পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পশ্চিমযাত্রিকী শ্ৰীমতী ছৰ্গাবতী ঘোষ বিলাসপুরের পথে । আজ ১২ই জুন ১৯৩২ । আমর-– আমি ও আমার স্বামী, কাল বিকালে কলকাত ছেড়ে আজ এত দূরে এসে পড়েছি এখন বেল ছ-ট। রাত্রে কোন কষ্ট হয় নি। ট্রেন বড় দুলছে, লেখা যায় না। কলে জল নেই। কুঁজে থেকে জল ঢেলে, কুলকুচে ক'রে মুখ ধুয়ে এক বাটি জল খেয়ে বসে আছি। জলের বন্দোবস্ত হ'লেই হয়, একেবারে স্বান ক’রে ফেলি। জলের অপেক্ষায় চুলে বুটি বেঁধে বসে আছি। কাল বিকালে গড়গপুর ষ্টেশন থেকে দুটা বড় বড় মালদহ-অাম কিনেছিলুম। আকারে এক-একটি মাঝারি খরমুজ বললেই চলে। ছ-আনা জোড়া নিলে, থেতে কেমন হবে জানি না । ট্রেন মাঝে মাঝে মাঠের মাঝেই থেমে যাচ্ছে, হয়ত লাইন ঠিক নেই। আজকের সারাদিনও এই ভাবেই গেল। পথে দিনের বেলায় মধ্যপ্রদেশের ভেতর দিয়ে বড় কষ্টে সময় কাটাতে হয়েছে । অসহ্য গরম, মুখে ভিজে তোয়ালে চাপ দিয়ে বসে আছি । যেমন গরম হাওয়া, ধূলাও তেমনি। সন্ধ্যার পর একটু ঠাণ্ড হ’ল । পাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়া গেল । ङिले तिब्र छाहाङ পরদিন ১৩ই জুন বেলা ৯টা আন্দাজ বোম্বাইয়ের ভিক্টোরিয়া টারমিনাস ষ্টেশনে এসে ট্রেন থামল । ষ্টেশনে আমাদের আত্মীয় ক্রনীরেন্দ্রনাথ ঘোষ ও বন্ধু মিষ্টার সোমূজি দু-জনেই ছুপান৷ গাড়ী নিয়ে হাজির । দু-জনেরই মনের ইচ্ছ। তাদের বাড়িতে গিয়ে স্নানাহার করে তবে জাহাজে উঠি । অবশেষে স্থির হ’ল শ্রনীরেন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে আমর। স্বান ক’রে গু মিষ্টার সোমজির বাড়িতে পেয়ে টমাস কুকের আপিসে গিয়ে জাহাজের টিকিট ও অন্যান্য জিনিষের সব বন্দোবস্ত করে তবে জাহাজঘাটে যাব । ভারী লগেজগুলি ষ্টেশনেষ্ট টমাস কুকের লোকের জিম্মীয় দিলুম। পরে এই বন্দোবস্ত অতুযায়ী সব কাজ সেরে জাহাজঘাটে গিয়ে একেবারে অবাক হয়ে গেলুম। চারিদিকে লোক গিসগিস করছে । বিস্তর যাত্রী, তাদের বন্ধুবান্ধবের ভীড়ও তেমনি। সবাইকে সবাই বিদায়-সম্ভাষণ জানাচ্ছে। বেশীর ভাগ মেয়েদের দেখলুম চোখ ছল ছল করছে, সত্যি কথা বলতে কি নিজের মনের অবস্থাও বড় ঠিক ছিল না। এই সব দেখে-শুনে প্যাচার মত মুখ ক’রে এক পাশে বসে রইলুম । আমাদের দুটি দল হ’ল, এক দিকে মেয়ে, অন্য দিকে পুরুষ । দু-দিকে দুটি ঘেরা জায়গায় ডাক্তার ও ডাক্তারণী বসে আছেন। তারা একবার করে বুড়ী ছুয়ে নাড়ী টিপে দেখে আমাদের শরীরগতিক কেমন বুঝলেন। সামনে টেবিলের উপর জাহাজের যাত্রীদের নামের লিষ্টছাপান কাগজ রয়েছে, সেই দেখে ও জিজ্ঞাসা করে মিলিয়ে নিয়ে আমাদের ছাড়লেন। যাত্রীর দল বালার্ড পীয়ারে জাহাজের সামনে এসে লড়াল। প্রকাও জাহাজ, মাঝে মাঝে বিকট স্বরে . ভেী বাজছে, পেটের নাড়ীভূড়ী উঠছে । ওপর থেকে সিড়ি নামিয়ে দিয়েছে । সিড়ির গোড়াতেই ভীমদৰ্শন কড়া সার্জেণ্ট । ছাড়পত্র দেখে তবে