পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@公8

                      • ാം".

থোকা উৎসাহিত হইয়া উঠিয়া মাছগুলোকে উপযুক্ত শিক্ষা দিবার অভিপ্রায়ে কহিল—“দাড় তা রে!” এবং এই বলিয়া একখণ্ড ইষ্টক খুজিয়া আনিল। তারপর দুষ্ট মাছগুলোকে লক্ষ্য করিয়া হাত ঘুরাইয়৷ যথাসাধ্য বলে ইট ছুড়িতে গিয়া নিজেই টলিয়া পাড়ের উপর পড়িয়া গেল। বালক সামলাইতে পারিল না ; গড়াইতে গড়াইতে একেবারে জলে গিয়া পড়িল । বালিকার আরক্ত মুখমণ্ডল এক মূহূর্তে সাদা হইয়৷ গেল। সে ব্যাকুল নেত্রে একবার চারিদিকে চাহিয়৷ উচ্চস্বরে কাদিয়া উঠিল । জামরুল-গাছ সবেগে নড়িয়া উঠিল। বালিকা দেখিল, কে একজন গাছের ডাল ধরিয়া ঝুলিয়া পড়িয়া মাটির উপর লাফাইয় পড়িল, এবং তিন লাফে জলে পড়িয়া নিমগ্ন বালককে তুলিয়া ফেলিল। বালক খানিকটা জল খাইয়ছিল মাত্র; তখনি উঠিয়া বসিল । বালিকার চক্ষে জল, মুখে হাসি , যেন এক পশ ল| বৃষ্টির পর রৌদ্র উঠিয়াছে। বয়সে ভোলা বালিকার অপেক্ষ বেশী বড় হইবে না। পে গম্ভীর মুখে জিজ্ঞাসা করিল—তোমার নাম কি খুকী ? বালিকা তাহার ভাসাভাস কৃতজ্ঞ চোখদুটি তুলিয়া কহিল-কল্যাণী । ( & ) সাত আট বৎসর কাটিয়া গিয়াছে। ভোলা এখন কলিকাতায় বি-এ পড়ে। বাল্যকালেই তাহার মাত৷ পিতা স্বর্গে গিয়াছিলেন। তখন হইতেই সে কাকাবাবু এবং কাকিমার কাছে মানুষ হইয়াছে। ভোলার খুড়তুতে ভাই নগেন ভোলার সমবয়সী। নগেন এবং ভোল৷ দুজনে কলিকাতায় একটা দোতলা বাড়ীর উপরের দুইখানা মাত্র ঘর ভাড়া করিয়৷ থাকিত এবং এক কলেজে লেখাপড়া করিত। ভোলা নগেনের একক্লাস উপরে পড়িত। সমবয়সী বলিয়। দুই ভাইয়ে যথেষ্ট ইয়ার্কি চলিত। ভোলা ছিল অত্যন্ত হুজুকপ্রিয়। কোথাও বক্তৃত৷ হইলে ভোলাকে তাহ শুনিতেই হইবে। উৎসব, সমারোহ, মেলা-যেমনই হউক না কেন-ভোলানাথ সেখানে উপস্থিত থাকিবেই। ফুটবল ম্যাচে বাঙ্গালী জিতিবে কি প্রবাসী-ভাদ্র, ১৩২২ SJSASJSMSMSMS [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড ইংরেজ জিতিবে, এই ভাবিয়া রাত্রে তাহার ঘুম হইত না। ক্রিংে ম্যাচে কে ক’ট রান (run) কুরিল সে সম্বন্ধে খবরের কাগজওয়ালারও ভুল থাকিতে পারে, কিন্তু ভোলার হিসাব একেবারে নিভুল। এই বিশাল কলিকাতার কোথায় কোন ক্ষুদ্র গলিটির কি নাম-ভোলার তাহ অজ্ঞাত ছিল না। পৃথিবীর সমুদায় দ্রষ্টব্য, শ্রোতব্য এবং জ্ঞাতব্য চক্ষুকর্ণের মধ্য দিয়া আত্মসাং করিতে পারলে, তবেই যেন সে তৃপ্ত হয়। ভোলার পরোপকার করিবার একটা বাতিক ছিল। তাহদের গ্রামের লোক কলিকাতায় আসিলেই ভোলার ঘাড়ে গিয়া