পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৬ SSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSS বঙ্গবাসী সিংহলে আসিয়া উপনিবেশ স্থাপন করেন, ইহা ইতিহাসের কথা। সিংহল হইতে বহু বাঙ্গালী বাণিজ্যব্যপদেশে পরশুরাম-ক্ষেত্রে আগমন করিয়া তথায় বঙ্গদেশীয় সভ্যতা বিস্তার করিতে আরম্ভ করেন। ইহা প্রাচীন কিম্বদন্তি। কেবল বঙ্গদেশীয় বণিকগণ যে এই প্রদেশে আসিয়া ধনাগমের পথ সরল করিয়া লইয়াছিলেন তাহা নহে বাঙ্গালীর পদাঙ্ক অনুসরণ করিয়া বহু আরবদেশবাসী এই ক্ষেত্রে শুভাগমন করেন। উপনিবেশে জাতিভেদের প্রকোপ ছিল না, তখন বৌদ্ধ আদর্শেরই প্রভাব । স্বতরাং আরব ও বঙ্গের অধিবাসীবৃন্দ শীঘ্রই এক নূতন সংমিশ্রিত জাতির স্বষ্টি করিলেন। তখনও আরবে মুসলমানধৰ্ম্ম প্রচারিত হয় নাই, হিন্দুধৰ্ম্মের কঠোরতাও তখন ছিল না। স্বার্থের সম্বন্ধে পরম্পরের পরিচয় ও মিশ্রণ হইতে বিলম্ব হইল না। উভয়ের মধ্যে বিবাহাদি সম্বন্ধও স্থাপিত হইল। এইভাবে এক নবজাতির পত্তন হইল। - আরবের অধিবাসীবৃন্দ এই ক্ষেত্রের সহিত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত করিবার পূৰ্ব্বে পূৰ্ব্বউপকূলের নায়ক বা যোদ্ধবৃন্দ ইহার স্বৰূঢ় ও দুলৰ্জ্য গিরিপ্রাচীর ভেদ করিয়া প্রাচীনতম অধিবাসী “থিয়ন”দিগকে পরাজয় করেন। থিয়নগণ রণ-কুশলী ছিলেন না ; নিরীহ কৃষি- ও মৎস্যমাংস-জীবী হইয়৷ ফল-মূল-শস্ত-ভূষণা নদী-স্রোতস্বতী-প্রবহমান এবং মৃগ-মংস্যাদি-বহুল ভূমিথগুকে নিৰ্ব্বিবাদে ও নিশ্চিন্তমনে উপভোগ করিতেছিলেন। পূৰ্ব্ব ও উত্তর প্রাস্তুের পর্বত অধিত্যক ও অরণ্যাদি ভেদ করিয়া অসি বৰ্ম্ম ও ধাতুব্বাণ হস্তে নায়কগণ পঙ্গপালের মত এই দেশে পতিত হইয়া থিয়নগণের অংশীদার হইলেন। অংশীদার ক্রমে প্রভু হইলেন, প্রভূ অবশেষে বিজিতের উপর নির্য্যতন আরম্ভ করিলেন এবং সর্বশেষে দর্শন-সুন্দর দেশসমূহ হইতেও অধিকতর লাভজনক ব্যবসায় ও উচ্চতর সম্মানের কৰ্ম্মসকল হইতে বিতাড়িত করিয়া সৰ্ব্ববিষয়ে ইহাদিগকে জেতার অধীনতা স্বীকার করাইলেন । ক্রমে নায়কদিগের পশ্চাতে হিন্দুসভ্যতা ও বৈষ্ণবধৰ্ম্মও তথায় শুভাগমন করিল, কেননা নায়কগণ হিন্দু ও বৈষ্ণব। এই হিন্দুসভ্যতা ও ধৰ্ম্ম-প্রচারের উদ্দেশ্যে যাহারা আগমনু করিলেন প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩২২ SSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSSMSSS [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড তাহারাও বঙ্গদেশবাসী। ইহঁাদিগের মধ্যে সৰ্ব্বপ্রধান হইলেন নম্বন্দ্রী ব্রাহ্মণ। এতদ্ভিন্ন কোঙ্কনি প্রভৃতি পঞ্চ-গৌড়ী ব্রাহ্মণও ক্রমে ক্রমে এই প্রদেশে আগমন করিয়া বসবাস আরম্ভ করিলেন। এই সকল কোঙ্কনি প্রভৃতি ব্রাহ্মণগণের মধ্যে এখনও বঙ্গীয় ব্রাহ্মণত্বের বহু দাবীচিহ্ন বর্তমান ; যেমন র্তাহাদের মংশুভক্ষণ-বিধি । নমূদ্রী নেতাগণ নবসভ্যতার ছন্দুভিধ্বনি নিনাদিত করিতে করিতে এদেশে আসিয়া সৰ্ব্বপ্রথমেই আপনাদিগকে সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ ও সৰ্ব্বোচ্চ বলিয়া সাধারণের নিকট প্রচার করিলেন। তাহাদিগের বাসস্থানের জন্য ভিন্ন পী নির্দিষ্ট হইল, স্নানাদি শোচের জন্য ভিন্ন তড়াগ নির্দিষ্ট হইল। তিনি ধৰ্ম্মের নেতা, সমাজের কৰ্ত্তা, রাষ্ট্ৰীয় ব্যাপারে তিনি বিধি-প্রণেতা বা আইনকৰ্ত্ত ও নম্বীপাদ হইলেন স্বাধীন স্বতন্ত্র এবং সকলের প্রভু। এমন কি দেশ-নায়কগণও