পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৩২ - -- سرگرمی ও দক্ষিণাপথে গ্রামে গ্রামে সে সংবাদ ঘোষিত হইয়াছে। রাষ্ট্রকূটরাজ সে অপমান বিশ্বত হন নাই। গোবিন্দ রাষ্ট্রকুটনীতিকুশল, নাগভট্টের যতদিন শক্তি ছিল, ততদিন তিনি মিত্রবিচ্ছেদ করেন নাই, এখন যুদ্ধ শেষ হইয়৷ গিয়াছে, বিশেষতঃ গৌড়েশ্বর এখন দুৰ্ব্বল, সমগ্র গৌড়ীয়সেনা বিদেশে, অবসর বুঝিয়া রাষ্ট্রকূটরাজ প্রতিশোধ লইতে উদ্যত। পুত্র, ভীষণ পরীক্ষার দিন সমাগত, এইবার বৃদ্ধ ও বালক লইয়া গৌড়সাম্রাজ্য রক্ষা করিতে হইবে। বৃদ্ধ সেইজন্য পঞ্চনদ হইতে আসিয়াছে।" "তাত, নিরর্থক বলক্ষয়ে প্রয়োজন নাই, আমি সিংহাসন ত্যাগ করিতেছি। বাকৃপালকে সিংহাসন প্রদান করুন, সে অবিবাহিত, সুতরাং রাষ্ট্রকূট-রাজকন্যাকে বিবাহ করিয়া পট্টমহাদেবীরূপে গৌড়সিংহাসনে বসাইতে পারিবে ।" “পুত্র, তাহাতে গোবিন্দের অপমানকালিম ক্ষালন হইবে না। যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী।” "কেন ? গোবিন্দ রাষ্ট্রকূটরাজকন্যাকে গৌড়ের পটুমহাদেবীরূপে অধিষ্ঠিতা দেখিলেই ত সস্তুষ্ট হইবেন।" “না; কানাকুজের পথে পথে রাষ্ট্রকূটগণ বলিয়৷ বেড়াইতেছে যে, ধৰ্ম্মপালের গৰ্ব্ব থৰ্ব্ব করিয়৷ রাঢ়ীয় সামন্তকন্যাকে গৌড়সিংহাসন হইতে দূর করিয়া দিতে হইবে। ধৰ্ম্মপাল রাষ্ট্রকূটরাজকন্যার পাণিগ্রহণ না করিলে তাহার সমুচিত প্রায়শ্চিত্ত হইবে না।” “তবে যুদ্ধ।” "ই পুত্র, যুদ্ধ। বিশাল রাষ্ট্রকূটবাহিনীর বিরুদ্ধে বৃদ্ধ ও বালকের যুদ্ধ। পুত্র, সেইজন্ত দ্রুতবেগে পঞ্চনদ হইতে গৌড়ে আসিয়াছি, বৃদ্ধের যুদ্ধে বৃদ্ধ ব্যতীত কে সেন চালনা করিবে। বৃদ্ধ ভীষ্ম গোপালের পুত্রের সেবায়ু আত্মোৎসর্গ করিতে আসিয়াছে।” বৃদ্ধ মহানায়কের শীর্ণ গণ্ডস্থল বাহিয়া দুইটি অশ্রুবিন্দু তুষারশুভ্ৰ শ্মশ্ররাজির মধ্যে পতিত হইল। ধৰ্ম্মপাল ভীষ্মদেবের পদবন্দনা করিলেন। বৃদ্ধ তাহাকে উঠাইয়া কহিলেন, “দুঃখ কি পুত্র ? দিন গিয়াছে, বৃদ্ধ বয়সে গোপালের পুত্রের জন্য জীবন বিসর্জন করিব ইহা অপেক্ষ গৌরব আর কি হইতে পারে? সময় নাই, প্রস্তুত হও, পঞ্চবিংশ সহস্ৰ লইয়া লক্ষ লক্ষের গতিরোধ করিতে হইবে। শোণতীর ও প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড സസി.സി.സഹ মণ্ডলার গিরিসঙ্কট ব্যতীত গৌড়সাম্রাজ্যে অপর যুদ্ধক্ষেত্র নাই, গুর্জরযুদ্ধে শতবার তাহ পরীক্ষিত হইয়াছে। সামান্য সেনা লইয়া শোণতীর রক্ষা করা অসম্ভব, আমি মগধের সমস্ত সেনা মণ্ডলায় সমবেত করিয়াছি। গৌড়রাষ্ট্রে কে আছে ? মাতৃভূমি রক্ষার্থ কে জীবনদান করিবে ? যাহার আসিবে তাহাদিগকে আমার সহিত পাঠাইয়া দাও । পুত্র, বারাণসী হইতে মওলা অধিক দূর নহে, আমি কল্যই যাত্রা করিব।” ধৰ্ম্মপাল সাশ্রনয়নে কহিলেন, “তাত, পঞ্চনদ অভিযানের ভীষণ পরিশ্রমের পরে আপনি যুদ্ধযাত্র করিলে