পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qws বায়বীয় পদার্থে পূর্ণ করিয়া বায়ুতে ছাড়িয়া দিলে তাহ মেঘের মত ভাসমান অবস্থায় থাকিতে পারে । র্তাহার প্রথমে বাপের সাহায্যে পরীক্ষা করিয়া বিফল হইয়। অত্যন্ত সন্দিহান হইলেন। কিন্তু অবশেষে তাহার একটি থলিয়াকে অগ্নির উপরে ধরিয়৷ তদুখিত ধুম্র ও গ্যাসের দ্বারায় থলিয়াকে পরিপূর্ণ করিয়া বায়ুতে ছাড়িয়া দিলেন এবং দেখিলেন যে উহা বায়ুমণ্ডলে কিছুদূর পর্য্যন্ত উঠিয়াছে। তখন আরও প্রশস্ত প্রণালীতে তাহার। উক্ত পরীক্ষা আরম্ভ করিলেন। ১৭৮৩ খ্ৰীষ্টাব্দে ১০৫ ফুট পরিধি বিশিষ্ট একটি বস্ত্রনিৰ্ম্মিত গোল থলে খড়ের ধূমে পূর্ণ করিয়া বায়ুর মধ্যে ছাড়িয়া দিলে উহ। অনেক উচ্চ পর্য্যন্ত উঠিল এবং বায়ুর মধ্যে ১০ মিনিট পৰ্য্যন্ত অবস্থান করিয়া ১ মাইল দূরে গিয়া পড়িল । অল্প সময়ের মধ্যে এই কৃতকার্য্যতার সংবাদ চারিদিকে বিস্তৃত হইয়া পড়িল এবং অচিরেই নগরে বিভিন্ন প্রণালীতে পরীক্ষা আরব্ধ হইল। ইহার কিছুকাল পূৰ্ব্বে ১৭৭৬ খ্ৰীষ্টাব্দে সৰ্ব্বাপেক্ষ হালক গ্যাস হাইড্রোজেন আবিষ্কৃত হইয়াছিল এবং এই সময়েই ডাক্তার রেক কোন গোলককে হাইড্রোজেনে পরিপূর্ণ করিলে শূন্তে উড়িবার সম্ভাবনার বিষয় আলোচনা করিয়াছিলেন। যখন ষ্টিফেন এবং মণ্টগলফিয়ে এই দুইজনের পরীক্ষার সংবাদ পারতে পৌছিল, তখন বিজ্ঞানবিদ চালর্স বলিলেন শীতল বায়ু অপেক্ষা উষ্ণবায়ু লঘুতর বলিয়া উহ। সৰ্ব্বদা উপরে থাকিতে চেষ্টা করে ; কোন ব্যোমযান হাইড্রোজেন দ্বারা পূর্ণ করিয়া পরীক্ষা করিলে সম্পূর্ণরূপে কৃতকাৰ্য্যতা লাভ করা যাইবে । ১৩ ফুট ব্যাসের বাৰ্ণিশকরা রেশমের একটি বোমযান প্রস্তুত করা হইল এবং তাহা উক্ত গ্যাসে পূর্ণ করিয়া ছাড়িয়া দিলে ৩০০০ ফুট পর্য্যন্ত উৰ্দ্ধে উঠিয়াছিল এবং প্রায় ৪৫ মিনিট বায়ুমণ্ডলে পরিভ্রমণ করিয়া ১৫ মাইল দূরে পতিত হইয়াছিল। পতনস্থানের কৃষকগণ এই অদৃষ্টপূৰ্ব্ব আবির্ভাবকে কোন সয়তানের আগমন অতুমান করিয়৷ অত্যন্ত শঙ্কিত চিত্ত্বে উহাকে একটি অশ্বের লাঙ্গুলে বাধিয়া দিল এবং অশ্ব যখন উহাকে টানিয়া টানিয়া খণ্ড খণ্ড করিল, তখন তাহার নিশ্চিন্ত হইয়া গৃহে প্রত্যাগমন করিল। ইহার কয়েক মাস পরে যোসেফ, মণ্টগলফিয়ে একটি প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩২২ 、ヘヘヘヘヘ/wヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘバー・ヘヘヘヘヘヘヘヘヘー^ヘ^-/ বোম্যান তৈয়ার করিলেন এবং উহা উষ্ণগ্যাসে পূর্ণ করিয়া বহু দর্শকমণ্ডলীর সমক্ষে বহু উদ্ধে উড়াইয় তাহার কৃতকা তা সকলকে দেখাইয়াছিলেন । ১৭৮৩ খ্ৰীষ্টাব্দে যোসিও পিলাত্রে দি রোজিএ সৰ্ব্বপ্রথম পৃথিবীর সহিত কোন বন্ধনরজ্জ্বর যোগ না রাথিয় এক মুক্ত ব্যোমযানে আকাশমার্গে উড়িয়াছিলেন। দুই বৎসর পরে এই দুঃসাহসিক বিমানবিহার ৩• • • ফুট