চাপিত। পরীক্ষা নিকটবৰ্ত্তী বলিয়া ভোল৷ হয়ত পাঠ্য পুস্তকগুলির ধূলা ঝাড়িতে আরম্ভ করিয়াছে এমন সময়ে গ্রামের প্রতিবেশী অতিথিরূপে দেখা দিলেন। ভোলাকে সঙ্গে লইয়া আজব সহর কলিকাতা পরিদর্শন করিয়৷ বেড়াইলেন, যেখানে যে জিনিষটি স্বলভে পাওয়৷ যায়, তাহা খরিদ করিলেন, থিয়েটার দেখিলেন, সার্কেশ দেখিলেন এবং দিবারাত্র নানাপ্রকার গল্পগুজবে ভোলাকে পরম আপ্যায়িত করিয়া দিনসাতেক পরে গা তুলিলেন। নগেন সেণ্টিমেন্টের ধার ধারিত না এবং চক্ষুলজ্জা নামক জিনিষটাকে বড় একটা আমল দিত না। সেইজন্য তাহার কাছে ঘেষিতে কেহ সাহস করিত না। সে জানিত, পরোপকার করিবার সময় যথেষ্ট পাওয়া যাইবে কিন্তু পরীক্ষায় পাশ করিবার এমন সুবর্ণ সুযোগ অার আসিবে না । একদিন নগেনদের বাসার পাশের বাড়ীর এক ভদ্রলোক উাহার ছেলেটিকে লইয়৷ ভোলার কাছে হাজির হইয়৷ কহিলেন-দেখুন মশায়, আজ তিন চার দিন হ’ল ছেলেটার মাষ্টার আসে না। তা’ আপনি যদি ওর পড়াগুলো রোজ সকালে একটু দেখে দেন— --> ভোল৷ তৎক্ষণাৎ সম্মত হইয়া বালককে জিজ্ঞাসা করিল —তোমার মাষ্টার মশায়ের অমুখ করেছে বুঝি ? বালক কহিল—অারে রাম বল! সে বেটার কথা বলেন কেন মশাই! বেটা কোন গতিকে এম.এ পাশ করেছে,-থালি ফাকি দিয়ে টাকা নেবার ফিকির • মাষ্টারের প্রতি তুখোড় বালকের এই শ্রদ্ধাধিক্য | | ৫ম সংখ্যা ] স্নেহহার। দেখিয় ভোলা ঘূৰ্ণ টপিয়া হাসিতে লাগিল। নিকটই ছিল নগেন। সে একেবারে অগ্নিমূৰ্ত্তি হইয়া কহিল— েদখ হে ছোকরা, তোমার যা লেখা পড়া হ’বে সে আমি বুঝতেই পারছি। মিছে কেন বাপ মায়ের টাকাগুলি জলে ফেলছ ! বালকের পিত। নগেনের প্রতি সক্রোধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া চলিয়া গেলেন। ভোলা বালককে লইয়া পড়াইতে বসিল । সে বংসর ভোলা নিরুপদ্রবে বি এ ফেল করিয়৷ নগেনের সঙ্গে একক্লাসে পড়িতে লাগিল । নগেন কহিল —পরোপকারের প্রবৃত্তিটা একটু কমাও হে! নিজের উন্নতি না হলে পরের উন্নতি করবে কোথা থেকে ? কিন্তু বাল্যকাল হইতেই ভূতের ব্যাগার পাট ভোলার অভ্যাস হইয়া গিয়াছিল। ছোট ছেলেদের যত্ন করিয়া পড়ান এবং বন্ধু বান্ধবদিগকে প্রাণপণে সাহায্য করার অভ্যাস তাহার রক্তমাংসের সহিত মিশিয়া গিয়াছিল । পরের কার্য্য সে সহজ আনন্দের সহিত সম্পন্ন করিত। এজন্য নিজের কোন ক্ষতিকে ক্ষতি বলিয়। গ্রাহ করিত ন। দিবাভাগের এক মূহূৰ্ত্তও তাহার বিশ্রাম ছিল না ; অথচ পরোপকার" কথাটি পৰ্য্যস্ত কেহ কথন তাহার মুখে শুনে নাই । নগেন ভোলার উন্নতি কামনা করিত। সেই জন্য ফেসে লোক ভোলাকে দিয়া ব্যাগার খাটাইয়া