পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eھتیسرb প্রবাসী SNoBoo. বিদেশে বসবাস করছেন, ও দেশে আসা তাদের কদাচিৎ ঘটে উঠে, সেই জঙ্ক বাংলা ভাষা ও উচ্চারণের সহিত অনেকেরই যথেষ্ট পরিচয় থাকে না । দ্বিতীয় কারণ, অবাঙালীর সহিত সৰ্ব্বদা মেলামেশা । বিদেশে-বিশেষতঃ যেখানে বাঙালীর সংখ্যা অল্প, অবাঙালীর সহিত ঘনিষ্ঠত হওয়া স্বাভাবিক, তাই ক্রমাগত স্থানীয় ভাষায় ৰাক্যালাপ করার জঙ্ক মাতৃভাষা চর্চা করার স্বৰোগ অল্পই হয়। তৃতীয় কারণ, বিদেশে বাংলা শিক্ষার বন্দোবস্ত করা সহজ নয়। দু-চারটি শহর ছাড়া অধিকাংশ স্থানে বাংলা স্কুল না-থাকায় ছেলেমেয়েদের ভাষা-শিক্ষা নামমাত্রই হয়। এর ফলে যা হয়ে থাকে তা সকলেই জানেন । চতুর্থ কারণ, অনেক জায়গাতেই বাংলা লাইব্রেরী, ক্লাব প্রভৃতি নেই। বাংলা বই বা সাময়িক পত্রিকা পড়বার স্ববিধা ও স্থযোগ অনেকে পান না। . পঞ্চম কারণ, প্রবাসে অনেকেই—বিশেষতঃ ছোটরা, নিজেদের মধ্যেও সখ ক'রে হিন্দুস্থানী ভাষায় কথা কন। এরূপ অশোভন অভ্যাস অবগু আজকাল কমই দেখা যায়, কিন্তু এখনও একেবারে সম্পূর্ণ লোপ পায় নি। এ বিষয়ে অভিভাবকদের তীক্ষ দৃষ্টি থাকা দরকার। বাংলার সাহিত্য ও কৃষ্টির সহিত যাতে প্রবাসী বাঙালীর যোগস্থত্র একেবারে ছিন্ন না হয়, সেই জন্তই প্রবাসী-বঙ্গসাহিত্যসম্মেলনের স্বষ্টি হয়েছিল, কিন্তু সম্মেলনের অধিবেশন বৎসরে একবার মাত্র হয়ে থাকে, কাজেই তার প্রভাব সীমাবদ্ধ। সম্মেলনের প্রকৃত কাৰ্য্যকারিতা সম্বন্ধে মতবিভেদ থাকতে পারে না, কিন্তু প্রবাসী বাঙালীর শুধু সম্মেলন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না, আরও নানাবিধ অনুষ্ঠানের প্রয়োজন আছে । প্রথম, অন্ততঃ একটি ক'রে পুস্তকালয় প্রত্যেক স্থানে থাকা উচিত ও সেই সঙ্গে একটি পাঠাগার থাকবে, তার জল্প স্বতগুলি সম্ভব বাংলা সাময়িক পত্রিক সংগ্রহ ৰর কৰ্ত্তব্য । স্থাখের বিষয়, বাংলার বাইরে এমন অনেক শহর আছে যেখানে যথেষ্ট সঙ্গতিপন্ন বাঙালী থাকা সত্বেও কোন সাধারণ পাঠাগার নেই। এর কার। অবশ্নই অর্থনূ্যনত নয়, শুধু উৎসাহ ও উদ্যমের অভাব। দ্বিতীয়, বাঙালী ছেলেমেয়েদের অল্প বয়সে ভাষাশিক্ষার সম্যক্ ব্যবস্থা করতে হবে। এই সম্বন্ধে একটি কথা সম্মেলনের কর্তৃকপক্ষগণের বিবেচনা করা আবশ্যক। হিন্দীপ্রচারের জন্ত কাশী নাগরীপ্রচারিণী সভা যেমন হিন্দীভাষা ও সাহিত্যের একাধিক পরীক্ষার বন্দোবস্ত করেছেন, সম্মেলন কি তেমনি বাংলা পরীক্ষার প্রচলন করতে পারেন না ? পরীক্ষান্তে. প্রশংসাপত্র পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ছেলেমেয়েদের” বাংলা: শিক্ষা করবার উৎসাহ নিশ্চয় বৃদ্ধি পাবে। হিন্দী পরীক্ষায়: তিনটি বিভাগ আছে—প্রথম, মধ্যম ও উত্তম । সম্মেলন গোড়ায় অন্ততঃ ছোটদের জন্য ‘প্রথমা পরীক্ষার আরম্ভ করতে পারেন। এই পরীক্ষা যদি উপযুক্ত সাহিত্যিকগণ কর্তৃক পরিচালিত হয় তাহলে তা জনপ্রিয় হবে না কেন ? প্রারম্ভে বাধাবিঘ্ন অনেক ঘটতে পারে, কিন্তু কোনটাই অনতিক্রমণীয় হবে না। তৃতীয়, প্রত্যেক শহরে বৎসরে একাধিকবার সাহিত্যসন্মিলনী অনুষ্ঠিত হওয়া বাঞ্ছনীয় ও সেই সুযোগে ছোটদের আবৃত্তি করতে দেওয়া উচিত। অল্প বয়স হতে আবৃত্তি করতে শিখলে তাদের উচ্চারণের উৎকর্ষ সাধিত হবে । অপেক্ষাকৃত বয়স্ক ছাত্রছাত্রীদের জন্তু রচনা-প্রতিযোগিতা যে খুবই ফলপ্রদ তা বলাই বাহুল্য। চতুর্থ, পাশ্চাত্যে যেমন ভাষাশিক্ষার জন্য গ্রামোফোন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে, বাংলার জন্তও সেরূপ দরকার। তার ' দ্বারা অবাঙালীও বাংলা শিখতে পারবেন, আর প্রবাসী বাঙালী ছেলেমেয়েরাও তার সাহায্যে উচ্চারণ, আবৃত্তি প্রভৃতি শিখতে পারবে। - পঞ্চম, এক বিষয়ে প্রবাসী বাঙালী খুব পশ্চাদ্বতী নন। সেটি হচ্ছে সর্থের অভিনয় । বাঙালীবহুল স্থানে একাধিক নাট্যসমিতি আছে। অভিনয়ের জন্ত উপযুক্ত নাটক সচরাচর গৃহীত হয় না এই য| আক্ষেপ। যাই হোক, অভিনয়ের স্বারাও ভাষা এবং সাহিত্যের চর্চ হতে পারে। ষষ্ঠ, বিবাহাদি সামাজিক আদান-প্রদান দ্বারাও দেশের সহিত যাতে যোগ থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়। তা ছাড়া স্থবিধা-মত মাঝে মাঝে ছুটিতে ছোটদের দেশে রাখা মন্দ নয়। এমন অনেকে আছেন যারাসারা জীবনে দু-একবারের বেশী দেশে যান কি-না সন্দেহ, সেটা ভাষার বিস্তৃত্বত রক্ষার পক্ষে মোটেই জহুরুল নয়। এবার সম্মেলনের অধিবেশন