পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*一位の ডাল কয়েকটা ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা গেছে। কিন্তু প্রয়োজনের সময় সেগুলি ব্যবহার করার শক্তি কুলোবে কি না এক্ট ছিল আস্থরিক প্রশ্ন । নবীন বাবুর মুখে-চোগে চিন্তার ছায়। প্রতি মুহূর্তেই তাদের কৰ্ত্তব্যের চেহারাটা কঠিনতর হয়ে উঠছে, নানাদিকে নানান সমস্ত দেখা দিচ্ছে । ছেলেদের মধ্যে উৎসাহটা কিছু স্তিমিত । বহু কষ্ট এবং পরিশ্রমের পর মাইল-তিনেক পথ পার হয়ে এক গ্রামের কয়েকট চালাঘর পাওয়া গেল । ষ্টেশনমাষ্টার-মশাই এর সন্ধান নির্দেশ ক’রে দিয়েছেন । ঘরগুলির দারিদ্র্যের চেহার! সুস্পষ্ট । ঝড় জলের পক্ষেও নিরাপদ আশ্রয় নয়। তবু এ ছাড়া আজকের রাত্রে আর গতি নেই। যেন কিছু দুলভ বস্তু আবিষ্কার করা গেছে, এমনি ভাবে সুরেশ্বর প্রমুখ ছেলের দ্রুতপদে এসে চালার উপরে উঠল। একটা প্রকাগু কুকুর একপারে চুপ ক’রে বসেছিল, সে ডাকুলও না, উঠলও না, তেমনি করেই বসে রইল । গোলমাল শুনে পাশের একথান কুটুরী থেকে একটা লোক বেরিয়ে এল। লোকটার মুগে প্রকাও পাকা দাড়ি, পাকা চল, পরনে একথান লুঙ্গি লোকটি মুসলমান। নবীনবাবু এগিয়ে এসে বললেন – আজ আমরা রাত কাটাবো এগানে মিঞ| সায়েব । জায়গা দেবে ত ? বুদ্ধ সবিনয়ে হাসলে । বললে -কষ্ট হবে, আপনার ভদল্লেক। কলকাতা থিগে এসছেন ? ষ্ট্য, মিঞাসাহেব । বুঝতেই পাচ্ছ কি জন্তে আসা। কুকুরটা রাতের বেলা হঠাৎ কামৃড়ে দেবে না ত ? না বাৰু, ওর আর কিছু নেই। উপোস ক'রে করে - ল’লে ব্যথিত দৃষ্টিতে প্রাস্তরের ঘনায়মান অন্ধকারের দিকে বৃদ্ধ একবার তাকালে । to অবনী বললে তোমার এখানে কৈ কে আছে মিঞা। কেউ না, একাই থাকি বাৰু। ইস্তিরি ম'রে গেছে, ছেলেট। চাকরি করে আসানসোলে রেলের কারখানায়। আমি আজও এই চালাটার মায়া কাটাতে পারি নি। তবে এইবার বোধ হয় পারব নদীর বাঁধ ভেঙেছে। -ব’লে সে এক রকম অদ্ভুত হাসি হাসলে । - প্রবাসী SN○8ー。 হারিকেন লণ্ঠন গোট-চারেক সঙ্গেই ছিল, আলো জাল হ’ল । সুরেশ্বর বললে—এখানে জালানি কাঠ পাওয়া যাবে মিঞা ? ভিজে কাঠ বাৰু, চলবে? রাধবেন বুঝি ? -- হঁ্যা, রাধব । জল পাব কেমন ক’রে ? বৃদ্ধ হাসলে। বললে জল ত আছে কিন্তু আমার জল...আপনার কিছু--- নবীন বাবু বললেন– এখন আর কিছু নয়, এপন কেবল মানুষ । বেশ, দরকার হ’লে জল চাইব । তোমার খাবার", আমাদের সঙ্গে হবে, মিঞাঁসায়েব । কুকুরটা মুখ তুলে একবার বক্তা ও শ্রোতার দিকে সতৃষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। বৃদ্ধ তার পিঠ চাপড়ে সক্ষেহে বললে - বাবুর তোকে ফাকি দেবে না, বাবুর ভাল। বুঝলি রহমন ? ওর নাম রহুমন বুঝি ? -অবনী সবিস্ময়ে বললে । — আদর ক'রে ডাকি বাৰু। —ব’লে বৃদ্ধ কাঠ আর জলের ব্যবস্থা করতে গেল । লোকটি বড় ভাল । ঘর দুর্গানার জানলা-কপাট বলতে কিছু নেই। ভিতরে প্রবেশ করার সাহস কারও ছিল না । পোকামাকড়, সাপথোপ, এমন কি ক্ষ্যাপ শিয়ালের অবস্থিতিও অসম্ভব ময় । এই দাওয়ার ধারেক্ট যেমন ক’রে হোক আজকের রাত কাটাতে হবে। এগারটি ছেলে আর নবীন বাবু সেই ব্যবস্থার দিকেই মনঃসংযোগ করতে লাগলেন। কাঠ এল, জলের ব্যবস্থা হ’ল । বুদ্ধ নিঃশবো তাদের সুবিধা করে দিতে লাগল ; মুখে চোথে তার একটুও উদ্বেগ নেই। অতিথিগণের প্রতি আদর-আপ্যায়নেরও আতিশয্য দেখা গেল না। কুকুরটা এগিয়ে এসে বসলো । অর্থাৎ, তাকে যেন কেউ ভুলে যায়, ন, সেও সকলের এক জন | বিপিন বললে –যদি বস্ত আসে, তুমি এর পর কোথায় যাবে মিঞা ? শাদ মাথার চুল আর দাড়ির ভিতর দিয়ে এই বিচিত্র বৃদ্ধ মুসলমানের হাসির রেথ আবার দেখা গেল । তার অর্থ আছে, কিন্তু সেটা রহস্তে ভরা। বন্যায় পৃথিবী প্লাবিত হ'লেও তার এই সায়াহ্নকালের অটল ধৈৰ্য্য একটুকু স্থঃ