পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অণশ্বিন সসপিল امتی جکسون হঠাৎ দরজার ফাকে সাদা মতন লম্বা কি একটি জিনিষ মাধুরীর প্রাণ উড়িয়া যায়। ঘরের ভিতর সে এটাওটা দেখিয়া সে বিস্থিত হইয়া শাগুড়ীকে ডাকিয়া আনিল । করিয়া বেড়ায় আর সন্দিগ্ধচিত্তে ঐ সিন্দুকটির দিকে শাশুড়ী দাক্ষায়ণী সেটি দেখিয়া একটু মুখ টিপিয়া হাসিলেন। তাহার পর বলিলেন—আচ্ছা কি এটা বল দিকি বউমা। কেমন সেয়ন ঘরের মেয়ে তুমি দেখি ? মাধুরী বার-বার করিয়া দেখিয়া বলিল—ও বুঝেছি মা, এটা সাপের খোলস, না ? স্বাক্ষায়ণীর মুখে অর্থপূর্ণ হাসি ফুটিয়া উঠিল। মাধুরী অবাক হইয়া গেল। সে বলিল—সাপের খোলস রয়েছে, তা হ'লে এ ঘরে সাপ এসেছিল ? দাক্ষায়ণী বলিলেন—সাপ এসেছিল কেন--সাপ ত এ ঘরেই রয়েছে ! ঘরে সাপ রহিয়াছে। ঘরে আবার কেহ সাপ পুষিয়া রাখে নাকি ? মাধুরী বিস্ময়ের স্বরে বলিল--ঘরে সাপ রয়েছে তবে তাকে মেরে ফেলা হয় না কেন, মা ? দীক্ষায়ণী বিস্ফোরকের ন্যায় ফাটিয়া পড়িয়া বলিলেন— শুনা বল কি ? এমন কথা আর মুখে এনে না। ম যে আমাদের এ ভিটের বাস্তু-দেবী ! ছিঃ ছিঃ, এখুনি নাকে কানে হাত দিয়ে মা'র কাছে ঘাট মান। নতুন বউ । আর অমন কথা ব'লে না, শেষে অমঙ্গল হবে । শেষে দক্ষিয়শী বলিলেন—এই দেবতার রুপায় নাকি একদিন এ-বাড়ির স্বদিন ছিল। যত কিছু ধনরত্ন তাহ সমস্তই একদিন এই দেবতার স্বনজরে আসিয়াছিল। আবার একদিন দেবতা বিমুখ হইয়াছিলেন বলিয়। ক্রমশঃ পড়তা পারাপ হইয়া আসিতেছিল। কিন্তু তবুও দেবতা এ-ভিটা ত্যাগ করেন নাই। পুত্রের বিবাহ দিয়া দাক্ষায়ণী ভাবিতে ছিলেন আবার পুরাতন দিনগুলি ফিরিয়া আসিবে। আবার গঙ্গার জলে সাতটি ডিঙি ঠিক তেমনই করিয়া ভাসিতে কিন্তু মাধুরীর বড় অহুবিধা হইতে লাগিল। এই সৰ্পসঙ্কল বাড়িটির মধ্যে সে কি করিয়া থাকে ? বাড়ির বাহিরে অনেক সময় সৰ্প থাকে । সে সপের অত্যাচার সহ করা যায়। কিন্তু ঘরের ভিতরে যদি দিবারাত্র সর্প লুকাইয়া থাকে তাহা হইলে সে এক অত্যন্ত আশঙ্কার কারণ। ঐ প্রকাও সিন্ধুকটির পাশে কখনও কিছু নড়িয়া উঠিলেই তাকাইয়া তাকাইয়া দেগে। তাহার কেবলই মনে হয় ঐ বুঝি খুটু করিয়া শব্দ হইল—ঐ বুঝি সিন্দুকের পাশে সাদা চক্রচিহ্নিত লেজটির একটু অংশ দেখা গেল । কথাপ্রসঙ্গে শাশুড়ী মাধুরীকে বলিলেন যে এই বাস্তদেবীকে বড়-একটা দেখা যায় না। দিনের বেলা কখনও ঐ সিন্দুকটির পার্থে গর্ভের মধ্যে লুকাইয়া থাকেন জার রাত্রি হইলে বাহির হইয়া যান। কেহই তাহার গমন-পথ লক্ষ্য করে নাই। একদিন কেবল সকলে এই দেবীকে দেখিয়াছিলেন। সেই দিন দাক্ষায়ণীর শাশুড়ী মারা যান. বেলা পড়িয়া আসিয়াছিল। দীক্ষায়ণী ঘাট হইতে কাপড় কাচি আসিয়া শাশুড়ীর ঘরে ঢুকিতেছিলেন অত্যন্ত অন্তমনস্ক ভাবেই। হঠাৎ তিনি চৌকাঠের কাছে আসিয়া বিস্ময়ে দুই হাত পিছাইয় গেলেন।---ম! একেবারে ফণা তুলিয়া চৌকাঠের উপর রহিয়াছেন। দুধ-হলুদে গায়ের রঙ, তাহার উপর চক্রের চিহ্ন। ফণাটির উপর সিন্মুরের রেখা জল জল করিতেছে। তখনই তিনি গলবস্ত্র হইয়া প্রণাম করিলেন । দেবী মিলাইয় গেলেন । কিন্তু সেই রাত্রেই বিপদ ঘটিল। \o মাধুরীর এ-স্থানটা নেহাৎ মন্দ লাগিতেছিল না। বাংলা দেশের এক প্রাস্ত হইলেও ইহার যেন একটি নিজস্ব সৌন্দর্ষ্য আছে। অনেক দিন সন্ধ্যায় জানালার ধারে বসিয়া দেপিতে দেখিতে সে মুগ্ধ হইয়া গিয়াছে। কাছে ও দূরের গাছপালাগুলি দেখিতে তাহার বড়ই ভাল লাগে. বাংল দেশের লতাপাতার মধ্যে কেমন যেন একটা বন্ত বৰ্ব্বরতা আছে। এখানে কিন্তু সেরূপ নাই। সারি সারি শাল, মহুয়া হরিতকী গাছগুলোর ভিতর কেমন যেন একটা সুন্দর শৃঙ্খলা আছে। দেখিলে তৃপ্তি পাওয়া যায়। এখানকার মাটির রংও আলাদা। কেমন একটু লালচে। মধুরী শুনিগছে দূরে নাকি ঐ গ্রামখানি পার হইয়া যাইবার পর পাহাড় আছে। ধোয়ার মত তার একটু অস্পষ্ট রেখা এখান হইতেও চোগে আসে