উচ্চ হইতে পতিত হইয়া প্রাণত্যাগ করেন। মৃত্যুর পূৰ্ব্বে তিনি হাইড়োজেন এবং উষ্ণবায়ুর সাহায্যে একটি বেলুন প্রস্তুত করিয়াছিলেন। দুইটি শূন্ত গোলকের একটি হাইড়ে জেনে এবং অপরটি উত্তপ্ত বায়ুতে পূর্ণ করিয়া তাহাদিগকে উপযুপিরি স্থাপিত এবং পরম্পর-সংবদ্ধ করিলেন । ছিল–হাইড্রোজেন গ্যাস লঘু বলিয়া স্বভাবতঃই উপরের দিকে উঠিতে চেষ্টা করিবে এবং নিম্নস্থ গোলকে যে বায়ু ছিল তাহাকে উত্তপ্ত করিলে তাহ প্রসারিত হইতে চেষ্টা করিবে, সুতরাং বেলুনটিকেও উপরের দিকে টানিয়া লইয় যাইবে, পরে ঠাণ্ড হইয়া সঙ্কুচিত হওয়ার দরুণ অপেক্ষাকৃত ভারী হইবে, এবং তখন নিম্ন দিকে তাহার গতি পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এরূপ যন্ত্রে কি বিপদ প্রচ্ছন্ন থাকিতে পারে তাহ তাহার জানা ছিল না । হাইড্রোজেন মিশ্রিত হইবার সময়ে অগ্নি সংযোগ হইলেই সশব্দে বিদীর্ণ হইয়া যায়। এই অজ্ঞতার দরুন অৰ্দ্ধ ঘণ্টা কাল নিরাপদে ভ্রমণ করার পর যন্ত্রটিতে অগ্নি সংযোগ হওয়ায় তাহার শোচনীয় পরিণাম ঘটিয়াছিল । ব্যোমযানকে আকাশপথে পরিচালিত করিবার জন্য অনেকে আশ পোষণ করিয়া আসিতেছিলেন । কেহ কেহ মনে করিলেন—একটি গোলাকৃতি ব্যোমযানকে দাড় পাল ইত্যাদির সাহায্যে বায়ুর মধ্য দিয়া ইচ্ছামত চালান যাইতে পারে । ব্যোমযানকে ইচ্ছামত পরিচালিত করিবার জন্য র্যাহার। বহু শক্তি সামর্থ্য প্রয়োগ করিয়াছিলেন র্তাহীদের মধ্যে জেনারেল ময়েস্নিয়ের নামই বিশেষরূপে উল্লেখযোগ্য। তিনি প্রায় দেড়শত বৎসর পূৰ্ব্বে বোম্যানকে স্বেচ্ছা! চালিত করিবার জন্য যে-সকল উপায়ের উল্লেখ করিয়ছিলেন বর্তমান সময়ে অনেক বোমযানেই তাহ অবলম্বিত হইয়া কারণ তাহার বিশ্বাস । বায়ুর সঙ্গে , [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড T ৫ম সংখ্যা ] .സസ്സസ്സ്സസസ്SumitaBot (আলাপ)** ヘヘヘ থাকে। তাহার মতে বেলুনকে লম্বা আকৃতির করিয়া তাহার, উপরিভাগ আবরণের দ্বারা বেষ্টন করিতে হইবে ; ত্রিকোণ পাল সংযুক্ত করিয়৷ উত্তপ্ত বায়ুতে পূর্ণ থলে বাধিবার এবং বেলুনের পিছনে বাপীয় পোতের চাকার মত একপ্রকার চাক ব্যবহার করিবার প্রয়োজনীয়তা তিনি উপলব্ধি করিয়াছিলেন , মেগনিয়ের উদ্ভাবিত বেলুনের চাকা মহ্যশক্তি দ্বারা চালিত হইত। ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দে পারানগরে রবার্ট নামে দুই ভ্রাত একটি বেলুন নিৰ্ম্মাণ করিলেন। তাহা স্তম্ভাকৃতি, কিন্তু দুই প্রাস্ত গোলকাদ্ধ-সদৃশ (Hemispherical) ** দাড়ের সাহায্যে পরিচালিত করিবার চেষ্টা হইল। তাহদের চেষ্টা প্রথমে বার্থ হইয় গেল। কিন্তু দ্বিতীয় বারের উদ্যমে তাহ প্রশান্ত বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়া বৃত্তাভাসপথে পরিভ্রমণ করিয়ছিল । 激 ಳ್ದಳ್ತೀ NVTiiff. 