পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৯২ পঞ্জিকায় ভূল পাইবেন না। কিন্তু কথাট। আরও গভীর দাড়াইয়াছে। আমরা চাই, আমাদের পাঞ্জিতে গ্রহের যে স্থান লিখিত হইবে, সে স্থানে আকাশে গ্রহ দেখিতে পাওয়৷ যাইবে । সেরূপ “বঙ্গ-পঞ্চাঙ্গ" নাই। বিদ্যায় চিরদিন পরমুখাপেক্ষী থাকা কলঙ্কের কথা। প্রেসিডেন্‌নী কলেজের ছাত্রেরা জ্যোতির্বিদ্য শিথিবীর নিমিত্ত মান মন্দির পাইয়াছে, অথচ বাঙ্গালী জাতির ধম কর্ম যে পাজি অমুলারে চলিতেছে, তাহার সত্যাসত্য-পরীক্ষার উপায় নাই! "সত্যাগত পরীক্ষা” না বলিতে চান না বলুন। দুগ গণিত ঐক্য করিবার উপায় নাই বলা অল্প কলঙ্কের কথা নহে। মহারাজ। স্তর মণীন্দ্রচন্দ্র মানমন্দিরের মাসিক ব্যয় নির্বাহ করিবেন। মনে করুন, মহারাজাধিরাজ শুর বিজয়চন্দ মানমন্দির নির্মাণ করাইয় অবিশ্বক যন্ত্র দান করিলেন, এবং নবদ্বীপাধিপতি ক্ষেীণীশচন্দ্ৰ আৰখ্যক পুস্তক সংগ্ৰহ করিয়া দিলেন। মহারাজাধিরাজ বংশপরম্পরায় জ্ঞানদান করিয়া আদিতেছেন। নবদ্বীপাধিপতি পুরুষান্ত ক্রমে পঞ্জিকার পৃষ্ঠপোষক হইয়া আছেন। ইহঁাদের যে-কেহ মন করিলে কি না করিতে পারেন ? আর রাজার অতুগ্রহ ব্যতীত কোন দেশে কোন কালে বিদ্যার প্রতিষ্ঠা হইয়াছে ? বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদ উদযোগী হইলে বঙ্গপঞ্চাঙ্গ প্রণয়ন আরম্ভ করিতে অধিক কাল লাগিবে না। "বঙ্গ-পঞ্চাঙ্গ” বিশেষ অর্থে প্রয়োগ করিতেছি । ইহাতে দৈনন্দিন গ্রহস্থান লিখিত হইবে, কিন্তু ফলজ্যোতিষের কিছুমাত্র থাকিবে না। যাহার ইচ্ছ। হইবে, তিনি এই পঞ্চাঙ্গ ধরিয়৷ ফলগণনা করিয়া ব্ৰতউপবাস পূজাপাৰ্ব্বণের দিন ব্যবস্থা দিয়া পাজি রচনা করিতে পরিবেন। পচিশ ত্রিশ পৃষ্ঠায় "বঙ্গপঞ্চাঙ্গ" সম্পূর্ণ হইতে পরিবে। হয়ত ইংরেজী হইতে অনেক লইতে হইবে, কিন্তু নিজস্ব করিয়া লইতে পারিলে পরস্ব গ্রহণে পাপ আছে কি ? যাহাদের পিতামহগণ যবনাচার্যের কত মত গ্রহণ করিয়া গিয়াছেন, তাহদের পক্ষে যবনবিদ্যা দুষ্য হইতে পারে কি ? জ্যোতিষের অত্যাবশ্যক "কেন্দ্র" শব্দটাই নাকি বনজাতির । ইহাতে পিতামহগণের নিন্দার কথা নাই, প্রশীদার কথা আছে। বিদ্যায় জাতিবিচার নাই ইহা বিদ্যার প্রয়োগে ভাইরা দেখাইয়া দিয়া গিয়াছেন। প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড পরিশেযে আমাদের পঞ্জিকা প্রকাশকগণের নিকট সবিনয়ে নিবেদন করি, কাহারও নিন্দ করা আমার উদ্দেশ্য নহে। আমাদের পজিতে কি পাই, তাহাই যথাসুদ্ধি দেখিতে চেষ্টা করিয়া দেশের অভাবমোচনের আকাঙ্ক্ষা ও উপায় প্রদর্শন করিয়াছি। কটক । ভাদ্র । শ্যামে হিন্দুধৰ্ম্ম বৰ্ত্তমান প্রবন্ধে "হিন্দু" অর্থে কেবল সাধারণতঃ হিন্দু নামে পরিচিত ভারতীয় জাতিকেই বুঝিতে হইবে । বৌদ্ধ জৈন প্রভৃতি সম্প্রদায়-বিশেষ উহার অন্তর্গত নহে। সংস্কৃতের সাহায্যে খামভাষা বৰ্দ্ধিত এবং পরিপুষ্ট হইয়াছে। তাহাদের ভাষার প্রায় সমগ্রশন্স প্রাচীন আর্যগণের নিকট হইতে গৃহীত। তাহাদের ধৰ্ম্ম ও রাজকীয় অধিকাংশ ক্রিয়াকাণ্ড প্রাচীন আর্য্যরীতি