীর সবগুলি মানুষের আয়ত্তও নহে, এমন কি জ্ঞানগম্যও নহে। জীবনের ক্রমবিকাশের সঙ্গে প্রকৃতি ও মানুষের আদানপ্রদান গভীরতর ও স্বল্পতর হইতে চলিয়াছে। এই আদানপ্রদান রক্ষা ও পরিপোষণের স্বারাই মানুষের সভ্যতা বস্কন্ধরার বক্ষে চিরস্থায়ী হইতে পারে। যেখানেই আদানপ্রদানের ব্যত্যয় ঘটে, প্রকৃতিবু সহিত সমবায়ের পরিবর্তে শোষণ অধিক হয়, প্রকৃতি হন তখন বিরূপা । পরিণামদর্শী মাতুষ প্রকৃতির . প্রবাসী SNëse. সব স্তরের সব পর্যায়ের শক্তি পৰ্যালোচনা করিয়া শুধু মানুষের সঙ্গে মানুষের নহে, সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে সম্ভাব স্থাপন করিবার আয়োজন করে । পুরাতন সভ্যতা রক্ষার একমাত্র উপায় যেখানে মানুষ বস্থঙ্করাকে রিক্ত করিতেছে সেখানে বিশ্বের সমস্ত শক্তির সহিত মৈত্রীস্থাপন । এই সমবায় সত্য সত্যই কি বিশ্বের সেই বিরাট সমবায়ের ছায়া নহে, যে সমবায় প্রকৃতিতে সুষম আনিয়াছে মাধ্যাকর্ষণ, আলোক, উত্তাপ, কাল, দূর, নক্ষত্রগণের প্রভাব প্রভৃতির সামঞ্জস্য বিধানে ? আর এই সুষমাই কি যুগে যুগে মানবের অন্তঃকরণে সত্য ও কল্যাণের আদর্শ জাগাধ নাই ? শিশুর দৌত্য স্ত্রীতারাপদ মজুমদার উত্তর-কলিকাতার একটি নাতিপরিসর গলির মধ্যে একখানি ক্ষুদ্র দোতলা বাড়ির একটি বাতায়নে একদা প্রভাতে এই ক্ষুদ্র আখ্যায়িকার নায়ককে পাওয়া গেল । নাম বিধুভুষণ দা, প্রতিবেশীদের নিকট সাৰ্ব্বজনীন বিধদা। নাছস-মুছস কালো-কোলে চেহারা, মুখে হাসিটি লাগিয়াই রহিয়াছে, কিসের হাসি চট্‌ করিয়া বলিবার জে৷ নাই। মার্জার-বিনিন্দিত গুম্ফগুচ্ছ-যুগলের পার্শ্বে সেই হাসি যেন লীলাময় হইয়া উঠে । কিন্তু বিধদার মনে মুখ নাই । গত বৎসর স্বতিকাগার হইতে শূন্তক্রোড়ে বাহির হইয়া তাহার পত্নী যে-শষ্যগ্রহণ করিয়াছে, সে-শয্যা সে কালেভদ্রে ত্যাগ করে এবং ছোট ছেলেটি তাহার পাচ বৎসরের ঐকান্তিক অধ্যবসায়ে যাহা স্বচারুরূপে আয়ত্ত করিয়াছে, তাহা ক্ৰন্দন। স্বতরাং বিধদা’র মনে মুখ না-থাকিবারই কথা । হাত পুড়াইয়া রান্না করিয়া বহুবাজারের পৈতৃক ছাতার দোকানখানি তাহাকে দেখিতে হয় । বৈচিত্র্যবিহীন জীবন বিধদা অতিকষ্টে টানিয়া চলিয়াছে। আজ সকালেও আহারাদি করিয়া বিধদা তাহার শয়নকক্ষে আসিয়া গায়ে পাঞ্জাবিটা চড়াইতেছে, এমন সময় চিরমধুর একটি কঙ্কণশিঞ্জিতে কর্ণকুহর তাহার শীতল হইয়৷ গেল । চাহিয়া যাহা দেখিল তাহ যেমন অপ্রত্যাশিত, তেমনই অপূৰ্ব্ব !...ও বাড়িটায় ভাড়াটিয়া আসিয়াছে দেখিতেছি । কোথা হইতে আসিল ? আলাপ-পরিচয় করা খুবই উচিত ত ! হাজার হউক প্রতিবেশী--- কিন্তু দড়াম’ করিয়া যখন ও-বাড়ির জানালাটি বিধদা’র মুখের উপরেই বন্ধ হইয়া গেল, তখন চমকিয় সে প্রকৃতিস্থ হইল। ঘড়ির দিকে চাহিয়া আলমারী হইতে তাড়াতাড়ি তহবিল বাহির করিতে যাইবে পণ্ট আসিয়া উপস্থিত। ছেলেটির মুখখানি সৰ্ব্বদাই ভার, দেখিলে মনে হয় যেন এইমাত্র মার খাইয়া আসিল । পিতার মুখের দিকে সম্পূর্ণভাবে ন-চাহিয়াই বলিল—ম ডাকৃছে একবারটি । বিধার মনের মধ্যে তখন কি ঝড় বহিতেছিল, সে-ই জানে, তহবিল সে খুজিয়া পাইতেছে না। স্ত্রীর শাড়ীগুলি