লোকে কি বলিবে ? অামি জীবিত থাকিতে আপনাকে প্রেরণ করিলে আর্য্যাবৰ্ত্তবাসী চিরকাল আমার অপযশ ঘোষণা করিবে ।” "শুন পুত্র, বৃদ্ধ প্রস্তুত হইয়া আসিয়াছে। তুমি এবং আমি ব্যতীত গৌড়সাম্রাজ্যে নায়ক নাই। একজনকে দ্বার রক্ষা করিতে হইবে, অপর জন গৌড় রক্ষা করিবে। আমি মগধের নায়ক, সুতরাং মগধ রক্ষা আমারই কাৰ্য্য। যদি তুমি মওলায় যাও, তাহ হইলে তোমার মৃত্যুর সহিত গৌড়সাম্রাজ্যের আশা-ভরসা শেষ হইবে, কিন্তু ভীষ্ম মরিলে তুমি থাকিবে। বৃথা বাক্যব্যয় করিও না, প্রস্তুত হও, যাহারা প্রত্যাবৰ্ত্তনের আশ রাখে না, এমন সেনা আমার সহিত দিও।” ভীষ্মদেব বিদায় গ্রহণ করিলেন কিন্তু ধৰ্ম্মপাল বিষণ্ণবদনে কক্ষের বাতায়নে দাড়াইয়। রহিলেন । দেখিতে দেখিতে নূতন যুদ্ধের কথা গোঁড়নগরময় ব্যাপ্ত হই। পড়িল। গৌড়বাণী বিষাদে নিমগ্ন হইল। তখনও গৌড়ে জীবন ছিল, মৃত্যু নিশ্চয় জানিয়া শত শত বৃদ্ধ বিকলাঙ্গ সৈনিক প্রাসাদে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহারা বৃদ্ধ মহানায়কের আহবান শুনিয়াছিল, প্রত্যাবর্তনের আশা, জীবনের আশা পরিত্যাগ করিয়া ভীষ্মদেবের সহিত গৌড়সাম্রাজ্যের তোরণ রক্ষার্থ যাত্রা করিতে প্রস্তুত লইল । ক্রমশঃ শ্রীরাখালদাস বদ্যাপাধ্যায়।

৫ম সংখ্যা ] SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAMMAMMS বিশ্বসাহিত্য আমাদের দেশের খবরের কাগজ এবং সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রগুলিকে আমরা ঘরে বসিয়া যথেষ্টই নিন্দ করিয়৷ থাকি। বাহিরে আসিয়া বুঝিতেছি আমরা সত্যসত্যই বেশী নিন্দীর পাত্র নহি । বিলাতে এবং আমেরিকায় সংবাদপত্রগুলি বিশেষ কোন যোগ্যতার সহিত সম্পাদিত হইয় থাকে বলিয়া মনে হয় না। কি বিষয়-নিৰ্ব্বাচন, কি তথ্যসংগ্রহ, কি সম্পাদকীয় মন্তব্যপ্রকাশ–কোন বিষয়েই বিলাতী ও ইয়াঙ্কি কাগজওয়ালারা ভারতীয় সহযোগাদিগকে বেশী পশ্চাতে ফেলিতে পারেন না। তবে সমগ্র পাশ্চাত্যমগুলে রাষ্ট্রীয় সামাজিক ও শিক্ষাবিষয়ক চিন্তা ও জীবনই উচ্চতর—এইজন্য স্বভাবতই এখানে ভারতবর্ষ অপেক্ষা সাময়িক সাহিত্যের মুর কিছু উন্নত। তাহ ছাড়া পরিচালন সম্বন্ধে এখানে যৎপরোনাস্তি উৎকর্ষ দেখা যায় সন্দেহ নাই। মাসিকই হউক বা দৈনিকই হউক—প্রত্যেক পত্রই এক-একটা বিরাট লাভজনক ব্যবসায়-বিশেষ । এই ব্যবসায়-চালাইবার দিক্ হইতে ভারতবর্ষের প্রত্যেক কাগজ-পরিচালকই যে-কোন পাশ্চাত্য পরিচালকের নিম্নে পড়িবেন—একথা বলিতে বাধ্য। কিন্তু সম্পাদনহিসাবে এলাহাবাদের দৈনিক লীডার ( Leader ), মাদ্রাজের সাপ্তাহিক হিন্দু ( Hindu ), কলিকাতার মাসিক, মডার্ণ fissè (Modern Review ) 44; Totato s 24দেশের প্রধান প্রধান মাসিক পত্রিকাগুলি এই ধরণের বিদেশী পত্রিকাবলীর সমকক্ষ। অবশ্য আমাদের দেশে বিশেষজ্ঞ-সম্পাদিত বৈজ্ঞানিক দার্শনিক বা