পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৯০ ^^^ヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘ সহসা বিশ্বানন্দের মুখ দীপ্ত হইয়া উঠিল। তিনি ঈষৎ হান্ত করিয়া বলিলেন, “চলুন। কিন্তু প্ৰভু অন্ধবালকের আশ্রয় লইয়াছেন কেন ?" "ভাগ্যচক্র বিশ্বানন্দ ! গণনায় দেখিয়াছি, আমার ও তোমার ভাগ্যচক্রের সহিত এই অন্ধবালকের ভাগ্যচক্র আবদ্ধ। যতদিন ইহার সাক্ষাং পাই নাই, ততদিন তোমার সন্ধান পাই নাই; যেদিন ইহার সাক্ষাং পাইলাম, সেইদিন গণনায় জানিলাম যে, ইহার সহিত গৌড়ের পথে যাত্রা করিলে তোমার সাক্ষাং পাইব।" বিশ্বানন্দ পুনরায় ঈষৎ হাস্য করিলেন। চতুর্থভাগ সমাপ্ত পঞ্চম ভাগ প্রথম পরিচ্ছেদ দেবমন্দিরে। ঢেঙ্করী নগরের অনতিদূরে নদীতীরে একটি পাষাণনিৰ্ম্মিত প্রাচীন দেবালয় ছিল, কালক্রমে বহু নিম্ব অশ্বখ বট প্রভৃতি দীর্ঘাকার বৃক্ষ তাহাতে জন্মগ্রহণ করিয়াছিল ; অশ্বখবৃক্ষের ভরে মন্দিরের চূড়াটি ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছিল। নগর হইতে দলে দলে নরনারী নদীতে স্নান করিতে আসিত এবং স্বানান্তে দেবমন্দিরে পূজা করিতে যাইত। সন্ধ্যাকালে পুরমহিলাগণ ধূপ দীপ লইয়া মন্দিরে আরতি দেখিতে আসিতেন। মন্দির বহুপুরাতন; কে তাহ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিল, তাহ কেহই বলিতে পারিত না। মন্দিরের ভিতরের শিবলিঙ্গ মন্দির অপেক্ষাও পুরাতন ; প্রতিষ্ঠাত যে নাম দিয়াছিলেন তাহা ভূলিয়া গিয়া নাগরিকগণ তাহাকে বুড়াশিব বলিয়া ডাকিত। প্রভাতে ও সন্ধ্যায় বুড়াশিবের মন্দিরে ভীষণ জনতা হইত। মধ্যাহ্নে শ্রাস্ত পথিকগণনগরে আশ্রয় নাপাইলে মন্দিরের পার্শ্বে বৃক্ষতলে আশ্রয় গ্রহণ করিত, কারণ নদীতীরে বহুদূর পর্য্যস্ত তেমন স্নিগ্ধ ছায়াময় স্থানমার ছিল না। - বৈশাখ মাস। সমস্তদিন ভীষণ রৌদ্রে জগত-দগ্ধ হইয়াছে। অপরাহ্লে বায়ু বহিতে আরম্ভ করিয়াছে, মৃতকল্প --> প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২

  • へヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘ م۔-v.۔۔۔۔۔۔۔۔می-بی

- *০৮:৩৩, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)~~ ヘヘヘヘヘヘル [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড জগতে জীবনীশক্তি পুনরায় ফিরিয়া আসিতেছে। এই সময়ে একজন পথিক নদীতীর অবলম্বন করিয়া পশ্চিম হইতে পূৰ্ব্বদিকে আসিতেছিল। তাহার পরিচ্ছদ মলিন, ধূলিধূসরিত, সে ধীরে ধীরে বহুকষ্টে দেহভার বহন করিয়৷ মন্দিরের দিকে যাইতেছিল। মন্দিরের নিকটে আসিয়৷ সে ব্যক্তি আর চলিতে পারিল না, একটি ক্ষুদ্র বৃক্ষের ছায়ায় উপবেশন করিল। এই সময়ে কলহাস্তে দিগন্ত মুখরিত করিয়া কতকগুলি পুরাঙ্গন কলস কক্ষে লইয়া নদীতীরে আসিতেছিল। পথিক তাহাদিগকে দেখিয়া বিরক্ত হইরা বৃক্ষতল হইতে উঠিয়৷ মন্দিরের নিম্নে