ইহার নিকট অবনত মস্তকে দণ্ডায়মান হইতেন। নমূদ্রী সৰ্ব্ববিষয়ে প্রভৃ হইয়াও এক বিষয়ে কিন্তু আপনার স্বতন্ত্রতার গৰ্ব্ব অক্ষুণ্ণ রাথিতে পারিলেন না; তিনি সামাজিক জীব, সমাজস্থিতির অত্যাবশ্যকীয় বিধানে তাহার উদ্বাহ ক্রিয়ার জন্য সহধৰ্ম্মিণীর সন্ধানে তাহাকে বড়ই বিপন্ন হইতে হইল। এসকল অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালের কথা । উত্তর-ভারতে তখন বোধ হয় মুসলমান প্রাদুর্তাব আরম্ভ হইয়াছে। সেই পদব্রজে বা গো-যানে যাতায়াতের দিনে হিন্দু ললনার পক্ষে হিমালয়-প্রাস্ত হইতে কক্ষীকুমারিক প্রদেশে গতায়াত করা নিতান্ত নিৰ্ভয়-যাত্র ছিল না। তদ্ভিন্ন উত্তরভারতের ব্রাহ্মণ-সমাজের লোকেরা এই অজ্ঞাত দূরদেশে স্বেচ্ছায় পুত্র কন্যা প্রেরণ করিতে নিতান্তই অনিচ্ছুক হইল। সুতরাং নমূদ্র প্রমাদ গণিলেন। তাহার সংসারের আশায় বুঝিবা জলাঞ্জলি দিতে হয়। অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া তিনি অসবর্ণ বিবাহে সম্মত হইলেন। স্মৃতি ও পুরাণ এ বিষয়ে তাহার সহায়তা করিল। নমূদ্রীপাদ অসবর্ণ বিবাহে সম্মত হইয়া নায়কবংশীয় রমণীকে বিবাহ করিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করিলেন। বোধ হয় এই বিষয়ে বহু আন্দোলন ও আলোচনার পর বিবাহের সমুদায় বিস্তৃত কথা মীমাংসিত হইয়া গিয়াছিল। নায়ার রমণী ২য় সংখ্যা ] श्रीमदानन्दनार्थभगवत्पादाचार्यकराचित मन्थपाशधर श्री उडुपैाकृष्ण. শ্ৰীমদ আনন্দতীর্ণ ভগবৎ-পাদাচাৰ্য-কর্যচ্চিত মঞ্চ-পাশ ধর ঐউড়,প কৃষ্ণ । সেই সঙ্গে ইহাও স্থির হইল যে সম্পত্তির অধিকার কন্যাতে বৰ্ত্তিবে, পুত্রে নহে। বর্তমান সময়ে নম্বন্দ্রী-সমাজে দুইপ্রকার বিবাহ প্রচলিত। প্রথম “কল্যাণম্,” দ্বিতীয় "সম্বন্ধম্।" প্রথম বিবাহ সবণ এবং বিধিসঙ্গত যজ্ঞাদি করিয়া, আর দ্বিতীয় বিবাহ অসবর্ণ এবং অতি সামান্ত আহুষ্ঠানের দ্বারা । এই দ্বিতীয় প্রকারের অসবর্ণ সম্বন্ধম বিবাহ সামান্য একটা মন্ত্ৰ পাঠ করিয়া ও কিছু বস্ত্র উপহার প্রদান করিয়া হয়। এই সম্বন্ধম বিবাহের স্ত্রী-পরিত্যাগের বিধিও সহজ। এইরূপ পরিত্যক্ত স্ত্রীর দ্বিতীয়বার বিবাহেও আপত্তি নাই । বিগত কয়েকবৎসর এই সম্বন্ধম বিবাহের বিরুদ্ধে সমাজনেতৃগণ নমূদ্রীপাদের সহধৰ্ম্মিণী হইতে প্রতিশ্রত হইলেন কিন্তু যুদ্ধঘোষণা করিয়াছেন। আমার ত্রিবাঙ্গরে অবস্থানকালে সেই রাজ্যে এক আইন বিধিবদ্ধ হইয়াছে, তাহার বলে পরশুরাম-ক্ষেত্র & - a সম্বন্ধম্ বিবাহের অনিষ্টকারিত। অনেক লাঘব করা স্থাছে। এখন নম্বী মহোদয় নায়ক বা নায়ার-বংশজা রমণীর পাণিগ্রহণ করিয়া আর তাহাকে পরিত্যাগ করিতে পরিবেন না। ত্রিবাস্থর-রাজ্যভূক্ত নায়ারগণ এই আইন পাশ হওয়ায় মহোৎসব করিয়াছিলেন। এমন কি ব্রিটিশরাজ্যভূক্ত নায়ারগণও তাহদের ত্রিবাস্থর-রাজ্যভূক্ত স্ব-জাতীয়গণের সৌভাগ্যের জন্য তাহাদিগকে ধন্যবাদ দিলেন এবং উড় পী কৃষ্ণের মন্দির। রাজারও বিশেষ প্রশংসা করিলেন। বর্তমানকালে নায়ারগণ এক মিশ্রজাতি । ইহারা আকুতি ও প্রকৃতিতে বহুল রূপে বাঙ্গালিরই মত। বুদ্ধিতে ও পদমৰ্য্যাদায় তাহার আমাদের কায়স্থ ভদ্রলোকদিগেরই অনুরূপ। . এই নম্বুদ্র বনাম নায়ার ভিন্ন অন্য দুই পথ দিয়াও এই প্রদেশে মিশ্রজাতির সংগঠন হইষাছে ও হইতেছে। এই দ্বিতীয় প্রকারের সংমিশ্রণ অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালের হইলেও সংখ্যা হিসাবে ইহাদিগকেও অগ্রাহ করা