14 গিফার্ডের বায়ু যান। বৈজ্ঞানিক জগতে গিফার্ড বাপজনকযন্ত্ৰে (Steam boiler) জল-সরবরাহকারী একটি যন্ত্র (Injector) আবিষ্কারের জন্য সৰ্ব্বত্র সুপরিচিত। তিনি বহুদিন হইতে একটি স্বল্পভারী অথচ বহুশক্তিবিশিষ্ট ইঞ্জিন উদ্ভাবনের ব্যাপারে ব্যাপৃত ছিলেন এবং তাহার ফলস্বরূপ পাচ অশ্ববল ও একমণ দশসের ভারী একখানি ইঞ্জিন তৈয়ার করিতে সমর্থ হইলেন। তিনি মনে করিলেন—এইরূপ একখানি ইঞ্জিনের সাহায্যে বোমধানকে স্বেচ্ছাচালিত করা যাইতে পারে। ১৮৫২ খৃষ্টাব্দে পারী নগরে তিনি এইরূপ একটি বোম্যানও নিৰ্ম্মাণ করিলেন। র্তাহার আবিষ্কৃত বেমমযান তাত-কলের মাকুর মত ; ইহা ১৪৪ ফুট লম্বা এবং মধ্যভাগের বৃহত্তম অংশের পরিধি ৪০ ফুট এবং Qbや অভ্যস্তরে ৯.০০ ঘন ফুট স্থান ছিল। ইহার উপরিভাগে রজ্জ্বনিৰ্ম্মিত জালের আবরণ ছিল এবং নিম্নশে ৬• ফুট হইতে অল্পাধিক লম্বা একটি দণ্ড বহুসংখ্যক রজ্জ্বর সাহায্যে ঝুলাইয় তাহাকে উপরি-উক্ত জালের দুই প্র স্তদেশে ংযুক্ত করা হইয়াছিল। অন্যান্য কতকগুলি রজ্জ্বর সাহায্যে উক্ত দণ্ড হইতে একটি নৌকা ঝুলাইয় তাহার উপরে তিন অশ্ববলের একটি ইঞ্জিন রক্ষিত হইয়াছিল। এই ইঞ্জিন বৈদ্যুতিক পাথার মত ত্রিফলক একটি পাথাকে প্রতি মিনিটে ১১০ বার ঘুরাইত। উক্ত সমান্তরাল দণ্ডের এক প্রান্তে ত্রিকোণ হাল সংযুক্ত ছিল। গিফাডের আবিষ্কৃত বোমযানের এখানে যে বর্ণনা প্রদত্ত হইল তাহা হইতে দেখা যাইতেছে—তাহার যন্ত্রটির মধ্যে দুইটি দোষ বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। প্রথমতঃ নৌকাটি যেভাবে বোমধান হইতে লম্বিত হইয়াছিল, তাহাতে চলিবার সময় বোম্যান কম্পিত না হইলেও ইঞ্জিনের কম্পনে সমস্ত বোমযানটি কম্পিত হইতে পারিত। দ্বিতীয়তঃ, বোময়ানকে হাইড্রোজেন বা কয়লার গ্যাসের ( coal gas) মত কোন গ্যাসে পরিপূর্ণ করিয়া তাহার নিকটে অগ্নি রাখিলে যে কি অনর্থ ঘটিতে পারে—তাহা সকলেই অম্বুমান করিতে পারেন। গিফাড শেষোক্ত দোষটি দূর করিবার জন্য অগ্নিকুণ্ডের মুখ তারের সূক্ষ্ম জাল দ্বারা ঢাকিয়া রাখিতেন এবং দগ্ধপদার্থগুলি চিমনির সাহায্যে নিম্নদিকে নিষ্কাষিত করিতেন। এই ব্যোমননকে গিলড প্রতি সেকেণ্ডে ৬ ফুট হইতে ৮ ফুট পৰ্য্যন্ত চালিত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । তিন বৎসর পরে আরও বৃহদায়তনের (১১৩• • • ঘন ফুট) বোমান নিৰ্ম্মাণ করিতে অনেকে পরীক্ষা আরম্ভ করিলেন। আকাশপথে ব্যোমযান চলিবার সময় বায়ু যে ইহার গতির বিপরীত দিকে বাধা প্রদান করে তাহা হ্রাস করিবার জন্য ইহার দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি এবং অপরাপর অনেকাংশের পরিবর্তন সাধিত হইল। এতদিন বোম্যান হইতে যে লৌহদণ্ড ঝুলাইয়া রাখা হইত—তাহাকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করিয়া ব্যোমযানের উপর একখানি শক্ত আবরণ এবং তাহার সঙ্গে একখানি জাল সংযুক্ত করা হইল।