পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

جلاصو6t এত করেও অৰ্দ্ধেক মাসের বেশী খরচ চালাতে পারি নে। শেষের দিকটায় কেবল এ নেই, সে নেই! উপেন। সেদিন মতিবাৰু তোমার কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন। বলছিলেন—শৈলেন দেশই ছেড়ে দিলে একবারে । বহুকাল আসে নি। খবর-টবর পাস কিছু ? খবর ত প্রায় নেই বললেই হয়—তাই তাকে বললাম। অবশু একথা তখন ভাৰতীম - উকিল মানুষ, বিদেশে আছ, না-জানি কত স্বর্থেই আছ। মুখেও হয়ত সে ভাবটা কিছু প্রকাশ করেছিলাম। মতিবাৰু তাই শুনে বললেন—আহ। তাই হোক, মুখে-স্বচ্ছন্দেই থাকৃ। বুদ্ধিমান সে বরাবরই, নিজের পথ নিজে ক’রে নেবেই । শৈলেন। নিজের পথ যা করেছি তা আর ব’লো না, ভাই। মতিবাৰু অবশ্ব কক্ষর করেন নি কিছু। পাসও ক’রে গেলাম। সেই পুজিতে কলেজেও এক রকম মন্দ করি নি জান । কিন্তু হ’লে হবে কি ? ভাগ্য যাবে কোথায় ? মতিবাবু যে শুধু কড়া হেডমাষ্টার ছিলেন, তা নয়। তিনি ভবিষ্যৎ-ভ্রষ্টাও ছিলেন। একটা দিনের কথা আমার সব চেয়ে বেশী মনে পড়ে। তুমি সেদিন ক্লাসে ছিলে কি না সে-কথা মনে নেই। ডিকৃটেশুনের ক্লাস তখন। বানান-ভুল বা গ্রামার-ভুলের উপর তার কি রকম রাগ জান ত ? ষ্টারভেশুন বানান লিখেছিলাম Starvasion ; যেমন খাতা নিয়ে গেছি টেবিলের কাছে, আর যাবে কোথায় ! গাধ, ফাষ্ট ক্লাসে পড়ছ, এখনও ষ্টারভেশ্বন বানান ভুল –ওই না বলে সিংহবিক্রমে চুলের মুটি ধরে টেবিলের উপর মাথাটি চিৎ করে ফেললেন, আর খড়ি দিয়ে বেশ জোরেই কপালের উপর ষ্টারভেশুনের শুদ্ধ বানান *Starvation” লিখে দিলেন। সেই যে কপালে লিখে দিলেন ষ্টারভেঞ্চন, সে লেখা আর মুছল না। কথাটায় দু-জনেই খানিকটা হাসিল। কিন্তু সে হাসি প্রাণহীন। উপেন বলিল-চল বাই, বেলা হল। দু-জনে তথম উঠিল। সোজা পথ হইতে ডান দিকে খানিকটা গেলেই মাইনরস্কুলের পুরাতন হেডমাষ্টার মতি বাবুর বাড়ি। তিনি আজ পর্যন্ত ঐ স্কুলে ছেলেদের প্রায় তিন পুরুষ গড়াইয়। আসিতেছেন। প্রৰণসী 3°●曼 শৈলেন বলিল—চল একবার স্তরের সঙ্গে দেখাটা ক’রে যাই । আর হয়ত সময় না হতেও পারে। উপেন বলিল—বেশ, চল । অল্পক্ষণের মধ্যেই দুই জনে মতিবাবুর বাড়ির সম্মুখে পৌছিল। সাধারণ পাক একতলা পুরানো বাড়ি। প্রাঙ্গণ বাড়ির হিসাবে যেন একটু বড়। বাহিরে চণ্ডীমণ্ডপ—খড়ের চাল। মতি বাবু বৃদ্ধ ; কিন্তু এখনও দেখিলে মনে হয় শরীরে বিলক্ষণ বল আছে। বড়দিনের ছুটি। বাড়ির সম্মুখে বাগানে বসিয়া কাজ করিতেছেন । শৈলেন ও উপেনকে দেখিয় তিনি আগাইয় আসিলেন। দু-জনেই প্রণাম করিয়া তাহার পায়ের ধূলা লইল । মাথায় হাত দিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিয়া মতি বাৰু উভয়কে বসিতে বলিলেন । চণ্ডীমণ্ডপের বারান্দায় একখান চৌকি বিছানো ছিল ; তাহার উপরে একখানা পুরানো পাটি পাতা। গুরু বসিতে ছাত্রদ্ধয় তাহার অনুমতি পাইয়া এক প্রাস্তে বসিল । ভাগলপুর ত বাংলা দেশ বলিলেই হয়। সেখানে চাউল, আটা, ঘি, মাছ ইত্যাদির দর কি, ভাগলপুরে গাই যে লোকে বলে সেখানকার গরু কি সত্যই বিখ্যাত ; ওকালতি বেশ ভাল রকমই চলিতেছে ত ইত্যাদি প্রশ্নোত্তরে খানিক সময় কাটিল । উঠিবার সময় কথায় কথায় উপেন বলিয়া ফেলিল—স্তর, ও ত এত বুদ্ধিমান ছিল ; ওকালতিতে তেমন স্থবিধে করতে পাৰ্বল না। টিউশনি ক’রে খেতে হয়। ও বলছিল কি জানেন স্তর ? এক দিন ও ষ্টারভেশ্বন বানান ভুল করে ; তাই নাকি আপনি ওর কপালে খড়ি দিয়ে বিধাতাপুরুষের মত ষ্টারভেগুনের ঠিক বানানটা লিখে দেন। সেই যে কপালে ষ্টারভেশুন লেখা রইল, আজ পর্য্যস্ত, তাই ষ্টার্ড করতে হচ্ছে । মুহুর্ভে মতিবাবুর মুখের হালি মিলাইয়া গেল। তিনি মান মুখে বলিলেন—ই্য, শৈলেন, তাই নাকি ? তা হলে ত অনেকগুলি ছেলেপূলে নিয়ে বড় কষ্টে আছিস ? আহা! সঙ্গে সঙ্গে মতিবাবুর চোখ জলে ভরিয়া আসিল । শৈলেনের চোখের কোণও যেন ভিজিয়া আসিল । তাড়াতাড়ি মাথা নীচু করিয়া মতিবাবুর পায়ে হাত দিয়া প্ৰণাম