পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و ب8b আহবান করিয়াছি। কুশল ত?” বরাহরাত কহিলেন, "মহারাজ, গত দুই বৎসর যাবত আমরা বড়ই মানসিক অশাস্তিতে দিনযাপন করিতেছি।" “কি হইয়াছে ?” “মহারাজ, গুর্জরযুদ্ধের প্রারম্ভে আমার ভগিনীপতি সৰ্ব্বানন্দ ন্যায়ালঙ্কার সামান্য কারণে গৃহত্যাগ করিয়াছেন।” "র্তাহার কি কোন সন্ধান পান নাই?” “শুনিয়াছি সৰ্ব্বানন্দ গৌড়েশ্বরের সেনাদলে প্রবেশ করিয়াছেন। এই সংবাদ শুনিয়া আমি গৰ্গদেবকে ও মহকুমার বাকৃপালদেবকে র্তাহার সন্ধান করিতে অনুরোধ করিয়াছিলাম, কিন্তু তখন কোন সন্ধান পাই নাই। সম্প্রতি গুরুদত্ত নামক মহারাজাধিরাজের একজন সেনানায়ক আপনার সন্ধানে গোকৰ্ণ হইতে ঢেঙ্করীতে আসিয়াছিল ; সে যখন মহানায়ক কমলসিংহের সন্ধানে আমার গৃহে আসিয়াছিল, তখন আমার ভগিনী কণ্ঠস্বর শুনিয়া তাহাকে চিনিয়াছিল, তদবধি গুরুদত্ত বা সৰ্ব্বানন্দের সন্ধানে ফিরিতেছি।” "মহানায়ক, গুরুদত্ত কি ব্রাহ্মণ ?” কমল — উদ্ধবের মুখে শুনিয়াছিলাম যে গুরুদত্তব্রাহ্মণ । - ধৰ্ম্ম।— সৰ্ব্বানন্দ - ন্যায়ালঙ্কার ন্যায়শাস্ত্রের ফঙ্কিক ছাড়িয়া অসি ধারণ করিল কেন ? বরাহ – মহারাজ ! সৰ্ব্বানন্দ আমার ভগিনীকে বড়ই ভাল বাসিত ; সে তাহাকে ছাড়িয়া যাইতে হইবে বলিয়া অর্থে পার্জনে মনোযোগী হয় নাই। কুক্ষণে একদিন আমার ভগিনী, আমার পত্নীর অঙ্গে নূতন অলঙ্কার দেখিয়৷ সৰ্ব্বানন্দের নিকটে সেইরূপ অলঙ্কার চাহিয়াছিল। তখন তাহার অলঙ্কার দিবীর সঙ্গতি ছিল না। সেইদিন সৰ্ব্বানন্দ দুঃখে ক্ষোভে গৃহত্যাগ করিয়াছে। ধৰ্ম্ম ।- কিন্তু গুরুদত্ত অশ্বারোহণে ও অস্ত্রচালনে যেরূপ সুদক্ষ তাহাতে তাহাকে ব্রাহ্মণ বলিয়া মনে হয় না ? বরাহ – মহারাজাধিরাজ ! স্বৰ্গীয় গৌড়েশ্বরের রাজ্যরম্ভের পূৰ্ব্বে দেশ যখন অরাজকতায় উচ্ছন্ন যাইতেছিল, তখন গৌড়বঙ্গবাসী জাতির্নির্বিশেষে অঞ্জবিদ্যা শিথিত । আপনার সাংসারিক সমস্ত প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২ SMMMMMMSSMMSMMMMMMMMJMMJAJSMSMSMSMSMSMSJSJJMJJJS { ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড সৰ্ব্বানন্দ সুদক্ষ অশ্বারোহী, ধনুৰ্ব্বিদ্যায় আমাদিগের মণ্ডলে তাহার সমকক্ষ ছিল না, অসি চালনা করিয়া সে বহুবার গৌড়েশ্বরের সৈনিকদিগকে পরাজিত করিয়াছে। ধৰ্ম্ম — গুরুদত্তের আকৃতি কিরূপ ? কমল – মহারাজের কি স্মরণ নাই যে, গুরুদত্ত সৰ্ব্বদা বৰ্ম্মাবৃত হইয়া থাকিত ? ধৰ্ম্ম ।