অনুসারে সুসম্পন্ন হয়। তথায় ব্রাহ্মণগণের সংস্কার, ব্রাহ্মণ দৈবজ্ঞগণের নিকট হইতে সৰ্ব্বদা পরামর্শ গ্রহণ, বেদাদির প্রবর্তিত নিয়ম প্রতিপালন এবং ব্রাহ্মণগণের ক্রিয়াকলাপাদি সৰ্ব্বকার্য্যে বিহিত হইয়া থাকে। প্রতি উচ্চ রাজকাৰ্য্যে ব্রাহ্মণগণই নিযুক্ত। র্তাহারা এইপ্রকার উচ্চকাৰ্য্যে বিনিযুক্ত থাকিয়াও যথার্থ নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণোচিত কাৰ্য্য সম্পাদন করেন। ব্রাহ্মণগণ স্ব স্ব দেবমন্দিরে দেবারাধনা করিয়া থাকেন। সেই মন্দিরে শচীপতি ইন্দ্র, ব্রহ্মা ও অন্যান্য হিন্দু দেবদেবী বিদ্যমান। বস্তুতঃ তথায় জাগতিক স্বষ্টির ধারণ ও পৌরাণিকী কথা প্রভৃতি হিন্দুগণের নিকট হইতে সম্পূর্ণরূপে গৃহীত হইয়াছে। বৈদিক-যুগে ভারতবর্ষে হিন্দুরাজগণ কোন ক্রিয়া-কলাপাদি নিম্পন্ন করিবার জন্য ব্রাহ্মণ পুরোহিত নিযুক্ত করিতেন। যজ্ঞাদি কার্য্যে ও ঐরূপ হইত। ব্রাহ্মণগণই তাহাদের পারিবারিক দৈবজ্ঞরূপে কাৰ্য্য করিতেন। ভারতবর্ষের ন্যায় শ্যামদেশে বৰ্ত্তমান সময়েও হ্যামরাজগণ কতিপয় ব্রাহ্মণ দৈবজ্ঞ অথবা ভবিষ্যদ্বক্তাকে প্রতপালন করেন। ব্রাহ্মণগণের কার্য শুভদিন এবং মাহেন্দ্রযোগ ও শুভ মুহূৰ্ত্ত নিৰ্দ্ধারণ এবং রাজকীয় তাবৎ ক্রিয়াদি পরিদর্শন করিয়া তাহার স্থব্যবস্থা ও স্বসম্পন্ন করণ। শ্ৰীযোগেশচন্দ্র রায়। | | t তিনবেদ ও হিন্দুশাস্ত্রের পুনঃপুন উল্লেখ এবং বেদের সারসংগ্রহ দৃষ্ট হয়। খামভাষায় তিন বেদকে “ত্রেইংফং" কহে এবং শাস্ত্রকে "লাং" বলে। উক্ত শাস্ত্রে মহাপুরুষের দ্বাfএংশং চিহ্নের উল্লেখ আছে। তাহার বলে, মহাব্ৰক্ষা ব্রাহ্মণবেশে স্বর্গ হইতে অবতরণ করিয়া জনগণকে বেদ শিক্ষা প্রদান করিয়ছিলেন। তাহারা তিন বেদেরই উল্লেখ করে, অথৰ্ব্ব বেদকে বেদমধ্যে গণ্য করে না। তাহারা ঋগ্‌বেদের কতিপয় অংশ, ধজুৰ্ব্বেদের কতিপয় শাখা এবং সামের অধিকাংশ স্থান লইয়া তিন বেদ গণ্য করে। কোন ব্যক্তি একটি বেদে পারদর্শী হইলে তাহাকে বেদপারগ ব্রাহ্মণ বলিয় তাহারা গণ্য করে না।—তিন বেদেই সম্যকরূপে অধিকারী হওয়া চাই। বেদের বহুস্থান শুমবাণীর গ্রন্থে উদ্ধৃত হইয়া থাকে। তাহারা ভারতীয় আইনকৰ্ত্ত। মহু প্রভৃতির আইনের অধিকাংশ গ্রহণ করে নাই। • - খামবাসী ব্রাহ্মণগণের বিষয় বহু পুস্তকে প্রাপ্ত হওয়া যায়। সৰ্ব্বাগ্রে উত্তর-খামে কিলো-অতুলকে আধিপত্য স্থাপন কবিবার সময়ে ব্রাহ্মণগণের প্রভাব তথায় পূর্ণমাত্রায় লক্ষিত হইত এবং দক্ষিণ-খামে রাজধানী স্থাপিত হইলে র্তাহাদের প্রভাব হ্রাস হইয় পড়ে। শ্যামবাসীগণ বলে, বেদের মধ্যেই উপাসনাদির পদ্ধতি, চিকিৎসা ও জ্যোতিষশাস্ত্র লিপিবদ্ধ আছে। খামবাসীগণ বলে, ফ্রামণ ব্রাহ্মণ), ক্ষত্রিয় ( ক্ষত্রিয় ), কাহাবদি (গৃহপতি),–এই তিন জাতিই তথায় সৰ্ব্বপ্রধান । তথায় ব্রাহ্মণগণ পঞ্চতপ করেন। র্তাহারা চারিদিকে অগ্নি রাখিয়া মধ্যস্থলে উপবেশন করিয়া জপাদি ক্রিয়া

  • (a) Dictionnaire Francais Siamois par M. N. Lunt de Lajonquiere, 1904, Pp. 324, 326, Liv. II.

