পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"לל?) হাফাইতে এক গাছের তলায় বসিয়া পড়িল। তখন মধ্যাহ্ন। রৌদ্রের তেজ বড় প্রখর । সমীরণ যেন জরাক্রান্ত রোগীর উত্তপ্ত নিশ্বাস। নদীর তরঙ্গে আগুনের ছড়াছড়ি। সেই রৌদ্রতপ্ত নির্জন নদীতীর-শব্দহীন ।—কেবল তরঙ্গকল্লোল, মাঝে মাঝে দুই একটা পার্থীর অলস চীংকার আর বায়ুপ্রবাহে শুষ্কপত্রের মৰ্ম্মর। একলাটি বসিয়া সতুর মন কেমন করিতে লাগিল। কে জানে, কিসের স্মরণে তার আয়ত চোখটি জলে ভরিয়া গেল। বসিয়া বসিয়া সে অনেকক্ষণ কাদিল । জ্ঞানহীন অবোধ শিশু, তার প্রাণেও আগুনের জালা! বুঝি না, বিধাতার এ কেমন আইন ! সতু চোখ মুছিয়া একবার ভাবিল,— বাড়ি ফিরিয়া যাই। আবার ভাবিল,—ন, বাবা এসে আদর করে ডেকে নিয়ে যাবে, তবে যাব।—অভিমানী বালক উঠি উঠি করিয়াও উঠিল না। এইরূপে মধ্যাহ্ন কাটিল । - বিকাল বেলায় বেশ ফুরফুরে হাওয়—সতুর একটু তন্ত্র আসিল। চুলিতে ঢুলিতে সে সেই গাছের তলতেই শুইয়া পড়িল। ক্লান্ত শরীর, তার উপর সমস্ত দিন পেটে অন্ন পড়ে নাই, সহজেই গাঢ় নিদ্রায় আচ্ছন্ন হইয়৷ পড়িল। খুব ঘুমাইল —যখন ঘুম ভাঙ্গিল, সভয়ে সে চাহিয়া দেখে,-চারিদিকে ঘোর অন্ধকার –আকাশে তারা উঠিয়াছে আর মান জ্যোংস্ক। দূরে গাছের সারি, সেখানে আরও অন্ধকার । গাছগুলা ,—মাথায় জ্যোৎস্নার পাগড়ী, গায়ে আঁধারের আলখাল্লা—যেন দৈত্যের দল! বাতাসের সাই সাই শব, বি-ঝি পোকার ঝিঝি রব আর জোনাকীর চিকিমিকি —দেখিয়া শুনিয়া সত্যুর মুখ শুকাইল। এমনটা যে হইবে, তা সে আগে ভাবে নাই। সে আশা করিয়াছিল, সন্ধ্যার পূৰ্ব্বেই তার পিতা আসিয়া তাকে বুকে করিয়া বাড়ি লইয়া যাইবে । কিন্তু হইল বিপরীত। অভিমানে দুঃখে সতুর চোখে জল আসিল । সে যে কোন দিক দিয়া আসিয়াছে, এবং কিরূপে যে বাড়ি ফিরিবে তাঁহা ভাবিয়া পাইল না। ভয়ে ভয়ে সে উঠিয়া বসিল। সেই সময় তার বোধ হইল, কে যেন তার মাথায় হাত দিয়াছে। সতু চমকিয়া উঠিল । পশ্চাৎদিকে ফিরিয়া যাহা দেখিল,—তাহাতে তার শরীরের রক্ত জমাট বাধিবার প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২ SAMAA ASASASA MA AMMASAMMMS SMM M MS MM MMM [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড উপক্রম হইল! দেখিল পশ্চাতে দাড়াইয়া দুইটা অদ্ভুত মূৰ্ত্তি! মূৰ্ত্তি দুইটার আপাদমস্তকে শ্বেত-আবরণ দুইটাই নিৰ্ব্বাক ও নিম্পন্দ ! গাছের তলায় অন্ধকার, অস্পষ্টই দেখা যাইতেছিল। সতুর বুক ধড়াস্ ধড়া করিয়া উঠিল! সে অনেক ভূত ও শাকচুন্নীর গল্প শুনিয়াঙ্কে, সেইগুলি তার মনে পড়িল। ভাবিল, এ নিশ্চয় ভূত । আজ নিশ্চয় ঘাড় মটকাইবে । ভাবিতে তার প্রাণ শিহরিয়া উঠিল। কিন্তু চিরকালই তার সাহসটা একটু বেশী। সাহসে