পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার সম্বন্ধে, দেশের সম্বন্ধে নয়। এইজন্য দায়ে পড়ে নিজের সকল প্রকার অযোগ্যতা সত্বেও কাজে নামতে হল। --- --- - - g যাতে কয়েকটি গ্রাম নিজের শিক্ষা স্বাস্থ্য আর্থিক উন্নতি , প্রভৃতির ভার সমবেত চেষ্টায় নিজের গ্রহণ করে আমি সেই চেষ্টায় প্রবৃত্ত হলুম। দুই একটি শিক্ষিত ভদ্রলোককে ডেকে বললুম “তোমাদের কোনে দুঃসাহসিক কাজ করতে হবে না—একটি গ্রামকে বিনা যুদ্ধে দখল কর।” এজন্য আমি সকল প্রকার সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিলুম এবং সংপরামর্শ দেবারও ক্রটি করিনি। কিন্তু আমি কৃতকা ্য হতে পারিনি। তার প্রধান কারণ, শিক্ষিত লোকের মনে অশিক্ষিত জনসাধারণের প্রত একটা অস্থিমজ্ঞাগত অবজ্ঞা আছে। থ শ্রদ্ধা ও প্রীতির সঙ্গে নিম্নশ্রেণীর গ্রামবাসীদের সংসর্গ iাদের পক্ষে কঠিন। আমরা ভদ্রলোক, সেই ভদ্র জ্ঞান করে এক মুহূৰ্ত্তে আমাদের পদানত হবে, আমরা যা বলব তাই মাথায় করে নেবে, এ আমরা প্রত্যাশা করি। ঘটে উন্টে। গ্রামের চাষীরা ভদ্রলোকদের বিশ্বাস তারা তাদের আবির্ভাবকে উৎপাত এবং তাদের - ংলবকে মন্দ বলে গোড়াতেই ধরে নেয়। দোষ দেওয়া ন—কারণ, যার উপরে থাকে তারা অকারণে উপকার o তাদের হিত করতে এসেছি, এটাকে তার পরম সৌভাগ্য —উণ্টোটাই দেখতে পায়। তাই, যাদের বুদ্ধি তারা বুদ্ধিমানকে ভয় করে। গোড়াকার এই (সকে এই বাধাকে নম্রভাবে স্বীকার করে নিয়ে যারা কাজ করতে পারে তারাই এ কাজের যোগ্য। নিম্নশ্রেণীর কৃতজ্ঞতা, অশ্রদ্ধাকে বহন করেও আপনাকে তাদের কাজে করতে পারে এমন লোক আমাদের দেশে তল্ল আছে। কারণ নীচের কাছ থেকে সকল প্রকারে সম্মান ও বাধ্যত৷ দাবী করা আমাদের চিরদিনের অভ্যাস । আমি যাদের প্রতি নির্ভর করেছিলুম তাদের দ্বারা কিছু হয়নি—কখনো কখনো বরঞ্চ উংপাতই হয়েছে। আমি নিজে সশরীরে এ কাজের মধ্যে প্রবেশ করতে পারিনি, কারণ অামি আমার অধোগ্যতা ও নি। অামার - - - . মনে এদের প্রতি অবজ্ঞা নেই কিন্তু আমার আজন্ম কালের শিক্ষা ও অভ্যাস খামার প্রতিকূল । যাই থুেক-আমি পারিনি তার কারণ আমাতেই বৰ্ত্ত • মান—কিন্তু পরিবার বাধা একান্ত নয় । এবং তামাদের প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২২ - -- - SMMMMSMSMSMSMMSMMSMMSMMSMSJJMSJJJJJJJSMSMJJJJJJSSSJSJSS ベーへへヘヘヘへペーヘヘヘヘー বলে পুণ্যকৰ্ম্ম, এতে লাভ আমারই—এতে অপর পক্ষের o ---. [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড । সম্পূর্ণ লাভ নেই, বরঞ্চ গতি আছে। তা ছাড়া,আমি ? ভাল কাজ করব এদিকে লক্ষ্য না করে যদি ভালে৷ করব এই দিকেই লক্ষ্য করতে হয় তা হলে স্বীকার । করতেই হবে বাইরে থেকে একটি একটি করে উপকার করে আমরা দুঃখের ভার লাঘব করতে পারিনে । এইজন্যে উপকার করব না, উপকার ঘটাব, এইটেই আমাদের লক্ষ্য হওয়৷ চাই। যার অভাব আছে তার অভাব মোচন করে শেষ করতে পারব না, বরঞ্চ বাড়িয়ে | তুলা, কিন্তু তার অভাব মোচনের শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে । হবে। আমি যে গ্রামের কাজে হাত দিয়েছিলুম সেখানে ' জলের অভাবে গ্রামে অগ্নিকাণ্ড হলে গ্রাম রক্ষা কর। কঠিন । হয় । অথচ বারবার শিক্ষা পেয়ে ও তারা গ্রামে সামান্য একটা কুয়ো খুড়তেও চেষ্টা করেনি। আমি বল্লুম "তোরা | যদি কুয়ো খুড়ি তা হলে বাধিয়ে দেবার খরচ আমি | দেব।”—তারা বল্লে, "এ কি মাছের তেলে মাছ ভাজা !” | এ কথা বলবার একটু মানে আছে। আমাদের দেশে । পুণ্যের লোভ দেখিয়ে জলদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতএব যে লোক জলাশয় দেয় গরজ একমাত্র তারই। এইজন্যই যখন গ্রামের লোক বল্লে, মাছের তেলে মাছ | ভাজা, তখন তারা এই কথাই জানত যে, এক্ষেত্রে ফেমাছটা । ভাজা হবার প্রস্তাব হচ্চে সেটা আমারি পারত্রিক ভোজের । —অতএব এটার তেল যদি তারা জোগায় তবে তাদের | ঠক হল। এই কারণেই বছরে বছরে তাদের ঘর জলে { যাচ্চে, তাদের মেয়ের প্রতিদিন তিন বেলা দুতিন মাইল । দূর থেকে জল বয়ে আনচে, কিন্তু তারা আজ পর্য্যন্ত বসে | আছে যার পুণ্যের গরজ সে এসে তাদের জল দিয়ে যাবে। } যেমন ব্রাহ্মণের দরিদ্র্যমোচনের দ্বারা মন্যের পারলৌকিক স্বার্থসাধন যদি হয় তবে সমাজে ব্রাহ্মণের দা িদ্র্যের মূল্য অনেক বেড়ে যায়। তেমনি সমাজে জল বল অল্প বল বিদ্য। বল স্বাস্থ্য বল যে-কোন অভাব, মোচনের দ্বারা ব্যক্তিগত পুণ্যসঞ্চয় হয় সে অভাব নিজের দৈন্যে নিজে লজ্জিত হয় না, এমন কি, তার একপ্রকার অহঙ্কার থাকে। সেই অহঙ্কার ক্ষুব্ধ হওয়াতেই মানুষ বলে উঠে, “এ কি মাছের তেলে মাছ ভাজা !” Q এতদিন এমনি করে একরকম চলে এসেছিল । কিন্তু এখন আর চলবে না। তার দুটে। কারণ দেখা যাচ্চে । , প্রথমত বিযয়বুদ্ধিটা আজকাল ইহলোকেই আবদ্ধ হয়ে । উঠচে–পারলৌকিক বিষয়-বুদ্ধি অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে এখন | অন্তঃপুরের দুই-একটা কোণে মেয়ে-মহলে স্থান নিয়েছে। পরকালের ভোগমুথের বিশেষ একটা উপায়ুরূপে পুণ্যকে ] এখন অল্প লোকেই বিশ্বাস করে। তারপরে দ্বিতীয় কারণ ১ম সংখ্যা ] SSASAS A SAS SSAS SSASJMS MSJSJSJSS এই, যারা নিজেদের ইহকালের সুবিধা --- উপলক্ষ্যেও পল্লীর