লইতে আসিলে সে অত্যন্ত বিরক্ত হইত। ভোলাকে বারবার তাহার কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে সচেতন করিয়া দিয়া ও যখন কোন ফল হইল না, তখন নগেন ক্লাসের মধ্যে ভোলাকে উপকারী’ বলিয়া ডাকিতে আরম্ভ করিল। ( ७ ) নগেনের দিদির শ্বশুরবাড়ী ভবানীপুরে । ভগ্নীপতি উপেনবাবু একজন বড় উকিল। উপেনবাবুর না ব্রাহ্ম, ন হিন্দু; আভুললকার উচ্চশিক্ষিত বড়লোকের প্রায় যেমন ইরাকেন তেমনই। বাড়ীতে উপেনবাবুর বিধবা মা ছিলেন কত্রী । ভগিনী নিৰ্ম্মল তখনও অবিবাহিত । সেদিন নগেন এবং ভোল৷ দিদিকে দেখিতে গিয়াছিল । مهم مهم م. م.، مهمتری ৫৯৫ উপেনবাবু এবং তাহার মা তাহাদিগকে বাহিরের ঘরে বসাইয়া যথোচিত অভ্যর্থনা করিলেন। তিনি কোটে বাহির হইয়া গেলে দিদি আসিয়া নগেন এবং ভোলার নিকট সকলের কুশলাদি জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। মধ্যাহ্নভোজন সমাপ্ত হইলে দিদি নগেনকে বাড়ীর মধ্যে লইয়। গিয়া একেবারে নিৰ্ম্মলের ঘরে প্রবেশ করিলেন । নিৰ্ম্মল সসঙ্কোচে বাহির হইয়া গেল। দিদি হাসিয়া কহিলেন—কেমন রে নগেন, আমার ননদকে তোর পছন্দ হয় ? নগেন প্রফুল্লমুখে কহিল--তুমি পাগল হয়েছ দিদি ! দিদি নগেনকে তাহদের নবনিৰ্ম্মিত বাড়ী, ঘর, পুস্তকাগার প্রভৃতি দেখাইতে লাগিলেন। ভোল। ততক্ষণ বাহিরের ঘরে এক বসিয়া বসিয়া ছাদের কড়ি বরগাগুল গণিয়া ফেলিল। হঠাৎ দ্বারের দিকে চাহিয়া দেখিল বছর পাচেকের একটি মেয়ে সকৌতুকে উকি মারিতেছে। ভোলা স্নেহপূর্ণশ্বরে ডাকিল —এসন খুকী ! শুনিবামাত্র খুকী হাসির লহর তুলিয়া ছুটির পলাইল এবং ক্ষণকাল পরেই আবার আসিয়া উকি মারিল । ভোল পুনরায় আহবান করিল এবং খুকী সহাস্য দ্রুতবেগে পলায়ন করিল। ভোলা বুঝিল যে, ইহা ধরা দিবার পূৰ্ব্বলক্ষণ; সে দ্বারের পাশে লুকাইয়া রহিল। এবার ধরা পড়িয়া খুকী আঁকিয়া বাকিয়া পলাইবার ব্যর্থ চেষ্টা করিয়৷ অবশেষে কাদিয়া ফেলিবার উপক্রম করিল। তখন ভোল৷ তাহাকে ছাড়িয়া দিয়া কৃত্রিম ক্ৰন্দনের অভিনয় আরম্ভ করিল। ক্রমে বালিকার মুখে হাসি দুটিলে ভোলা আবার তাহাকে ধরিয়া ফেলিয়া কহিল— তোমার নামটি আমাকে বলবে না ত ? বালিকা কহিল—আমার নাম স্বশীল। সুশীল। দিদির কন্য। দেখিতে দেখিতে ভোলাभाभात्र भtत्र श्रृं★ौलांद्र अऊाख् उदि श्श cर्शन । cग তাহার খেলানার বাক্স আনিয়া তাহার যত কিছু সম্পত্তি ভোল মামাকে দেখাইতে লাগিল। আরও কি কি সেলনি হইলে বাক্সটি পরিপূর্ণ হইতে পারে - ভোলাদল ভহার একটা সুবৃহং তালিকা লইয়া, উপেনবাবুর নগর নিকট বিদায় গ্রহণ করিয়া একাকী প্রস্থান করিল।