পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- - - - - - - - - - - - - wo& 8 ঘুণ ঢুকিয়াছে। বৃদ্ধ বয়সেও একজন ইংরেজ যেরূপ বালকের উৎসাহে ছুটাছুট, হুটোপাটি খেলার কৌতুকে যোগদান করে তাহ আমাদের আবার নুতন করিয়া শিপিয়৷ লওয়া কৰ্ত্তব্য মনে করিতেছি । কিন্তু যদি আম্মদেশীয় কোন ভদ্রসস্তান আজকাল ডন ও কুস্তীর আগাড়ায় কসরং করিয়া "লালমাটা" মাখিতে আরম্ভ করেন তবে তিনি বিংশ শতাব্দীর "আদর্শ বাবুদের" নিকট ঘূণাস্পদ হইবেন সন্দেহ নাই। আজকাল স্কুলের ছাত্রদিগের মধ্যে কেহ কেহ ফুটবল, ব্যাটবল খেলায় যোগদান করিয়া এবং কেহ কেহ বা স্যাণ্ডোর প্রণালীতে ডাম্বেল ভাজিয়া কসরত করিতেছেন বটে। মল্লক্রীড়ার এই দুৰ্গতির দিনে কয়েক বৎসর যাবত চট্টগ্রামে বাস করিয়া তাহার যে একটি সজাগ চিত্র দর্শন করিতেছি এবং তাহার ভিতর যে একটা চেতনার আভাস পাইতেছি তাহাই আজ পাঠকগণের নিকট উপস্থিত করিতে প্রাসী হইলাম। - স্ববোঙ্গালার অন্যান্ত জিলা এরূপ সমারোহ মন্ত্রীড়া অনুষ্ঠিত : না তাহ জানি না। বাল্যকালে বঙ্গদেশের সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ নগরী কলিকাতায় এবং যৌবনে ঢাকায় বাসকালে ২১টি পশ্চিমী পালোয়ানের কুস্তী-ক্রীড়ার অভিনয় দর্শন করিয়াছি, কিন্তু এত সমারোহ ও এত আড়ম্বর তাহাতে দেখি নাই। এবং সেখানে মন্ত্রীড়া এরূপ কৌলিক "বারমাসে তের পাৰ্ব্বণের” পৰ্য্যায়ভুক্ত নহে। এখানকার মল্লক্রীড়ার (বলীখেলার অনুষ্ঠাতার প্রত্যেক বৎসর নির্দিষ্ট দিনে এই ব্যাপারের অঙ্গুষ্ঠান করিয়া থাকেন। পিতার অনুষ্ঠান পুত্রে রক্ষা করিয়া আসিতেছে। অতষ্ঠানের তারিখ পূৰ্ব্ব হইতে সৰ্ব্বত্র বিজ্ঞাপনাদি এবং নিমন্ত্রণ-পত্ৰ বিলি করিয়া প্রচারিত হইয়া থাকে। নানাস্থানের বলীগণকে আহবান করা হইয় থাকে। চট্টগ্রামে “বলীখেলার” একটা সাৰ্ব্বজনীনতা আছে । এই জিলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামে বলীখেলার ছোট বড় মেলা হই থাকে । “গাজনের ঢাকে" কাঠি পড়িলে যেমন পূৰ্ব্বকালে চড়কের সন্ন্যাসীদের পিঠ স্থডদুড় করিত, চৈত্র মাসে চট্টগ্রামের বলীদের মধ্যে ও তেমনি একটি উন্মাদন পরিলক্ষিত হয় । এজন্য সম্পন্ন হিন্দু ও মুসলমানগণের মধ্যে প্রবাস’ –আষাঢ়, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড MSMMSMMSMSMSMSMSMS SJSJSJSJJJJJMJJJS অনেকেই রাশি রাশি অর্থ ব্যয় করিয়া থাকেন । সমস্ত জিলা ব্যাপিয়া কতগুলি “বলীখেলা" হয় তাহার সংখ্যা করা দুরূহ। এক চট্টগ্রাম নিজ সহরেই ১৫৷২০টি খেলার “থল।" ( স্থল ) হইয়া থাকে। তাহাতে দেশের নানাস্থান হইতে বলীগণ আসিয়া নিজ নিজ দক্ষত দেখাইয়া যথাযোগ পারিতোষিক লাভ করিয়া থাকে। আমরা তন্মধ্যে একটি সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ খেলার বিবরণ দ্বারা পাঠকগণকে তাহার একটা আন্দাজ দিতে চেষ্টা করিব । | - আমরা যেটির বর্ণনা করিব তাহ “আবদুল জব্বরের বলীখেলা" বলিয় প্রসিদ্ধ। এই খেল। গত ১৩ই বৈশাখ সোমবার ইয়া গিয়াছে। প্রতি বৎসরই বৈশাগ মাসের এমনি তারিখে