বুক বধিয় শুষ্ককণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিল,—“কেগ৷ ?” মূৰ্ত্তি দুইটার মুখ হইতে একটা বিকট হুঙ্কার উঠিল,— --- -- হু-হু—হুম্!" বালকের সাহস সেই মুহূৰ্ত্তেই সব ফাসিয়া গেল। আতঙ্কে জড়সড় হইয়। সে ঠকঠক করিয়া কাপিতে লাগিল। চীংকার করিবারও ক্ষমতা রহিল না। সেই সময় একটা মূৰ্ত্তি তার সমূপে গিয়া দাড়াইল । সতু ভয়ে চক্ষু মুদিল। মুহূৰ্ত্তমধ্যে জ্ঞানশূন্য অসহায় শিশু মাটিতে লুটাইয়া পড়িল। মূৰ্ত্তিট। তাড়াতাড়ি তাকে কাধের উপর ফেলিল । - - - - সতুকে পাওয়া গিয়াছে। কিন্তু আর এক বিপদ, তার ভয়ানক জর ! দুইদিন সে একেবারে বেছশ। গ্রামের ডাক্তার ত হার মানিয়াছেন, যোগীনবাবু কলিকাতা হইতে বড় ডাক্তার আনাইয়াছেন। তিনিও সতুর জর দেখিয়া ভয় পাইয়াছেন। সতুর জন্য সকলেই উদ্বিগ্ন। যোগীনবাবু দিবারাত্রি কাদিতেছেন। নবদুর্গা আহার নিদ্র ত্যাগ করিয়া সতুর শুশ্রুষা করিতেছে। যোগীনবাবুর ভূত্যের দোষেই যে এতটা কাণ্ড গড়াইয়াছে, তাহ কেহই জানে না। মূর্থ ভূতাটি রাখালের সঙ্গে মিলিয়া যে রাত্রে সতুকে ভয় দেখায়, সতু সেই যে অজ্ঞান হইয়া পড়িয়াছিল, আর তার জ্ঞান হয় নাই। সেই অবধিই তার জর। আজ বুধবার। সতুর অমুখের বড় বাড়াবাড়ি। ডাক্তার বলিয়াছেন,--রাত্রি দশটার মধ্যে যাহা হউক একটা কিছু হইবে ! গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা আজ সতুকে দেখিতে ছুটিয়া আসিয়াছে। সকলের চক্ষে অশ্রু ! যোগীনবাবু পুত্রের রোগশয্যার পাশ্বে বসিয়া তার রোগ | বিবর্ণ মুখখানির প্রতি একদৃষ্টে চাহিয়া রহিয়াছেন। I ৪র্থ সংখ্যা ) वहाँ নীরবে সতুর মাথায় হাত বুলাইতেছে। সতু পদহীন। রাত্রি দৰটা বাজিল। যোগীনবাৰু কঁাপিতে ক্টাপিতে পুত্রের কপালে হাত দিয়া দেখিলেন, বড় ঘাম হইতেছে! নিশ্বাসের টানটাও একটু বেশী বলিয়া বোধ করিলেন। তার একটু ভয় হইল। সত্বর বুকে হত দিয়া কম্পিতকণ্ঠে “সতু । সতু!" বলিয়া দুইবার ডাকিলেন; কিন্তু কোন উত্তর পাইলেন না। কাতরস্বরে আবার ডাকিলেন—বলিলেন,—“সতু! বাবা! একবার কথা কও ” -পিতার আহবানেই হউক, কিম্বা অন্য কারণেই হউক, সন্তু তখন ধীরে ধীরে চক্ষু উন্মীলন করিল। পিতার মুখের দিকে স্থিরদৃষ্টিতে সে অনেকক্ষণ চাহিয়া রহিল। যোগীনবাৰু তার মুখের কাছে মুখ লইয়া গিয়া, বলিলেন,"জামায় চিনতে পার্ছ না, বাবা ?" স্তু ফিক্‌ করিয়৷ হাসিল। শীর্ণমুখখানিতে যেন বিদ্যুতের জ্যোতি ফুটিয়া উঠিল। যোগানবাৰু আবার বলিলেন, "সতু, আমায় চিনতে পারছ না ? বল দেখি আমি কে?" সতু আবার হগিল। ক্ষীণ স্বরে বলিল,—“তুমি মা !" দুই দিন পরে সেই প্রথম তার কথা ফুটিয়াছিল। সকলেই বুঝিল, সেটা বিকারের ঝোকে প্রলাপ | সতু পুনরায় চক্ষু মুদিল । কথাটা