পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

نام۵b সাহিত্য, লোকমুখে প্রচলিত গান ছড়া, প্রধান প্রধান লোক দের জীবনচরিত, প্রভৃতি নানাবিষয়ে অনুসন্ধান করিয়া লিখিবার স্ববিধা আছে। জেলার স্বাস্থ্য শিক্ষা ধনাগম প্রভৃতি বিষয়ে লিখিবারও বিশেষ সুযোগ আছে। কোন জেলার বিশেষ অভাব প্রয়োজন কি, তাহ সেই জেলার কাগজ যেমন করিয়া লিখিতে পরিবে, অন্যে তেমন পরিবে না। বাঙ্গলাদেশের প্রত্যেক হাজার অধিবাসীর মধ্যে কেবল ৬৪ জন সহরে, বাকী ৯৩৬ জন গ্রামে বাস করে। দেশের উন্নতির মানে গ্রামের উন্নতি। গ্রামের উন্নতির বিষয়ে মফঃস্বলের কাগজে যেমন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হইতে লেখা যায়, সহরের কাগজে ততটা পারা যায় না। মফঃস্বলের কাগজগুলিতে বর্তমান যুদ্ধের সংবাদ বা অন্য সাধারণ সংবাদ কিছুই থাকিবে না, ইহা আমরা বলি না। কিন্তু এসব বিষয়ে - মফঃস্বলের কাগজগুলি কলিকাতার অতিকায় কাগজগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করিতে পারিবেন না। আমরা যেসব বিষয়ের উল্লেখ করিয়াছি, তাহার আলোচনায় মফঃস্বলেরই জিত হইতে পারে। এইজন্য সাধারণ বড় বড় খবরগুলি ছাপিয়া, ঐসকল স্থানীয় বিষয়ে যিনি যত মন দিবেন, তাহার দ্বারা দেশের সেবা তত বেশী হইবে । সত্য বটে, বার বার কেবল রোগ ও অন্নকষ্টের একঘেয়ে খবর দিয়া কাগজ চালান যায় না। কিন্তু একঘেয়ে হষ্টলেও এসব খবর দেওয়া দরকার। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিকারের উপায় নির্দেশ করিয়া আশার কথাও মানুষকে শুনাইতে হইবে। অন্য যেসব বিষয়ে লেখা যায়, তাহ পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি। গ্রাম্যজীবনের বাস্তব-চিত্রপূর্ণ গল্পও বেশ উপাদেয় এবং হিতকর হইতে পারে। জেলাশাসন কমিটীর রিপোট এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সম্বন্ধে ভারতগবর্ণমেণ্টের মন্তব্য, এই-দুটি বিষয়ের মফঃস্বলের সংবাদপত্রগুলিতে বিস্তৃত আলোচনা হইলে ভাল হয় । মান্দ্রাজ প্রেসিডেন্সীতে কেবল স্থানিক স্বায়ত্তশাসন সম্বন্ধে আলোচনার জন্য একটি কাগজ আছে ; বঙ্গে নাই। আমাদের ভিন্ন ভিন্ন জেলার কাগজগুলি ডিষ্টিক্টবোর্ড, লোক্যালবোর্ড ও মিউনিসিপালিটির কার্য্যের বিশেষভাবে আলোচনা করিলে এই অভাব পূর্ণ হইতে পারে। প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড SSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSJSJSS জাতীয় গৌরব। ভারতবাসীর স্বাধীন না হইলেও প্রত্যেক প্রদেশের লোকদেরই সত্য বা কল্পিত একএকটা গৌরবের বিষয় আছে। আমরা বাঙ্গালী, আমরা মারাঠা, আমরা রাজপুত, আমরা পাঞ্জাবী, এই বলিতে বলিতে প্রত্যেকের মনে নিজের প্রদেশের প্রাধান্তের একটা অস্পষ্ট অমৃদ্ধৃতির উদ্রেক হয়। যতক্ষণ এই গৌরববোধ মানুষকে ভাল ও বড় কাজে প্রেরণ দেয়, ততক্ষণ ইহা ভাল। কিন্তু যখন ইহার বশবৰ্ত্তী হইয়া মানুষ ঈৰ্য্যাম্বেষে জর্জরিত হইতে থাকে এবং অপরকে ছোট করিতে চায়, অপরের উপর প্রভূত্ব করিতে চায়, পরশ্ৰীকাতর