— ই ; সে কখনও অধিক কথা কহিত না। এই সময়ে একজন দণ্ডধর আসিয়া সংবাদ দিল যে, বিশ্বানন্দ ও উদ্ধবঘোষ দাক্ষিণাত্য হইতে যাত্রা করিয়াছেন। রাষ্ট্রকূটরাজ গোবিন্দ গৌড়েশ্বরের সহিত সন্ধিস্থত্রে আবদ্ধ হইয় গুর্জররাজ্য আক্রমণ করিয়াছেন। কমলসিংহ হাসিয়া কহিলেন, “মহারাজ, গোবিন্দ এতদিনে চক্ৰধারণ করিয়াছেন । এইবারে জয় অবখ্যম্ভাবী ।” ধৰ্ম্মপাল মানমুখে কহিলেন, “মহানায়ক, শেষ রক্ষা হইয়াছে বটে, কিন্তু বৌদ্ধ সঙ্ঘ আমাকে যে নীতি শিক্ষা দিয়াছে, তাহা আমি কখনও বিস্মৃত হইব না।" এই সময়ে আর-একজন দণ্ডধর আসিয়া সংবাদ দিল যে, সেনানায়ক গুরুদত্ত স্কন্ধাবারে অনুপস্থিত, তাহার কোন ৷ সন্ধান পাওয়া যাইতেছে না। তখন গৌড়েশ্বর ধীরে ধীরে কহিলেন, ‘ধৰ্ম্মাধিকার, সৰ্ব্বানন্দ ন্যায়ালঙ্কার যদি সত্য সত্যই গুরুদত্ত নাম ধারণ করিয়া থাকে, তাহ হইলে আমি তাহাকে ধরিয়া আনিয়া দিব, দুই একদিন বিলম্ব হইবে মাত্র। আপনাকে যে কাৰ্য্যের জন্য আহবান করিয়াছি, তাহা শ্রবণ করুন,—আমি ঢেঙ্করীতে আসিয়া শুনিলাম, যে মহাদেবী কল্যাণীর মাতৃবিয়োগ হইয়াছে। মহাদেবী গোকর্ণের দুর্গবাসিনীর একমাত্র সস্তান, তিনি মাতৃবিয়োগসংবাদ শ্রবণ মাত্র অতিশয় কাতর হইয়া পড়িবেন, অতএব আমার আমুরোধ যে, মহাশয় আপনার পত্নী অথবা ভগিনীর স্বার। এই সংবাদ তাহার নিকট ব্যক্ত করুন।” বরাহরাত কিযুৎক্ষণ অবনত মস্তকে চিস্তা করিলেন, এবং তাহার পরে কহিলেন, “কাৰ্য্যটি অত্যন্ত দুরূহ, তবে সম্রাট যখন আদেশ করিতেছেন, তখন তাহ প্রতিপালিত হইবে।” ধৰ্ম্মাধিকার এই বলিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন। -- ধৰ্ম্মপাল কমলসিংহকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহানায়ক, গুরুদত্ত কে ?” ৪র্থ সংখ্যা] .... ধৰ্ম্মপাল । 8brጳ ുഹസ്.സ.സ്.സസ്SumitaBot (আলাপ) ০৮:৩২, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)് AASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS “সমস্যা।” কম্প হইয়াছিল, সেই বৎসর ভূমিকম্পের অর্ধদও পরে “পুরণ করিবে কে ?” কল্যাণীর জন্ম হইয়াছিল।” প্রেম ৷” সন্ন্যাসী উদ্ধবঘোষের হস্ত পরিত্যাগ করিলেন। এবং শুষ্ক কাষ্ঠখণ্ড গ্রহণ করিয়া ভূমিতে রেখাঙ্কণ করিতে আরম্ভ দশম পরিচ্ছেদ - হণ করিয়া ভূমিতে রেখাঙ্কণ কারতে অ করিলেন। কিয়ংক্ষণ পরে কহিলেন, “উদ্ধব, কল্যাণীর চক্রের পরিবর্তন । বিবাহ হইয়া গিয়াছে।” সন্ধ্যাকালে পথিপার্থে আম্রকুয়ে স্থাপিত শিবিরে বসিয়া একজন গৈরিকধারী সন্ন্যাসী ও একজন বর্ষীয়ান যোদ্ধা আলাপ করিতেছিলেন। গ্রীষ্মকাল । বস্ত্রাবাসের অভ্যস্তরে তাপ অসহ । সেইজন্য পান্থদ্বয় বৃদ্ধ-সহকারতলে শয্যা বিছাইয়া বিশ্রাম করিতেছিলেন। কিঞ্চিদরে বৃক্ষতলে শতাধিক সেনা ও পরিচারক রন্ধনের উদ্যোগ করিতেছিল ; বস্ত্রাবাসের চারিকোণে চারিজন অস্ত্রধারী সেনা প্রতীহার রক্ষায় নিযুক্ত আছে। বৃদ্ধ বলিতেছেন, “প্রভূ, জীবনের সকলকার্য্যই