পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

l “সত্যম শিবম সুন্দরম।” “নায়মাত্মণ বলহীনেন লভা ।” ১৫শ ভাগ । - s ভাদ্র, ১৩২২ { ৫ম সংখ্যা ১ম খণ্ড । | - তুলিলাম, তাহা কেবল এই বিশ্বাসটা প্ৰাণে দঢ় করিয়া বধ প্রসঙ্গ - মুদ্রিত করিয়া দিবার জন্ম যে আমরা স্বপ্নবিলাসীদের বংশ বিজ্ঞান-চর্চা । বিজ্ঞানাচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় মহাশয় এমাসের প্রবাসীর প্রথম প্রবন্ধে দেখাইয়াছেন যে প্রাচীন কালের হিন্দু পণ্ডিতেরা কেবল মনস্তৰ লইয়াই থাকিতেন না, প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চর্চাতেও প্রাচীন ভারত তদানীন্তন অন্যান্য দেশের অপেক্ষা বহু পরিমাণে শ্রেষ্ঠ ছিল। প্রাচীন হিন্দুর পরীক্ষা (experiment) দ্বারা বিজ্ঞান শিক্ষা দিবার আবশ্বকতা কিরূপ বুঝিতেন, তাহ তিনি চুণ কনাথের একটি বচন উদ্ধত করিয়া দেখাইয়াছেন। চূণ,কনাথ বলেন— “যাহার। শিক্ষণীয় বিষয় পরীক্ষা দ্বারা দেপাইতে পারেন, তাহারাই প্রকৃত শিক্ষক । যে সকল ছাত্র শিক্ষকের নিকট হইতে পরীক্ষাগুলি শিথিয় নিজে নিজে সেইগুলি করিতে পারেন, তাহারাই যথার্থ শিক্ষার্থী। এতদ্বাতীত অক্ষান্ত শিক্ষক ও ছাত্রগণ রঙ্গমঞ্চে অভিনেতা মাত্র।” -আমর প্রাচীন ভারতের প্রশংসা করিতে বড় ভয় পাই। প্রাচীন গৌরবের স্থতি আমাদিগকেও আনন্দ দেয় বটে, কিন্তু পাছে উহা অামাদিগকে আফিঙ্গের নেশার মত পাইয়। বলে, পাছে উহ। আমাদিগকে বর্তমানে কশ্মবিমুখ করিয়৷ ৰগে, এই আশঙ্ক সৰ্ব্বদাই আমাদের প্রাণে জাগে। তথাপি যে প্রাচীন ভারতে প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের চর্চার কথা ধর নহি ; আমাদের পূর্বপুরুষের আধ্যাত্মিক বিষয়ে যেমন সাধক, সিদ্ধ ও অগ্রসর ছিলেন, তেমনি কীও ছিলেন, এবং বৈজ্ঞানিক বিষয়ের সাধনাতেও সিদ্ধ ছিলেন। ভাল করিয়া নিদ্রা দিবার জন্য প্রাণে এই বিশ্বাস জানিতে চাই না, কাজ করিবার জন্য এই বিশ্বাস চাই। চল্লিশ বংসর পূৰ্ব্বে আমরা বাংলা স্থলে পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদবিচার, ভূবিদ্যা, প্রভৃতি বৈজ্ঞানিক বহি পড়িয়া ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষা দিয়াছিলাম। কখনও বৈজ্ঞানিক যন্থের মুখ দেখি নাই। অন্যান্য বহির মত বৈজ্ঞানিক বহি ৪ * করিতাম, এবং কল্পনার সাহাযো যথাসাধা বুঝিতে চেষ্টা করিতাম। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের সাহায্য ব্যতিরেকেও শিশুদিগকে উদ্ভিদবিদ্যার প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়া যায়। আমর পল্লীগ্রামতুলা মফঃস্বলের ছোট সহরে পড়িতাম। সেখানে অনায়াসে আমাদের পাঠ্য যদুনাথ মুখোপাধ্যায়ের উদ্ভিদ বিচারে উল্লিখিত উদ্ভিদ লতা পাতা ফল ফুল মূল সংগ্ৰহ করা যায়। কিন্তু তথাপি আমাদের পণ্ডিত মহাশয় জাম্বাদিগকে কোন দিন একটাও গাছগাছড়া সংগ্ৰহ ੋਣ বা দেখিয়া আসিতে বলেন নাই, নিজে যে কখন আমাদিগকে দেখাইবার জন্য সংগ্রহ করেন নাই, ৰিম্বা স্থলের ভূতাকে সংগ্ৰহ কৱিতে বলেন নাই, তাহ বলা বাহুল্য মায়।