  • বৃদ্ধিসাধন করতে পারত তারা এখন সহবে সহরে দূরে

দূরে. ছড়িয়ে পড়চে । কৃতী সহরে যায় কাজ করতে, ধনীসহরে যায় ভোগ করতে, জ্ঞানী সহরে যায় জ্ঞানের চর্চ। করতে, রোগী সহরে যায় চিকিৎসা করাতে । এটা ভাল কি মন্দ সে তর্ক করা মিথ্য। —এতে ক্ষতিই হোক আর যাই হোক এ অনিবাৰ্য্য । অতএব যার নিজের পরকাল বা ইহকালের গরজে পল্লীর হিত করতে পারত তার অধিকাংশই পল্লী ছেড়ে অন্যত্র যাবেই । এমন অবস্থায় সভা ডেকে নাম সই করে একটা কৃত্রিম হিতৈষিতাবৃত্তির উপর বরাত দিয়ে আমরা যে পল্লীর উপকার করব এমন আশা যেন না করি। আজ এই কথা পল্লীকে বুঝতেই হবে যে তোমাদের অন্নদান জলদান বিদ্যাদান স্বাস্থ্যদান কেউ করবে না। ভিক্ষার উপরে তোমাদের কল্যাণ নির্ভর করবে এতবড় অভিশাপ তোমাদের উপর যেন না থাকে। আজ গ্রামে পথ নেই, জল শুকিয়েছে, মন্দির ভেঙে গেছে, যাত্র গান সমস্ত বন্ধ, তার একমাত্র কারণ এতদিন যে-লোক দেবে এবং যে-লোক নেবে এই দুই ভাগে গ্রাম বিভক্ত ছিল। একদল আশ্রয় দিয়ে থ্যাতি ও পুণ্য পেয়েছে, আর এক দল আশ্রয় নিয়ে অনায়াসে আরাম পেয়েছে। তাতে তার অপমান বোধ করেনি, কারণ তারা জানত এতে অপর পক্ষেরই লাভ পরিমাণে অনেক বেশি। কারণ মৰ্ত্তে ঘে-ওজনে দান করি স্বর্গে তার চেয়ে অনেক বড় ওজনে প্রতিদান প্রত্যাশ করি । এখন যখন সেই অপর পক্ষের পরিত্রিক লাভের থাত একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে, এবং যখন তারা নিজে গ্রামে বাস করলে নিজের গরজে জল বিদ্যা স্বাস্থ্যের যে ব্যবস্থা করতে বাধ্য হত তাও উঠে গেছে, তখন আত্মহিতের জন্য গ্রামের আত্মশক্তির উদ্বোধন ছাড়া তাকে কোনমতেই কোনো দয়ায় ব৷ কোন বাহ ব্যবস্থায় বাচানো যেতেই পারে না । আজ আমাদের পল্পীগ্রামগুলি নিঃসহায় হয়েছে, এইজন্য আজই তাদের সত্যসহায় লাভ করবার দিন এসেছে। আমরা যেন পুনৰ্ব্বার তাতে বাধা দিতে ন বসি । আমরা যেন হঠাং সেবা করবার একটা সাময়িক উত্তেজনা নিয়ে সেবার দ্বার। আবার তাদের দুৰ্ব্বলতা বাড়িয়ে তুলতে ন৷ থাকি । দুৰ্ব্বলত। যে কি রকম মজ্জাগত তার একটা দৃষ্টান্ত দিই। আমি আমাদের শান্তিনিকেতন আশ্রম থেকে কিছুদূরে এক জায়গায় একলা বাস করছিলুম। হঠাৎ রাত্রে আমাদের বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছেলে লাঠি হাতে আমার কাছে এসে উপস্থিত । তাদের জিজ্ঞাসা করাতে বল্পে, একট। ঢাকাতির গুজব শোন। গেছে তাই তারা - পল্লীর