শুনিয়া যোগীনবাবুর বুকটা ছাং করিয়া উঠিল! সতুর হাতে পায়ে হাত দিয়া দেখিলেন, সমস্ত বরফের মত ঠাগু হইয়াছে। তখনই ডাক্তারকে ডাকা হইল। ডাক্তার সেইখানেই ছিলেন, তাড়াতাড়ি শয্যাপাশ্বে আসিয়া রোগীর নাড়ী পরীক্ষা করিতে লাগিলেন । সহসা ডাক্তারের মুখমণ্ডল গম্ভীর হইল। সতু তখন বেশ জোরে জোরে নিশ্বাস ফেলিতেছে! যোগীনবাবু ব্যগ্রভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন,—“কি দেখলেন ডাক্তার মশায় ?" ডাক্তার কিছু বলিলেন না। মুখ কুঞ্চিত করিয়া গৃহের বাহির হইয়া গেলেন। যোগীনবাবুর কিছু বুঝিতে বাকী রহিল না। তিনি বালকের ন্যায় কাদিয়া উঠিলেন । পুত্রের চিবুক ধরিয়া কাদিতে কঁাদিতে বলিলেন,—"সতু! মাণিক আমার! আজ অভিমান করে কোথায় যাচ্ছিস্ বাবা! তুই যে আমার সর্বস্ব রে " সতুর জীবনপ্রদীপ তখন ক্রমেই নিম্প্রভ হইয়া আসিতেছিল। কিন্তু তার মৃত্যু-ছায়া-বিবৰ্ণ মুখখানিতে তখনও গৌতম বুদ্ধের ধৰ্ম্ম ()సె


JASAMJSJMMMMMMS MMAJMJSAMSJMJJS

মৃদুহাসির রেখা ! যোগীনবাবু পাগলের মত চীংকার করিয়া উঠিলেন। সতুর শীর্ণদেহখানি দুইহাতে জড়াইয়া ধরিয়া ভগ্নকণ্ঠে আবার ডাকিলেন,-“সতু!—আমার সোনার সতুরে!” সতুর সর্বাঙ্গ তখন স্থির। পিতার কথায় আর সে চাহিল না। কিন্তু তখনও অতি ক্ষীণস্বরে তার মুখ হইতে বাহির হইল,—“ঘাই ।”—সেই তার শেষ কথা। সেই নৈশনিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া বায়ুপ্রবাহে একটা উচ্চ হাহা রোলের করুণ প্রতিধ্বনি উঠিয়া গ্ৰামময় জানাইয়৷ দিল, যে—“সতু আর নাই!” নবদুর্গ পর হইলেও,সতুর স্মৃতি সে জীবনে ভুলে নাই! অনেকদিন পর্য্যস্ত,—যখনই সে নদীতে স্বান করিতে যাইত, প্রায়ই তার মনে হইত, একটি ছোট ছেলে যেন করুণ স্বরে গাহিতেছে,— "আমি সই, আর রবনা বৃন্দাবনে!” সেট যে তার মনের ভ্রম, নবদুর্গা পরে বুঝিতে পারিত। অশ্রুঞ্জল মুছিতে মুছিতে বিধবা বাট ফিরিত ! ঐকালীকৃষ্ণ বস্থ। গৌতম বুদ্ধের ধৰ্ম্ম ১ । পালিপিটকের প্রাচীনতা ও মৌলিকতা। " পৃথিবীর ছয়-আনা লোক এখনও বৌদ্ধ। হাজার বৎসর পূৰ্ব্বে বোধ হয় পৃথিবীর আট-আনারও বেশী লোক বৌদ্ধ ছিল। বৌদ্ধধৰ্ম্ম নানাযুগে নানাদেশে নানাজাতির লোকের মধ্যে নানাপ্রকার মূৰ্ত্তি পরিগ্রহ করিয়াছে। এই সকল বিভিন্ন প্রকারের বৌদ্ধমতের মধ্যে কোন মতটি ষে গৌতমৰুদ্ধ স্বয়ং প্রচার করিয়াছিলেন তাহ নিরূপণ করা বৌদ্ধধৰ্ম্মের-ইতিহাস-আলোচনাকারীর প্রথম কৰ্ত্তব্য। গৌতমৰুদ্ধের রচিত কোনও গ্রন্থ পাওয়া ধায় নাই। মূল বৌদ্ধশাস্ত্রনিচয়ে তাহার উত্তি গুলি নিবন্ধ হইয়াছে। মূল বৌদ্ধশাস্ত্রের মধ্যে যেগুলি সৰ্ব্বাপেক্ষ প্রাচীন সেইগুলির মধ্যে গৌতমৰুদ্ধের স্বয়ং-প্রচারিত মত অবিকৃতভাবে রক্ষিত হইয়াছে এইরূপ অনুমান করাই সঙ্গত।