এ পেল হইয় থাকে। চট্টগ্রাম সহরের ঠিক বক্ষঃস্থলে পুরাতন কাছারীর (বর্তমান থান ও মাদ্রাস স্থলের ) ইমারতের নিম্নস্থ ময়দানে এই খেলার স্থান কর হইয় থাকে । ময়দানের মধ্যস্থলে মল্পগণের জন্য নির্দিষ্ট রঙ্গস্থল বাদ রাথিয়৷ চারিদিকে লোহার কাটা-তার * দোহার বেড় দেওয়া হয়। তংপর সেই রঙ্গস্থলের ঠিক মধ্যস্থলে একটি উচ্চ স্থপারাগাঙ্গের থাম পুতিয়া তাহার উপরিভাগে একটি “বায়ু-চক্ৰ" বসাইয়৷ দেওয়া श्य, বায়ু । প্রবাহের তাড়নায় তাহ অবিরাম গতিনে ঘুরিতে থাকে, এবং তন্মধ্যে বসান কয়েকটি ছবির তরঙ্গায়িত গতি দেখিতে পাওয়া যায়। স্বপারীগাছের থামটি রঙ্গীন কাগজ দিয়া মুড়িয়া দেওয়া হয় এবং তাহার অগ্রভাগ হইতে কতকগুলি রশিতে ঝুলান বিচিত্রবর্ণের পতাকাশ্রেণী চারিদিকে টানিয়া বাধা হয়। এবং চারিদিকে বংশদণ্ডের উপর নানালর্ণের পতাকা-সপ ল উড়িতে থাকে। রঙ্গস্থলের এক পার্থে কয়েকটি সামিয়ান। খাটাইয়া নিমন্ত্রিত দর্শকগণের বসিবার বন্দোবস্ত করা হয় ( ১নং চিত্র দ্রষ্টব্য )। রবাহূত ব্যক্তিগণ, চারিদিকে দাড়াইয়। বসিয়া গাছে ছাদে চড়িয়৷ এই দৃশ্ব দর্শন করে। পাহাড়ের ঢালুগাত্রে লোকগুলি কেমন গ্যালারীর ন্যায় উপবেশন করিয়াছে তাহ ২নং চিত্র দর্শন করিলেই সহজে অনুমান করা যাইবে - এই ব্যাপারে • চট্টগ্রামের প্রসি। ফটোগ্রাফার বন্ধুবর যুক্ত শশীভূষণ দগিদার মহাশয় ক%ঙ্গীকার করিয়া চিত্রগুলি তুলিয় দিয়া আমাদের ীি রক গুণ ভাজন হইয়াছেন –লেপক । l ৩য় সংখ্য। ] -് ------------> --> -- - - - চট্টগ্রামের বলীখেলা --- - - - - - - - - - - - - - - , , , -, -, -


চট্টগ্রামের বলীখেল । উচ্চপদস্থ বাজকৰ্ম্মচারী হইতে আরম্ভ করি। উকীল আমল શઃ সন্ধান্ত ব্যক্তিগণ সকলেই নিমন্ত্রিত হইয়। থাকেন। এই উদ্দেশে অনেক আফিস আদালতের অৰ্দ্ধ কাছারী হয় । গেলার দিন রাপ্রিভাতের পূৰ্ব্ব হইতে চট্টগ্রামের স্থানীয় ডোম বাদাকরগণের ঢোল কাড়া সানাইয়ের মিশ্রিত একঘেয়ে আওয়াজে প্রাণ ওষ্ঠাগত হইয়া উঠিতে থাকে। এবং ঘন ঘন বোমের আওয়াজ হইতে থাকে। নানা স্থান হইতে দোকানীরা আসিয়া মেলার উপযোগী দোকান সাজাইতে আরম্ভ করে। মেলায় “নাগরদোলা", "রাধাচক", এমন কি ছোটখাট ভূ যে-গেয়ে সার্কাসের দলও আগমন করিয়া থাকে । ক্রমে বলীগণ আসিয়া উপস্থিত হয় । এক-একজন বলীর সঠিত তাহার সহচর সার্থী প্রায় ১০০।১৫০ লোক দলবদ্ধ হইয়৷ আগমন করে। রঙ্গস্থল হইতে ঢোল বাজাইতে বাঞ্জাইতে যাইয় তাহাদিগকে “থলার" মধ্যে আগবাড়াইয়া আনিতে হয় । একে দুয়ে, দশে বিশে, দলে দলে প্রায়ু ...... হাজার দর্শক ক্রীড়াস্থলে সমবেত হয় । মোটর গাড়ী, মোটর বাস, গাড়ী ঘোড়া অবিরামগতিতে সহর তোলপাড় হইতে থাকে। উত্তেজিত জনসঙ্ঘকে পথে আসিতে আসিতে বলীখেলার কথা ভিন্ন অন্য কথা বড় একটা বলিতে শোনা যায় না। কোন বলী বড়, কাহার “তাকত" বেশী, কাহার সঙ্গে কাহার কুস্তী হইবার সম্ভাবন, কে কাহাকে হারাইবে, ইত্যাকার কোলাহলে সংর মুখরিত হইয় উঠে। কেহ কাহাকে জিজ্ঞাসা করিতেছে “সালাম মাউ, কঁড়ে যাওর ?” অন্য উত্তর