উন্নতি । • * * - - - ১৯ - ... S AASAASAASAASAASAASAASAASAA AMAMAMAMAMAAAASASASS - - আমাকে রক্ষা করতে এসেছে। পরে শোনা গেলব্যাপার । খান এই –কোনো ধনীর এক পেয়াদা তরলাবস্থা রাত্রে পথ দিয়ে চলছিল, চৌকিদারের অবস্থাও সেইরূপ ছিল । সে অপর লোকটাকে চোর বলে ধরাতে এরট । মারামারি বাধে। দুচারজন লোক যোগ দেয় অথবা গোল- মাল করে। অমনি বোলপুর সহরে রটে গেল যে পাচ- , শে ডাকাত বাজার লু করতে আচে। বোলপুরে । কেউ বা দরজায় স্কু এটে দিলে, কেউ বা টাকাকড়ি । নিয়ে মাঠের মধ্যে গিয়ে লুকোলো, কেউ বা শান্তিনিকেত সঞ্জীক এসে আশ্রয় নিলে। অথচ শান্তিনিকেতনের ে সেই রাত্রে লাঠি হাতে করে বোলপুরে ছুটলি - - - * কারণ এই বোলপুরের লোক নিজের শক্তিকে অতু করে না। এইজন্য সামান্ত দুই-চারজন মাহুষ মিথ্য দেখিয়ে সমস্ত বোলপুর লণ্ডভণ্ড করে যেতে পারত। শাস্তি- , নিকেতনের বালকদের শক্তি তাদের বাহুতে নয়, তাদের । অন্তরে | -- বোলপুর-বাজারে যখন আগুন লাগল তখন - যে কারে সাহায্য করবে তার চেষ্টা পৰ্য্যন্ত দেখা গেল না। । এক ক্রোশ দূর থেকে আশ্রমের ছেলেরা যখন তা আগুন নিবিয়ে দিলে তখন নিজের কলসটি দিয়ে কেউ তাদের সাহায্য করে নি, সে কলসী জোর করে কেড়ে নিতে হয়েছিল। এর ক - আমরা বুঝি, এমন কি গ্রাম্য আত্মীয়তার ভাবও আমা- . দের বেশি কম থাকতে পারে, কিন্তু সাধারণ হিত আমরা বুঝিনে এবং এইটে বুঝিনে যে সকলের শক্তির মধ্যে নিজের অজেয় শক্তি আছে । আমার প্রস্তাব এই যে বাংলাদেশের যেখানে হোক । একটি গ্রাম আমর, হাতে নিয়ে তাকে আত্মশাসনের । শক্তিতে সম্পূর্ণ উদ্বোধিত করে তুলি। সে গামের রাস্ত । ঘাট, তার ঘর বাড়ির পারিপাট্য, তার পাঠশাল, সাহিত্যচর্চা ও আমোদপ্রমোদ, তার রোগী-পরিচর্য্যা ও । চিকিৎস, তার বিবাদ নিপত্তি, প্রভৃতি সমস্ত কার্য স্ববিহিত নিয়মে গ্রামবাসীদের দ্বারা সাধন করবাবু উদ্যে আমরা করি। যারা এ কাজে প্রবৃত্ত হবেন তা প্রস্তুত করবার জন্যে আপাতত কলকাতায় একটা বিদ্যালয় স্থাপন করা আবশ্যক । এই বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছা- , ব্ৰতী শিক্ষকদের দ্বারা প্রজাস্বত্বসম্বন্ধীয় আইন, জমি জরীপ . . ও রাস্তাঘাট ড়ে নপুকুর ঘরবাড়ি তৈরি, হঠাৎ কোনো 7 , সাংঘাতিক আঘাত প্রভৃতির উপস্থিতমতু চিকিৎস, ও কৃষিবিদ্যা প্রভৃতি বিষয় সম্বন্ধে মোটামুটি শিক্ষা দেবার . ব্যবস্থা থাক কৰ্ত্তব্য। পাশ্চাত্য দেশে গ্রাম প্রভৃতির । আর্থিক ও অন্যান্য উন্নতি সম্বন্ধে আজকাল ফেসব চেষ্টার । - - - --- --- -