পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ولماولَا \ সেবার আদিবীর সময় হাতখানা ধরিয়া কত কাকুতি-মিনতি করিয়া মা বলিয়াছিলেন, “আর একটা দিন থাকিয়া যা, কিন্তু কৈা আর হয় নাই । শ্বশুরঠাকুরের যে রাগ l-••তার পর মা’র অমুখের খবর যখন আসিল তখন এখানে শ্বশুরঠাকুর মরণাপন্ন, সমরেশের ১০৫ জর। সে সময়টা কি ভাবেই গিয়াছে ---মা'র সঙ্গে দেখা হইল না, বাবার সঙ্গেও হয়ত হইবে না ....না, তিনি যাইবেনই। দুই দিন থাকিয়াই চলিয়া আসিবেন । দাদা শুনিয়া মুখী হইলেন। কিন্তু সমেরশকে যে কিছুতেই বুঝান যায় না । সে বলে, গেলেই উহাদের খরচপত্র বাড়িবে। মামার চাকুরী নাই, এখানে আসিবার টাকাটাও নিশ্চয় র্তাহীকে ধার করিয়া আনিতে হইয়াছে। এখন যাওয়া মানে তাহাদিগকে কষ্ট দেওয়া ; না-গেলে তাহীদের মনে যে কষ্ট হইবে, গেলে আদর করিতে না পরিলে কষ্টটা তাহ অপেক্ষ কম হইবে না । বীর-ধার বলতে অবশেষে সমরেশ বলিয়াছে, “যা ভাল বোক কর।”---fকন্তু এদিকে যে বড় মুস্কিল হইল। বাস্কের একেবারে তলায় অনেক দিন আগেকার জমান দুইটি টাকা আছে বটে, কিন্তু এই রাত্রে এখন বাবার জন্ত লইয়া যাইবার কি জিনিষ পাওয়া যায় ?---কিছু সরু আতপ চাউল আর নুতন গুড়র পাটালী। বাবা নুতন গুড়ের পায়েল বড় ভালবাসেন --ইলিশমাছ আর এখন পাওয়া যাইবে না, নইলে কাটিয়া লবণ মাখিয়া লইয়া যাইতে পারিলে বেশ হইত । রাত্রে সকলে থাইতে বসিলে ছেলেবেলার কত গল্প হইল। রথতলার মেলার কথা, বাবুগঞ্জ থালের কথা, মল্পিক-বাড়ি যাত্রার কথা—কত কথা—কথাই আর ফুরাইতে 5ोंध्र न । - কিন্তু সমরেশ যেন কেমন ভরি-ভার। কেমন যেন ভাল করিয়া কথা কহিতেছে না । বড়মকে ছাড়িয়া একদিনও চলে না উহার । সত্যই, উহার বড় কষ্ট হইবে। থাইয়া শুষ্টতে যাইবার সময় সমরেশ ঘরে মাকে ডাকিয়া লইয়। আবার ভাল করিয়া বুঝিয়া দেখিতে বলিল । বুঝাইল ইহার চেয়ে মামার সঙ্গে দাদামশাইকে কয়েকটা টীকা পঠাইয়া দিলে অনেক শ্ৰেণী ভাল হুইবে । এদিকে আবার মধুটার গায়ে হাত দিয়া দেখা যাইতেছে জর বাড়িয়ছে, ১০৩ ত হইয়াছেই, বেশীও হইতে পারে। রাত্রে গুইয়া আর ঘুম আসিল না। কেবলই ভাবনা আসে, কেবলই ভাবনা আসে। এক-একবার মনে হয় পাশের ঘরে মঞ্চুট বড় বেণী কোকাইতেছে --বড় ভুগিতেছে একরত্তি ছেলেট । সারাদিন কেমন টক্‌ টক্‌ করিয়া কথা কয়, কেমন হুড়াহুড়ি ছুটfছুটি করিয়া বেড়ায়, কিন্তু জর হইলেই একেবারে নেতfইয়া পড়ে। শরীরে মোটেই মাংস নাই, কেবল কয়েকধানী হাড় । পিঠের শিরদাঁড়াটা যেন ফুটিয়) বাহির হইয়াছে।--• •••ধীরে ধীরে চোখ ঘুমে জড়াইয়া আসিল ॥••• •••দাদা বলিলেন, “এটা কি গ্রাম মাঝি ? রহমতপুর কি পার হ’লাম ? বাবুগঞ্জের খাল আর কত দূর ” দাড়ে ঠেলা দিয়া ঝু"কিয়া পড়িয়া মাঝি বলিল, “রহমতপুর তো অনেক ক্ষণ ছাড়িয়া আইছি কত্তা, সামূনের এইডাই তো বাবুগঞ্জের খাল।” মাঝির উচ্চারণ শুনিয়া হালি আসে। অনেক দিন পরে অনেক দিন আগেকার পরাণমাঝির কথা মনে পড়ে । বহুদিন হইল সে নাই, কবে নাকি সে মরিয়া গিয়াছে, কিন্তু আজ বাপের বাড়ি ফিরিবার পথে সে-ই ধেন প্রথম অগ্রসর হইয়া গ্রামের শিশুকে গ্রামে ফিরাইয়া লইভে আসিল ।••• •••বাবুগঞ্জের খালে আসিয়া পড়িয়ছি? তবে তো দেরি অীর নাই । বাক ফিরিলেই তো গ্রাম দেখা যাইবে ।--- •••ঐ যে কুতুবাবুদের মঠ না দাদা ? আর ঐ তো রথতলার সেই পুরনো বটগাছটা । আচ্ছা, সেই নারকেলগাছ দুটো কোথায় গেল, যার তলায় গোপালবাড়িতে বিয়ের সময় এসে ‘ওঁরা" ছিলেন ? প’ড়ে গেছে ? বাইশ সনের বনে ? ও I••• •••এই তো সেই গোপালবাড়ি । এর পরে দাশঠাকুরদের কাছারী-বাড়ি, তার পর মল্লিকদের নাটমন্দির, তার পর স্মৃতিরত্বের টেfল, তার পর —তার পরই তো— •••এই তো বাড়ির ঘাট- ঘাটে দাড়াইয়াকে কে? বাবা আর মা। মা ? ই মা-ই তো । কিন্তু মা কেন ? মা অমন করিয়া কীদেনই বা কেন ? কি বলি তছেন ?—ওরে আমীর মা—ওরে মা— মা-শা-মা-মা-মা-ধড়মড় করিয়া বড়মা বিছানার উঠিা