(b) Voyage de Siam des Peres Jesuites Envoyez par le Roy aux Indes & à la Chine, pp. 96, 97, 309, 3t f ; tome i. ( c ) • H. Albaster's the wheel of the Law, vide Religion, and Dr. Hastinn's Reisen in Siam,Regarding Vedas, Livre II, V সম্পাদন করেন। শুমভাষায় "হ্মং" বাক্য প্রাপ্ত হওয়া যায়। তাহ সংস্কৃত ঋদ্ধিরই অপভ্রংশ। , দার্শনিকগণ বলেন, তথায় দুইটি সম্প্রদায় আছে। ( ) ব্রাহ্মণোয়ম ও (২) সামান্তেয়ম। র্যাহারা ব্ৰহ্ম৷ ইন্দ্র জগদীশ্বর অন্যান্য দেবগণ পিতৃপুরুষগণ এবং অপর শুভাকাঙ্ক্ষীগণের অর্চনা করেন, তাহারাই "ব্রাহ্মণোয়ম” পদবাচ্য। অপর দল যাহারা পরজন্ম স্বীকার করে না, কাহারও উপাসনা করে না ও মৃত্যুর পর কি ঘটিবে তাহ পরিজ্ঞাত নহে তাহারাই “সামান্তেয়ম্। • শু্যামদেশে ব্রাহ্মণধৰ্ম্ম সৰ্ব্বাপেক্ষ প্রাচীন। এখনও তথায় বহুব্যক্তি উক্তধৰ্ম্মের অতুবৰ্ত্তী। এক্ষণে তাহ বহু সম্প্রদায়ে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছে । সেই ব্রাহ্মণদিগের মত এই যে এই জগং-ব্রহ্মাণ্ড “থাও মহাফ্রোম” হইতে স্বষ্ট হইয়াছে। ভগবান ব্রহ্মাকে শু্যাম ভাষায় “থাও মহাফ্রোম” কহে। তথাকার ব্রাহ্মণগণের বিশ্বাস যে “বলি" প্রদান করিলে পুণ্যলাভ হয়। ত্রিমূখ-বিশিষ্ট এবং ষড়ভূজ-যুক্ত কোন এক দেবতার সম্মুখে তাহারা পশু “বলি" দান করিতেন। তাহার বলেন, তিনটি দেবতা এক মূৰ্ত্তিতে আবিভূতি হইয়াছেন। সেই হেতুই উক্ত মূৰ্ত্তি ত্রিমুখ ও ষড়ভূজ । “বলি" একটি দেবতাকে প্রদান করিলেই তিনটি দেবতাকে প্রদান করা হইল। কখনও কখনও তাহারা পৃথক পৃথক তিনটি মূৰ্ত্তি গঠন করিয়াও পূজাদি করিতেন। খামবাসীর দেওদা (দেবতা) হস্তে তরবারি ও পঙ্কজ ধারণ করেন। ব্রহ্মাও তাহাদের দেবতা। তাহার বলে দেবাছংশ পৰ্ব্বত মেরুপৰ্ব্বতের সমতুল্য। তথায় ইন্দ্রের রাজপ্রাসাদ বিদ্যমান। ইন্দ্রের উদ্যানে “কল্পবৃক্ষ" আছে। শ্বামভাষায় তাহাকে "কামফ্রক” (কামবৃক্ষ) বলে। উক্ত বৃক্ষ দেবগণের প্রার্থিত বস্তু প্রদান করিয়া থাকে। যম বায়ুমণ্ডলে বসতি করেন। শ্যামবাসী বলে, স্বয়ং ভগবান বুদ্ধদেব ধরাধামে অবতীর্ণ হইবার পূৰ্ব্বে ‘দুলিতে বা তুসিতে অবস্থান করিতেন। সেই ছসিতই স্বৰ্গ বলিয়। কথিত। শ্যামবাসী স্বৰ্গকে "সিত" বা "তুলিত" বলিয়া থাকে। সৰ্ব্বাগ্রে তুসিত, পরে নিমনরাদি। অবশেষে

  • Voyage de Siam des Peres Jesuites Envoyez pa le Roy aux Indes & à la Chine, pp. 99,97. -