ঐতিহাসিক পত্রের অভাব যৎপরোনাস্তি। দক্ষিণাত্যের দি ওয়েলথ, var efsyl ( The Wealth of India ), sfztvfTf3 বঙ্গীয়-সাহিত্যপরিষৎ-পত্রিক, শ্ৰীযুক্ত গঙ্গানাথ ঝার ইণ্ডিয়ান ɖs (Indian Thought) azt "fiffa affrçHz (The Sacred Books of the Hindus Series) fosso শাস্ত্রগ্রন্থমাল৷ ত্রিশুকোটি নরনারীর দেশে নগণ্য বলিলেই চলে এ খাটি বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিক পত্রিকা বোধ হয় একখানাও নাই। এইখানেই আমরা বৰ্ত্তমানজগতের নরসমাজ হইতে পশ্চাতে পড়িয়া আছি। এই মাপকাঠিতে বিশ্বসাহিত্য SJSJMSAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAMAAASAASAASAASAASAAAS も○○ আমাদের স্বাধীনচিস্তার অভাব, আমাদের মৌলিকতার অভাব, আমাদের উদ্ভাবনীশক্তির অভাব সহজেই বুঝিতে পারি। বিলাতের এবং ইয়াঙ্কিস্থানের দৈনিক ও মাসিক পত্রে চিত্রশিল্প স্থাপত্য এবং নাটক নৃত্যকলা সঙ্গীত ও সাধারণ সাহিত্য সম্বন্ধে সমালোচনা প্রায়ই বাহির হইয়া থাকে। আমাদের দেশেও সাময়িক পত্রিকায় এবং খবরের কাগজে সমালোচনার স্তম্ভ আছে। সৰ্ব্বত্রই ধরণধারণ, লিখিবার ভঙ্গী, সমালোচনার রীতি প্রায় একরূপ। এই রচনাগুলিকে বাস্তবিকপক্ষে সমালোচন বলা অন্যায়—চিত্রপরিচয়, চিত্রকর-পরিচয়, শিল্পী-পরিচয়, গ্রন্থের বিবরণ, নৰ্ত্তকীর বিবরণ, ওস্তাদের জীবনবৃত্তান্ত ইত্যাদি বলাই কৰ্ত্তব্য। পাশ্চাত্য মহলেও ভারতবর্ষ অপেক্ষা উচ্চতর প্রণালী দেখিতে পাই না। আমাদের সম্পাদক ও শ্রীসমালোচক”গণকে বিশেষ দোষী বিবেচনা করিবার কারণ নাই। পুস্তকসমালোচনা করিতে হইলে লেখকগণ ভূমিকা সুচীপত্র নির্ঘণ্টপত্র এবং অভ্যন্তরের কোন অর্থ অধ্যায় হইতে বাছিয়। দুই চারি পংক্তি উদ্ধৃত করেন। কোন নট অথবা গায়ক এবং চিত্রাঙ্কণ বা মূর্তির বিবরণ প্রদান করিতে হইলে লেখক গৃহসজ্জার কথা, শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের কথা ইত্যাদি অবতারণা করিয়া কাৰ্য্য সাধিতে চেষ্টা করেন। রবিবাবুর গ্রন্থাবলী বিলাত ও আমেরিকার কত কাগজে প্রশংসিত হয় । সমালোচনার রীতি সেই মামুলিধরণের— "মাক্‌মিলান যখন প্রকাশক, নোবেল-প্রাইজ-প্রাপ্ত রবিবাৰু যখন লেখক বা অনুবাদক, ভারতীয় "মিষ্টক’ চিস্তায় যখন এই গ্রন্থ ভরপুর, তখন বলাই ৰাহুল্য এই গ্রন্থের বিশেষ আদর হইৰে৷ পাঠকগণকে কবিতার (অপব্য রচনার ) রস আস্বাদন করাইবার জন্ত কিছু উদ্ধত করিতেছি। & * অার একটা নমুনা দিয়া প্রবন্ধ শেষ কল্পিলাম * * * ।" এই ধরণের সমালোচনা বা শিল্পী-পরিচয় বিলাতী ও ইয়াঙ্কি সাময়িক পত্রে সাধারণতঃ দেখিতে পাই। স্বতরাং ভারতবাসীর অত্যধিক আত্মনিন্দ করিবার প্রয়োজন নাই মনে হইতেছে। যথার্থ সমালোচনাপদবাচ্য রচনা এই-সকল দেশের পত্রিকায় মাঝে মাঝে দেখিতে পাওয়া যায়। সেই রচনাসমূহে লেখক কাব্য সঙ্গীত ও স্বকুমার শিল্পের ভিতরকার