শেষ করিয়া আনিয়াছি, একটিমাত্র অবশিষ্ট আছে।” সন্ন্যাসী জিজ্ঞাসা করিলেন, “সেটি কি ?" “কল্যাণীর বিবাহ । কল্যাণীকে গৌড়েশ্বরের হস্তে সমর্পণ করিলেই, আমি নিশ্চিন্ত হইয়া মরিতে পারিৰ ।” "এইবারে যুদ্ধ শেষ হইবে, সুতরাং কল্যাণীর বিবাহের অধিক বিলম্ব নাই ।” - “প্ৰভু ! বহুকাল পূৰ্ব্বে শুনিয়াছিলাম যে, জ্যোতিষশাস্ত্রে আপনার অসাধারণ অধিকার আছে। কবে কল্যাগীর বিবাহ হইবে ; কবে আমার মুক্তি হইবে—অনুগ্রহ করিয়া গণিয়া বলিয়া দিবেন কি ?” সন্ন্যাসী ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, “কল্যাণীকে না দেখিয়া কেমন করিয়া তাহার ভাগ্য গণনা করিব ? চল দেশে ফিরিয়া কল্যাণীর ভাগ্য পরীক্ষা করিব।” “প্ৰভু! আমার মুক্তি কবে হইবে তাহা কি গণিয় বলিতে পারেন না ?” “পারি, তুমি অগ্রসর হইয়া আইস ।" বৃদ্ধ সন্ন্যাসীর নিকটে সরিয়া বসিলেন। সন্ন্যাসী অনেকক্ষণ --তাহার হস্ত পরীক্ষা করিয়া কহিলেন, "উদ্ধব ! কল্যাণী কবে জন্মিয়াছিল, তাহা কি তোমার স্মরণ আছে ?” "আছে ; যে বৎসর আশ্বিন মাসের ঝড়ের দিন ভূমি "অসম্ভব প্ৰভু ! আমার অনুপস্থিতিতে কি কখনও কল্যাণীর বিবাহ হইতে পারে ?" “ছ, কল্যাণীর বিবাহ হইয়া গিয়াছে, নয় তাহার সময় উত্তীর্ণ হইয়াছে।” এই সময়ে আম্রকুঞ্জ মুখরিত করিয়া করুণ কোমলকণ্ঠ হইতে সঙ্গীতধ্বনি উঠিল, পথ দেখায়ে দে, তোরা পথ দেখায়ে দে । অামি পথ-হারা,— ও গে দিশে-হারা,— আমায়ু পথ দেখায়ে দে৷ সন্ন্যাসী কাষ্ঠখণ্ড ফেলিয়া উদ্‌গ্ৰীব হইয়া গান শুনিতে লাগিলেন। সঙ্গীতধ্বনি ক্রমে নিকটে আসিতে লাগিল। উদ্ধবঘোষ দেখিলেন একটি কৃষ্ণকায় মলিনয়িবস্তুপরি হিত শীর্ণদেহ বালক পথ ধরিয়া উত্তর দিকে চলিয়াছে। উদ্ধবঘোষ ও সন্ন্যাসী বিশ্বানন্দ যে পথ অবলম্বন করিয়া গৌড়ে ফিরিতেছিলেন, সে পথ পুরুষোত্তমের পথ। সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বেও গৌড় হইতে পুরুষোত্তম যাইবার স্বন্দর পথ ছিল। মুসলমান ও ইংরেজরাজার নিৰ্ম্মিত পথের পার্শ্বে এখনও হিন্দু রাজার নিৰ্ম্মিত পথ স্থানে স্থানে দেখিতে পাওয়া যায়। যাহার লৌহবত্ব বা বৰ্ত্তমান রাজপথ ছাড়িয়া, শ্বাপদসঙ্কুল বনমধ্যে প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের সন্ধান করে তাহারা এখনও উড়িষ্যার পথে শত শত স্থানে প্রাচীন যুগের প্রশস্ত রাজপথের চিহ্ন দেখিতে পায়। তখনও সকল সময়ে সহস্ৰ সহস্ৰ যাত্রী নীলপৰ্ব্বতে পুরুষোত্ত্বম দর্শনের মানসে এই পথে যাতায়াত করিত। পথে দরিদ্র ভিক্ষুকেরও অভাব ছিল না। স্বতরাং পুরুষোত্তমের পথে সঙ্গীতধ্বনি তেমন আশ্চৰ্য্যজনক ছিল না। - বিশ্বানন্দ ও উদ্ধবঘোষ গায়কের স্থশিক্ষা ও মধুর কণ্ঠ শুনিয়াই আশ্চৰ্য্য হইয়াছিলেন, -