হয়, অপরের অনিষ্ট করিতে চায়, তখন ইহার যে একটা অপকারিতাও আছে, তাহা বুঝা যায়। এই অপকারিতা পরাধীন জাতিদের ব্যবহার দ্বারা সব সময় স্পষ্ট বুঝা যায় না। কিন্তু স্বাধীন ও প্রবল জাতিদের ব্যবহারে ইহ সহজেই চোখে পড়ে। ইউরোপে যে ভীষণ যুদ্ধ চলিতেছে, তাহার মূলে জাতীয় প্রাধান্ত স্থাপনের চেষ্টা বিদ্যমান । ঐতিহাসিক লণ্ড ব্রাইস অল্পদিন পূৰ্ব্বে লওনে "Race Sentiment as a Factor in History", & foots ( অর্থাৎ জাতীয়তা বোধ দ্বারা ইতিহাসের গতি কিরূপে নিয়মিত হইয়াছে, বা ইতিহাস কিরূপে গঠিত হইয়াছে, তদ্বিষয়ে ) একটি বক্তৃতা করেন। তাহাতে তিনি বলেন, বিদ্বান লোকেরা তাহদের পুস্তকগুলি দ্বারা এক-একটা জাতিকে তাহাদের নিজের শ্রেষ্ঠতা-বোধ দ্বারা অহঙ্কত করিয়৷ তুলিয়া গ্রন্থলিখনের যে অপব্যবহার করিয়াছেন, তদপেক্ষা অপব্যবহার তাহারা আর কখন করেন নাই। নিজের জাতি সম্বন্ধে তিনি বলেন যে তাহাদের আপনাদের শ্রেষ্ঠতা দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিলে তাহারা অন্যজাতিসকলকে অবজ্ঞ করিয়া তাহাদিগকে অধঃপাতিত করিতে চেষ্টা করিতে পারে। আরও নিখুত জ্ঞান এবং আরও গভীর অস্তদৃষ্টি সকল লোককে শিক্ষা দিতে পারে যে প্রতিযোগিতায় যত লাভ হয় বন্ধুত্ব দ্বারাও তত হয়, এবং বিদ্বেষ অপেক্ষা প্রেম দ্বারা বেশী লাভবান হওয়া যায়। ヘヘヘヘヘ。 লাভলোকসান ধরিতে গেলে ব্রাইস যাহা বলিয়াছেন l | ২য় সংখ্যা ] സ്.സി.സി.സി.സംസ്.സി.റ്റി.സ ঠিক নয়। কারণ ধৰ্ম্মবুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকে ক্ষতিলাভ গণনার অধীন করিলে অনেকস্থলে মাহুষ ধৰ্ম্মপথ পরিত্যাগ করিবে। আপাতত: যদি ক্ষতিও হয়, তথাপি প্রেম ও বন্ধুত্ব ভাল । আমরা ভাল হইব, আমরা বড় হইব, এইরূপ ইচ্ছা স্বাভাবিক ও বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আমরা সকলের চেয়ে ভাল ও বড় থাকিব বা হইব, এরূপ ইচ্ছা জগতে শাস্তিরক্ষার অমুকুল নহে। কাহাকেও যদি বল, তুমি চিরকাল ছোট থাকিবে, তাহাতে তাহার অপমান হইবে । সে সেই অপমানকর অবস্থায় চিরকাল কেন থাকিবে ? যে তাহাকে ছোট রাখিতে চায়, তাহাকে সে ভাল বাfসবে কেমন করিয়া ? বাস্তবিকও ইতিহাসে দেখা যাইতেছে, কোন জাতিই চিরকাল বড় ছিল না, কোন জাতিই চিরকাল বড় থাকে না ; এখন যাহারা শক্তিহীন ও অনুন্নত, তাহাদের মধ্যে অনেকে পূৰ্ব্বে শক্তিশালী ও উন্নত ছিল। অনেকে অধঃপতিত হইয়া আবার সবল ও উন্নত হইয়াছে। অতএব যাহারা ধাৰ্ম্মিক, প্রেমিক, মানবজাতির প্রতি মৈত্রীভাবাপন্ন, তাহাদের পক্ষে এইরূপ ইচ্ছা হওয়াই স্বাভাবিক যে আমরাও ভাল এবং বড় হই, তোমরাও ভাল এবং বড় হও ; সকলে বন্ধুভাবে সকলের সমকক্ষত করি। সকল জাতি প্রত্যেক বিষয়ে পরস্পরের সমান হইতে পারে কিনা সন্দেহ । ভৌগোলিক ও অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে কেহ এক বিষয়ে কেহ বা অন্য বিষয়ে বেশী পারদর্শী হইবে। কিন্তু মোটেরউপর সাম্যের ভাবই মানবের লক্ষ্যস্থল হওয়া উচিত। পণের বিরুদ্ধে হিন্দুরাজার