একটি বৃহং বটবৃক্ষতলে আশ্রয় গ্রহণ করিল। মহিলাগণ নদীর জলে নামিয়া রহস্যালাপে প্রবৃত্ত হইলেন। একজন কহিলেন, “আর শুনেছিস্ ? ধৰ্ম্মাধিকারের ভগিনীপতি নাকি ফিরিয়া আসিয়াছে ?” দ্বিতীয়া কছিলেন, "ধৰ্ম্মাধিকারের গৃহে গিয়া ত দেখিতে পাইলাম না।" রঙ্গ-প্রিয়া তৃতীয়া কহিলেন, "ওরে, জামাতা অনেকদিন পরে শ্বশুরপৃহে আসিয়াছিল, সেইজন্য লজ্জায় দিবালোকে মুখ দেখাইতে পারে নাই, সন্ধ্যাকালে আসিয়া রাত্রিশেষে পলায়ন করিয়াছে।” প্রথমা – তোরা ত কোন কথা জানি না। ধৰ্ম্মাধিকারের ভগিনী মূৰ্ছিত হইয়া পড়িয়াছে শুনিয়া আমি সেদিন সন্ধ্যাকালে তাহাদিগের গৃহে গিয়াছিলাম। " দ্বিতীয় – সে কতদিন পূৰ্ব্বে দিদি ? প্রথম – অষ্টাহ পূৰ্ব্বে। গিয়া দেখি মূৰ্ব টুস্থ কিছুই নহে, মাগী মূৰ্ছার ভান করিয়া উঠানে শুইয়া আছে। শুনিলাম পূজার সজ্জা করিতে করিতে হঠাৎ নিরুদিষ্ট স্বামীর কণ্ঠস্বর শুনিয়া ঠাকুরাণীর মুস্থ হইয়াছে। আগাগোড়া সমস্ত মিথ্যা। বৃক্ষান্তরালে থাকিয়া পথিক রমণীগণের কথালাপ সমস্তই শুনিল। . বিরক্ত হইয়৷ বৃক্ষতল পরিত্যাগ করিয়া স্বানের জন্ত নদীর জলে নামিল। রমণীগণ দূরে থাকিয়৷ তাহাকে দেখিল। পথিকের পৃষ্ঠে একটি দীর্ঘ কৃষ্ণবর্ণ চিহ্ন ছিল, তাহ দেখিয়া প্রথম রমণী দ্বিতীয়াকে কহিল, "r মাহুয়টার-পৃষ্ঠে কত বড় একটা দাগ দেখিয়াছিস্ ভাই?" দ্বিতীয়া কহিল, “হা, বোধ হয় ওটা জড়ল।" পধিক ৪র্থ সংখ্যা ] তাহাদিগের কথায় কর্ণপাত না করিয়া স্বানান্তে অশ্বথমূলে ফিরিয়া গেল। এই সময়ে চারিজন নীচ জাতীয় রমণী সম্মার্জনী হস্তে পথ পরিষ্কার করিতে করিতে নগর হইতে নদীতীরে আসিল, তাহাদিগের পশ্চাতে চারিজন পরিচারক পথের ধূলি নিবারণের জন্য কলস হইতে বারিসিঞ্চন করিয়া গেল। রমণীগণ তাহ দেখিয় পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, "কি ভাই, এত উদ্যোগ কেন ?" প্রথম কহিল, “উহাদিগকে জিজ্ঞাসা কর না কেন ?” দ্বিতীয়া একজন পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসা করিল, “এত উদ্যোগ কেন গ৷ ? রাজা আসিবেন নাকি ?" পরিচারিক। সগৰ্ব্বে উত্তর করিল, "পটুমহাদেবী গৌড়েশ্বরী দেবদর্শন-মানসে আসিবেন।” প্রথম উত্তর শুনিয়া মুখ বাকাইয়া কহিলেন, "একবার সাধুভাষার ঘটাট। শুনিয়াছিস ; রাজবাড়ীর পরিচারিকা কি না, অহঙ্কারে চোখে দেখিতে পাইতেছে না!" দ্বিতীয় সে কথায় কর্ণপাত না করিয়া পরিচারিকাকে পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, "মহারাণী আদিবেন, তাহার সঙ্গে আর কে কে আসিবেন ?" পরিচারিক কহিল, “মহারাণীর সঙ্গে ধৰ্ম্মধিকারের ভগিনী আমলাদেবী, তাহার পত্নী চিত্রমতিকাদেবী এবং রাজপুরীর অন্যান্য দুই-একজন মহিল| আসিবেন।” দ্বিতীয় তাহ শুনিয়া সোল্লাসে প্রথমাকে কহিল, "দিদি, আজি আর-একটু থাকিয়া ঘ, মহারাণীর সহিত দেখ৷. করিয়া দুই