ব্যবস্থা। দাক্ষিণাত্যের বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজা দ্বিতীয় দেব রায় আনুমানিক ১৪২২ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৪৪৯ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত রাজত্ব করেন। তাহার রাজত্বকালে মরকতনগর প্রদেশে ব্রাহ্মণদের মধ্যে কন্যাপণ গ্রহণের খুব প্রাদুর্ভাব হয়। দেব রায় মরকতনগর-প্রান্তের তমিল, তেলুগু, কর্ণাট ও লাট শ্রেণীর সমুদয় ব্রাহ্মণদিগের প্রতিনিধিগণকে একত্র করেন। প্রত্যেক গ্রামের অস্তত: একজন লোককে প্রতিনিধি পাঠাইতে আদেশ করা হয়। সকলে সমবেত হইলে বিবিধ প্রসঙ্গ—অবৈতনিক বিদ্যালয় তাহা সত্য। কিন্তু লাভলোবানের কথাটা তোলাই 〉b" এই বৃহংসভায় পণগ্রহণ শাস্ত্রীয় কিনা, তাহার বিচার হয়'। সৰ্ব্বসম্মতিক্রমে স্থির হয় যে উহা অশাস্ত্রীয় । তাহার পর শাস্ত্রের বিধি লঙ্ঘনের দণ্ড কিরূপ হওয়া কৰ্ত্তব্য, তৎসম্বন্ধে আলোচনা হইয়া ধাৰ্য্য হয় যে পাতিত্য এবং সমাজ হইতে বহিস্কার ইহার দণ্ড । অতঃপর রাজা বিবাহ-উপলক্ষে কোনপ্রকার আর্থিক আদানপ্রদান নিষেধ করিয়া দেন, এবং আদেশ করেন যে অপরাধীদিগকে কেবল যে পতিত ও সমাজবহিস্কৃত করা হইবে তাহ নয়, অন্যান্ত অপরাধীদের মত তাহার। সাধারণ আইন অনুসারেও দণ্ডিত হইবে। এই দও কিরূপ ছিল, তাহা ইতিহাস হইতে জানা যায় নাই। দেশীয় রাজ্যে অবৈতনিক শিক্ষা। সাচিন বোম্বাই প্রেসিডেন্সীর একটি ক্ষুদ্র দেশীয়রাজ্য। উহার রাজা আদেশ করিয়াছেন যে আগামী ১লা আগষ্ট হইতে র্তাহার প্রজারা বিনাব্যয়ে শিক্ষা পাইবে । ভারতবর্ষের আরও কয়েকটি দেশীয়রাজ্যে বালকবালিকারা বিনাব্যয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পাইয়া থাকে। বাঙ্গলাদেশে কেবল কুচবিহার এবং পাৰ্ব্বত্য ত্রিপুরা দেশীয় রাজার অধীন। এই দুই রাজ্যে সমুদয় বালকবালিকা অস্তুত: প্রাথমিকশিক্ষা যদি বিনাব্যয়ে পায়, তাহা হইলে বড় ভাল হয়। বাংলা দেশের অনেক জমিদারের আয় অনেক ছোট ছোট দেশীয়রাজ্যের সমান। তাহারা নিজ নিজ জমিদারীতে যদি সৰ্ব্বত্র অবৈতনিক প্রাথমিক পাঠশালা স্থাপন করেন, তাহা হইলে প্রজাদের মঙ্গল হয়। কৃষি এইসকল পাঠশালার একটি প্রধান শিক্ষণীয় বিষয় বলিয়া নির্দেশ করা কৰ্ত্তব্য। অবৈতনিক বিদ্যালয় । আমেরিকায় সমুদয় বালকবালিকা স্থলসমূহে বিনবেতনে প্রাথমিক ও উচ্চতর শিক্ষা পাইতে পারে। বিলাতে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক। সিংহলদ্বীপে দেশীয়ভাষায় শিক্ষা দিবার বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র ও ছাত্রীদিগকে বেতন দিতে হয় না। মলক্কা, পেনাংৰীপ এবং ওয়েলেসলী প্রদেশে বালকগণ বিনাবেতনে মাতৃভাষায় শিক্ষা পায় ৭ মরিশশদ্বীপে প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক। কানাডার বিদ্যালয়ে বিনাব্যয়ে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা পায়। ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় বিদ্যালয়সকলে বেতন দিতে হয় না। নোভাস্কোশিয়া