একটা কথা কহিয়৷ যাইব ।" প্রথম অবজ্ঞাভরে উত্তর দিল, “তোর ত ভরসা কম নহে, তুই নদীর ঘাটে মহারাণীর সহিত কথা কহিবি ? এখনই মহল্লিকার আসিয়া তোকে দূর করিয়া দিবে।" পরিচারিকাগণ তাহাদিগের কথা শুনিতে পাইয়৷ কহিল, “আপনার স্বচ্ছন্দে থাকুন, আমাদিগের মহাদেবী তেমন নহেন, তিনি আপনাদিগের সহিত আলাপ করিয়৷ কৃতাৰ্থ হইবেন।" প্রথম পুনরায় মুখ বাকাইয়া কহিল, "দেখ ভাই। ইতর লোকের মুখে সাধুভাষ আমার গায়ে কাটার মত বিধিতেছে।” এই সময়ে সাত-আটখানি শিবিক রক্ষীদিগের দ্বারা Tপরিবৃত হইয়া মন্দিরের নিকটে আসিল। রক্ষীগণ দূরে দাড়াইয়া রহিল, বাহকগণ নদীতীরে শিবিক নামাইয়৷ tr ধৰ্ম্মপাল SBJJJJSJJMJJASAMMM MMMMMMM 8 సె) SJMS SMAJJSJAASAAAA --م۔م۔م۔م۔م۔--۔ দূরে চলিয়া গেল। কল্যাণী, চিত্রমতিকাদেবী, মঞ্জরীদেবী ও অমলা সপীগণের সহিত জলে নামিলেন। মঞ্জরী উপস্থিত কুলমহিলাদিগের সহিত কল্যাণী ও চিএমতিকাদেবীর পরিচয় করাইয়া দিলেন। নূতন পট্টমহাদেবীর অপৰূপ সৌন্দৰ্য্য ও বিনয়-নয় কথালাপ দেখিয়া শুনিয়া ঢেৰুরীর নাগরিকাগণ বিশ্বিত ও মুগ্ধ হইয়া গেল। অমলাদেবী স্বানান্ধে দূরে দাড়াইয়া পূজা করিতেছিলেন, তিনি কাহারও সহিত আলাপ করিলেন না। স্নান শেষ হইলে মহাদেবী ও অন্যান্য মহিলাগণ আদ্র বস্ত্রে মহাদেবের মন্দিরে গমন করিলেন। নাগরিকাগণ নগরে ফিরিল পথে যাইতে যাইতে প্রথম দ্বিতীয়াকে কহিল, "মাগর অহঙ্কার দেখিয়াছিল, আমাদিগের সহিত একটাও কথা কছিল না।" দ্বিতীয়া কহিল, “মহারাণীর মত মানুষ কিন্তু ভাই দেখা যায় না।" তাহ শুনিয়া প্রথম দন্তে অধরোষ্ঠ চাপিলেন, উত্তর দিলেন না। কল্যাণী ও অন্যান্য মহিলাগণ দেবদর্শন করিয়া মন্দিরের বাহিরে আসিলেন, কিন্তু অমল। তখনও গর্ভগৃহে রছিলেন। কল্যাণী মন্দিরের দুয়ারে দাড়াইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “দিদি, তুমি ঠাকুরের কাছে নিত্য নিত্য এত কি প্রার্থন কর ?” মন্দিরাভ্যস্তর হইতে অমলাদেবী কহিলেন, “দেবি, আমি কি প্রার্থনা করি তাহা তুমি কি বুঝিবে, ভগবান করুন যেন কখনও তোমাকে তাঁহা না বুঝিতে হয়।” কল্যাণী ক্ষুন্নমনে পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “নিত্য নিত্য কি প্রার্থনা কর বলন ?” অমলাদেবী ঈষৎ হাসয়। বলিলেন, “দেবি, তুমি বালিকা, আমি নিত্য এই মন্দিরে আসিয়া দেবাদিদেবের চরণে এই নিবেদন করি,-দেব, আমার প্রায়শ্চিত্ত হইয়াছে, আর আমার মোহ নাই, বাসন নাই, আমি যেমন ভাবে ছিলাম সেই ভাবে আমাকে রাখিয়া দাও, আমার সেই অবস্থা ফিরাইয়া দাও। আমি ঐশ্বর্য্য চাহি না, সম্পদ চাহি না, আর কখনও অলঙ্কার চাহিব না-" বলিতে বলিতে অমলাদেবীর কন্ঠরুদ্ধ হইল, কল্যাণী অপ্রতিভ হইয়া ফিরিয়া দাড়াইলেন। কিয়ংক্ষণ পরে অমল গর্ভগৃহের বাহিরে আসিলেন । রক্ষীদিগের দ্বারা পরিবৃত শিবিকাগুলি নগরাভিমূখে যাত্ৰ৷ করিল।